নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে সেনাবাহিনীর সৈনিক শাহীন আলম (২২) হত্যার ঘটনায় জড়িত অভিযোগে তিন ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) রাতে প্রযুক্তির সহায়তায় সিদ্ধিরগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে জব্দ করা হয় সেনাসদস্য শাহীন আলম হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি ছুরি।
বুধবার (১৯ জানুয়ারি) দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক-সার্কেল) মোহাম্মদ নাজমুল হাসান।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- সিদ্ধিরগঞ্জের সিআই খোলা এলাকার মো. আলী হোসেনের ছেলে জীবন (২৩), মিজমিজি বাতানপাড়া এলাকার শওকত আলীর ছেলে সুমন মিয়া (২৫) এবং একই এলাকার আসলাম মিয়ার ছেলে জুম্মন মিয়া (২২)। তারা তিনজনই পেশাদার ছিনতাইকারী বলে পুলিশ জানিয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে মোহাম্মদ নাজমুল হাসান আরও জানান, পটুয়াখালী জেলার লেবুখালীতে সেনাবাহিনীর শেখ হাসিনা ক্যান্টনমেন্টে কর্মরত সৈনিক (কুক) শাহীন আলম গত ১৫ জানুয়ারি রাত সাড়ে তিনটায় নিজ বাড়ি চাঁদপুরের উদ্দেশ্যে রওনা হন। রাত বেশি হয়ে যাওয়ায় তিনি নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের হিরাঝিল এলাকায় বন্ধু ফারহাবিবের বাড়ির দিকে যাচ্ছিলেন। তিনি মৌচাক বেঙ্গল প্যাসিফিক প্রা. লিমিটেড কারখানার পাশে ১০ তলার মোড় সামনে পৌঁছলে পেছন থেকে পেশাদার ছিনতাইকারী জীবন, সুমন ও জুম্মন অটোরিকশায় এসে শাহীনের গতিপথ রোধ করেন। ছিনতাইকারীরা সেনাসদস্য শাহীন আলমের সাথে থাকা মানিব্যাগ ও নগদ টাকা ছিনতাইয়ের চেষ্টা করলে তিনি বাধা দেন। এক পর্যায়ে ছিনতাইকারী জীবন ও সুমন তাদের হাতে থাকা অত্যাধুনিক ছুরি দিয়ে প্রাণনাশের উদ্দেশ্যে শাহীনের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে।
খবর পেয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ আহত শহীন আলমকে উদ্ধার করে সাইনবোর্ড এলাকার প্রো-এ্যাকটিভ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যায়। তবে অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে ঢাকা সিএমএইচে প্রেরণ করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভোর সাড়ে পাঁচটায় শাহীন আলম মারা যান।
এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে পরদিন সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে থানা পুলিশের একাধিক টিম তদন্ত শুরু করলে প্রযুক্তির সহায়তায় সিদ্ধিরগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে পেশাদার ছিনতাইকারী জীবন, সুমন ওরফে বিয়ার সুমন ও জুম্মনকে গ্রেফতার করে। এসময় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত সুইচ গিয়ারটি উদ্ধার করা হয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামিরা শাহীন আলমকে ছুরিকাঘাতে হত্যার কথা স্বীকার করে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মশিউর রহমান জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামিরা শাহীন আলমকে ছুরিকাঘাতে হত্যার কথা স্বীকার করেছে। এ ছাড়াও তাদের বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় ছিনতাই, দস্যুতা, মাদক মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।