Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ শুক্রবার, মার্চ ২০২৪ | ১৫ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

দুই সন্তানের মা শিমুর ছিল 'লাভ ম্যারেজ; কেন এই খুন?

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৮ জানুয়ারী ২০২২, ০৪:৪২ PM
আপডেট: ১৮ জানুয়ারী ২০২২, ০৪:৪২ PM

bdmorning Image Preview
ছবি সংগৃহীত


ঢাকাই চলচ্চিত্র ও টেলিভিশনের একজন অভিনেত্রীর বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধারের একদিন পর পুলিশ তার স্বামী ও স্বামীর একজন বন্ধুকে গ্রেপ্তার করেছে। পুলিশের দাবি, রাইমা ইসলাম শিমু নামে এই অভিনেত্রীকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন তার স্বামী।

অথচ একদিন আগেই এই অভিনেত্রীকে নিখোঁজ উল্লেখ করে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছিলেন অভিযুক্ত স্বামী।

সোমবার দুপুরে ঢাকার কাছে কেরানীগঞ্জের একটি সেতু সংলগ্ন সড়কের পাশে রক্তাক্ত বস্তা দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেন স্থানীয়রা।

কেরানীগঞ্জ থানার পুলিশ বস্তার মধ্যে খণ্ডিত মৃতদেহ দেখতে পেয়ে ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।

সোমবার রাতে মিজ ইসলামের ভাই শহীদুল ইসলাম মৃতদেহটিকে তার বোন বলে শনাক্ত করেন।

কেরানীগঞ্জ থানার ওসি আবু সালাম মিয়া বলেছেন, মৃতদেহটি টুকরো করে দুইটি বস্তায় ভরে রাস্তার পাশে ফেলে রাখা হয়েছিল। তার গলায় একটি দাগও রয়েছে।

মঙ্গলবার দুপুরে একটি সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন সরদার বলেন, ''মরদেহ শনাক্তের পর সোমবার রাতেই আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে সন্দেহজনক মনে হওয়ায় তার স্বামী এবং একজন বন্ধুকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করি। সেখানে সাক্ষ্যপ্রমাণ ও প্রাথমিকভাবে তাদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়ায় এই ঘটনায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।''

পুলিশ বলছে, প্রাথমিকভাবে জানা যাচ্ছে পারিবারিক কিছু ইস্যু ও দাম্পত্য কলহ এই হত্যাকাণ্ডের কারণ হয়ে থাকতে পারে।

হত্যার পর "লাশটি গুম করার চেষ্টা করা হয়েছে। অভিনেত্রীর স্বামীর বন্ধু তাকে লাশটি গুম করতে সহায়তা করেছিলেন বলে আমরা জানতে পেরেছি,'' সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন মি. সরদার।

তবে কোথায়, কীভাবে হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হয়েছে, সে ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু জানাতে রাজি হয়নি পুলিশ।

এই ঘটনায় কেরানীগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে তিনি জানান।

দুই সন্তানের মা শিমুর ছিল 'লাভ ম্যারেজ'

নিহত মিজ ইসলামের বোন ফাতিমা নিশা মঙ্গলবার সকালে কেরানীগঞ্জ থানা প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের বলেন, ''কেন কে আমার বোনকে হত্যা করেছে, আমরা এখনো বুঝতেই পারছি না। আমার বোন জামাইয়ের সঙ্গে বোনের তেমন কোন কলহ ছিল না। তাদের ১৮ বছরের সংসার, তারা লাভ ম্যারেজ করেছিল"।

"তবে যেই হত্যা করুক, আমরা চাই, সঠিক বিচার হোক, আমরা মামলা করবো,'' বলেন ফাতিমা নিশা।

রাইমা ইসলাম শিমু দুই সন্তান ও স্বামীর সঙ্গে ঢাকার কলাবাগানের গ্রিন রোডে থাকতেন।

ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালে মিজ ইসলামের মৃতদেহ শনাক্তের পর তার সাংবাদিকদের বলেছেন, বোনের ফোন বন্ধ পেয়ে এবং তিনি বাসায় না ফেরায় তাদের সন্দেহ হয়।

এরপর তারা হাসপাতাল, থানা ও এফডিসিতে খোঁজ নিতে শুরু করেন। কেরানীগঞ্জে অজ্ঞাত পরিচয় নারীর মরদেহ উদ্ধারের খবর জানতে পেরে তারা মিটফোর্ড হাসপাতাল মর্গে এসে বোনের খণ্ডিত মৃতদেহ দেখতে পান।

এর আগে সোমবার সকালে রাইমা ইসলাম শিমু নিখোঁজ জানিয়ে কলাবাগান থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করেছিলেন তার স্বামী।

সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, রবিবার সকালে কাউকে কিছু না জানিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে যান মিজ ইসলাম। এরপর থেকে তিনি নিখোঁজ রয়েছেন।

রাইমা ইসলাম শিমুর চলচ্চিত্রে অভিষেক হয় ১৯৯৮ সালে কাজী হায়াৎ পরিচালিত 'বর্তমান' সিনেমার মধ্য দিয়ে।

তার একটি সাক্ষাৎকার থেকে জানা যায়, তিনি দেলোয়ার জাহান ঝন্টু, চাষি নজরুল ইসলাম, শরিফউদ্দিন খান, এ জে রানা, স্বপন চৌধুরীসহ বিভিন্ন পরিচালকের ২৫টি চলচ্চিত্রে পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করেছেন। পাশাপাশি তিনি টেলিভিশন নাটকেও অভিনয় ও প্রযোজনা করেছেন।

মিজ ইসলাম বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সহযোগী সদস্যও ছিলেন।

যদিও কিছুদিন আগে আরও কয়েকজনের সঙ্গে তার সদস্যপদ স্থগিত করা হয়।

এ নিয়েও তিনি প্রতিবাদ করে নানা বক্তব্য দিয়েছেন।

Bootstrap Image Preview