Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৯ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

রোজার অজুহাতে গরুর মাংসের কেজি ৭০০ টাকা!

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৬ মার্চ ২০২২, ০৬:৩২ AM
আপডেট: ২৬ মার্চ ২০২২, ০৬:৩২ AM

bdmorning Image Preview
ছবি সংগৃহীত


দুই সপ্তাহ আগেও রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় গরুর মাংসের কেজি ছিল ৫৮০ থেকে ৬০০ টাকা। শবে বরাতের পর রোজার অজুহাতে সেটি এখন ৭০০ টাকা। ১৪ দিনের ব্যবধানে কেজিতে গরুর মাংসের দাম বেড়েছে ১০০ টাকা। দাম বৃদ্ধির প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে নেই মুরগিও। কেজিতে মুরগির মাংসের দাম বেড়েছে ২০ টাকা, তবে সপ্তাহের ব্যবধানে কিছুটা কমেছে সবজির দাম।

সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।

মাংসের দামে উল্লম্ফন

মাংস বিক্রেতারা বলছেন, প্রতি বছর রোজার সময় দুই সিটি করপোরেশন মাংসের দাম নির্ধারণ করে দেয়, তবে এবার নির্ধারণ করার আগেই দাম বেড়ে গেছে। তা ছাড়া সিটি করপোরেশন এ নিয়ে এখনও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।

মুরগি বিক্রেতারা বলছেন, বেশ কিছুদিন থেকে বাজারে মুরগি কম আসছে। এতে আগের থেকে বাজার চড়া। তার ওপর শবে বরাতের সময় চাহিদা বেশি থাকায় এক দফা দাম বেড়েছে। সামনে রোজা থাকায় চাহিদা আরও বেড়েছে। এ জন্য দামও বেড়েছে।

রাজধানীর বিজয় সরণির কলমিলতা কাঁচাবাজারে দেখা যায়, প্রতি কেজি গরু ৭০০, খাসি ৯৮০, সোনালি মুরগি ৩২০, ব্রয়লার ১৬৫ এবং দেশি মুরগি ৪৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মাংসবিক্রেতা জাকির জানান, শবে বরাতের সময় মাংসের দাম এক দফা বেড়েছে। তারপর থেকে আর কমেনি।

‘আমরা পাইকারি বাজার থেকে আনি। তাই একটু বেশি দামে বিক্রি করি। কাস্টমারও কম। গরু জবাই করতে পারলে দাম কম পড়ত। দুই সপ্তাহ ধরেই গরুর মাংসের দাম বেশি। রোজায় মাংসের চাহিদা একটু বেশি থাকে’, বলেন জাকির।

সরকারি সংস্থা টিসিবির হিসাব বলছে, বেশ কিছুদিন ধরে মাংসের দর বাড়ছে। সংস্থাটির বৃহস্পতিবারের বাজারচিত্রে প্রতি কেজি গরু ৬৫০ থেকে ৭০০, খাসি ৮৫০ থেকে ৯৫০, ব্রয়লার মুরগি ১৫৫ থেকে ১৬৫ টাকা দেখানো হয়েছে।

সংস্থাটি বলছে, এক সপ্তাহ আগেও গরুর মাংসের কেজি ছিল ৬২০ থেকে ৬৫০ টাকা। সাত দিনের ব্যবধানে সেটি কেজিতে ৫০ থেকে ৮০ টাকা বেড়েছে।

মহল্লায় খুচরা পর্যায়ে মাংসের দাম বেশি থাকলেও বাজারে কিছুটা কম। কারওয়ান বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংস ৬৫০, খাসি ৯৫০, বকরি ৮৫০, সোনালি মুরগি ৩০০ থেকে ৩১০, ব্রয়লার মুরগি ১৬০ এবং ডিম পাড়া লেয়ার মুরগি ২৩০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়।

কারওয়ান বাজারের মাংসবিক্রেতা মো. মোতালেব বলেন, ‘৫২ বছর ধইরা এখানে মাংস বেচতাছি। দিন দিন অবস্থা খারাপ হইতাছে। দাম যেভাবে বাড়তাছে, বেইচা শান্তি পাই না। কাস্টমাররে কী কমু, আমারও মাংস কিনে খাওয়ার ক্ষমতা নাই।’

মাংস ব্যবসায়ীরাও লোকসান দিচ্ছেন দাবি করে মোতালেব বলেন, ‘চার মাস ধরে ব্যবসায় লোকসান দিতেছি। এখানে সিন্ডিকেট হইয়া গেছে। লাভ করে বেপারী ও ফড়িয়ারা। আগে বেপারীরা (হাটে) যাইয়া গরু কিনত। হ্যাগো কাছ থেকে আমরা নিতাম; দাম কম পড়ত।

‘এখন বাজার থেকে ফড়িয়ারা কিনে। তাগো কাছ থেকে বেপারীরা কিনে। তাগো কাছ থেকে আমরা কিনি। হাত বদলাইলেই তো দাম বাড়ে। কী হইতেছে আমরাই বুঝি না।’

আরেক বিক্রেতা মোহাম্মদ জালাল বলেন, ‘মাংসের দাম সাংঘাতিক বাড়ছে। বাজারে ভুসিসহ গরু-ছাগলের খানার দাম যেভাবে বাড়ছে, খামারিরা কিনতে পারছে না। তারা না পাললে বাজারে গরু আইব ক্যামনে? আমরা পামু কই? কাস্টমার খাইব ক্যামনে?’

মাংসের বাজার নিয়ন্ত্রণ ও খাদ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে সরকারের দ্রুত পদক্ষেপ চান মাংস ব্যবসায়ীরা।

মুরগির বাজার সম্পর্কে কারওয়ান বাজারের বিক্রেতা শামসুল হক বলেন, ‘বাজারে মুরগি শট (কম)। মাল কম থাকলে দামটা বাড়বেই।

‘দুই দিন আগেও ২৯০ টাকা বেচছিলাম। আইজকা ৩১০ টাকার কমে বেচলে লোকসান দিতে হইব।’

তার শঙ্কা, রোজার ঈদের আগে দাম না কমে আরও বাড়তে পারে।

 

Bootstrap Image Preview