একের পর এক পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞায় এরই মধ্যে বিধ্বস্ত রাশিয়ার অর্থনীতি। এ অবস্থায় আরো নতুন নতুন কী নিষেধাজ্ঞা দেওয়া যায়, এ নিয়ে চলছে বিশ্লেষণ। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের একদল নীতিনির্ধারক কাজ শুরু করেছেন কিভাবে রাশিয়ার মজুদ বিপুল সোনা কাজে লাগানোর সুযোগ সীমিত করে দেওয়া যায়। অর্থনৈতিক এ সংকটে নগদ অর্থের জন্য মূল্যবান এ ধাতু বিক্রি করে দিতে পারেন পুতিন।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটে দ্বিপক্ষীয় একটি বিল উপস্থাপন করা হয়েছে। এর লক্ষ্য পুতিনের ওপর আরো আর্থিক চাপ তৈরি করা; ব্যাপক অবমূল্যায়নে পড়া মুদ্রা রুবেলের দাম বাড়াতে পুতিন যাতে সোনা কাজে লাগাতে না পারেন। বর্তমান নিষেধাজ্ঞাগুলোতে রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভাণ্ডারে থাকা প্রায় ১৩০ বিলিয়ন ডলারের মজুদ সোনা লক্ষ্যবস্তু করা হয়নি।
এক সাক্ষাৎকারে সিনেটর অ্যাংগাস কিং বলেন, ‘এ নিষেধাজ্ঞার ফলে পুতিনের আর্থিক ফাঁস আরো কঠোর হবে। এ বিল প্রস্তাব করেছেন মেইনের স্বতন্ত্র সিনেটর কিং, টেক্সাসের রিপাবলিকান সিনেটর জন করনিন, টেনেসির রিপাবলিকান বিল হ্যাগেট্রি ও নিউ হ্যাম্পশায়ারের ডেমোক্র্যাট ম্যাগি হাসান। এ বিল কার্যকর হলে তা যুক্তরাষ্ট্রের যেকোনো প্রতিষ্ঠানের ওপর সেকেন্ডারি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে, যারা রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে সোনার বাণিজ্য বা পরিবহনে যুক্ত আছে। এ আইনে একইভাবে যুক্তরাষ্ট্রের সেসব প্রতিষ্ঠানকেও শাস্তি দেওয়া হবে, যারা রাশিয়ার কাছে শারীরিকভাবে বা বৈদ্যুতিকভাবে সোনা বিক্রি করে। কিং বলেন, ‘আমরা ইউক্রেনে তাদের এ নৃশংস কর্মকাণ্ড বন্ধ করার জন্য আর্থিক চাপ বাড়ানোর চেষ্টা করছি। আপনি এমন দ্বিপক্ষীয় বিল কখনো দেখেননি। ’
বর্তমান নিষেধাজ্ঞা এরই মধ্যে রাশিয়ার অর্থনীতিতে ব্যাপক আঘাত করেছে। পশ্চিমা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো চলে যাচ্ছে। মস্কো স্টক এক্সচেঞ্জ বন্ধ থাকে। মুদ্রা রুবেলের ব্যাপক দরপতন হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার পরও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক যে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সংগ্রহ করেছে, তা তাদের নিষেধাজ্ঞার ঝড় থেকে বেরিয়ে আসতে দেবে।
কিং বলেন, ‘সোনা এই আর্দ্র তহবিলের অংশ, যা পুতিন নিষেধাজ্ঞার প্রাক্কালে সংগ্রহ করেছেন। ’ রাশিয়ার দুঃসময়ে সোনা বড় সম্পদ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ পশ্চিমারা কার্যত দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বেশির ভাগ বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ জব্দ করে রেখেছে।
মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি জ্যানেট ইয়েলেন গত বৃহস্পতিবার সতর্ক করেছেন যে মার্কিন কর্মকর্তারা এবং তাঁদের ইউরোপীয় মিত্ররা রাশিয়ার বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞার কথা বিবেচনা করছে।