নিজের ভ্রমণ ও জীবনের গল্প নিয়ে বই লিখেছিলেন ইবনে বতুতা। ১৩৫৫ সালে প্রকাশ পাওয়া বিখ্যাত এই বইটির নাম 'দ্য রিহলা'। আরব শব্দ রিহলার অর্থ ভ্রমণ। এই বইয়ের নামে রাখা হয়েছে কাতার বিশ্বকাপের অফিসিয়াল বলের নাম। আগামী নভেম্বরে কাতারে অনুষ্ঠেয় ফুটবল বিশ্বকাপে এই বলটিই পায়ে নিয়ে দৌড়াবেন লিওনেল মেসি, ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো, নেইমার, কিলিয়ান এমবাপ্পে, রবার্ট লেফানডোভস্কিরা। বিশ্বকাপের সাত মাস আগে বলটি উন্মোচন করা হলো।
বিশ্বকাপের বল তৈরির দায়িত্বে থাকে ক্রীড়াসামগ্রী প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান অ্যাডিডাস। সেই ১৯৭০ সাল থেকে বিশ্বকাপের বল তৈরি করে আসছে প্রতিষ্ঠানটি। এবার নিয়ে ১৪তম বারের মতো বিশ্বকাপের বল তৈরি করলো তারা। ইকার ক্যাসিয়াস, কাকা, ফারাহ জেফরির মতো কিংবদন্তিরা বলটিকে জনসমক্ষে নিয়ে আসবেন। এরপর বিশ্বের ১০টি শহরে ঘুরবে আল রিহলা।
প্রতিটি বিশ্বকাপের বল তৈরির পেছনে গল্প থাকে, নামকরণের নেপথ্যে থাকে বিশেষ কোনো ভাবনা। কোন ভাবনা থেকে বাতার বিশ্বকাপের অফিসিয়াল বলের নাম 'আল রিহলা' রাখা হয়েছে? বিশ্ব ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা তাদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে জানিয়েছে, কাতারের সংস্কৃতি, স্থাপনা, ঐতিহ্যবাহী নৌকা ও পতাকা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে বলটির নাম 'আল রিহলা' রাখা হয়েছে।
'আল রিহলা' উন্মোচনের পাশাপাশি এটার বৈশিষ্ট্য সম্পর্কেও জানিয়েছে ফিফা। বৈশিষ্ট্যের বর্ণনায় ফিফা জানাচ্ছে, বিশ্বকাপ ইতিহাসে বাতাসে সবচেয়ে দ্রুততম বল হবে 'আল রিহলা'। অ্যাডিডাসের ফুটবল গ্রাফিক্স এবং হার্ডওয়্যার বিভাগের ডিজাইন ডিরেক্টর ফ্রান্সিসকা লোফেলম্যান জানিয়েছেন, ম্যাচকে আরও গতিময় ও নিখুঁত করতে বলটির নকশা এভাবে করা হয়েছে।
বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্তা সংস্থা জানিয়েছে, অনেক ধরনের বিশ্লেষণের পর বলটি তৈরি করেছে অ্যাডিডাস। এরপর নিজেদের পরীক্ষাগারে বিশেষভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখেছে বিশ্বখ্যাত প্রতিষ্ঠানটি। গতিপথ বঝুতে বাতাসের টানেলে বল ভাসিয়ে দেখা হয়। ইতোমধ্যে ফুটবলারদের দিয়েও এই বলে খেলানো হয়েছে। সব ধরনের পর্যবেক্ষণ শেষে এই বলটির ওপর আস্থা রাখছে ফিফা।
'আল রিহলা' নিয়ে আশাবাদী ফিফার মার্কেটিং ডিরেক্টর জঁ-ফ্রাঁসোয়া পাথি। তিনি বলেছেন, 'অ্যাডিডাসের কাছ থেকে দেখতে অসাধারণ, টেকসই, অনেক উঁচু মানসম্পন্ন একটা ম্যাচ বল এটি। কাতারে বিশ্ব শ্রেষ্ঠত্বের মঞ্চে নিজেদের সেরা ছন্দে থাকা বিশ্বের সেরা তারকারা এই বলে খেলা উপভোগ করবেন। উপভোগ করবেন বিশ্বজুড়ে তৃণমূল পর্যায়ের খেলোয়াড়রাও।'