চতুর্থ ধাপের ইউপি নির্বাচনে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার চিরিংগা ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী শাহনেওয়াজ রুমেল ৬৭ ভোট পেয়ে রেকর্ড গড়েছেন।
রোববার নির্বাচনে উপজেলার ৮ ইউনিয়নের মধ্যে ৪টিতে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর বিজয় হলেও বাকি ৩টিতে ভরাডুবি হয়েছে। এর মধ্যে চিরিংগা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী শাহনেওয়াজ রুমেল ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডের সবকটি মিলিয়ে সর্বমোট ৬৭ ভোট পেয়েছেন।
এতে তার জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। এটি বাংলাদেশে নৌকা প্রতীক নিয়ে সর্বনিম্ন ভোট পাওয়ার নতুন রেকর্ড। এমনকি ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ এর প্রার্থী নাজের হোসাইন থেকেও কম ভোট পেয়েছেন নৌকা প্রার্থী। হাত পাখা প্রতীক নিয়ে নাজের হোসাইন পেয়েছেন ৭১ ভোট।
ইউনিয়নে ১০৪৩৪ ভোটের মধ্যে ৮ হাজার ৭০৪ ভোট কাস্ট হয়। এতে নৌকা প্রার্থী ১ শতাংশেরও কম ভোট পেয়েছেন। জামানত হারানো ওই প্রার্থীর নাম মো: শাহ নেওয়াজ রুমেল।
এর আগে তৃতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচনে চকরিয়ার কৈয়ার বিল ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী জান্নাতুল বকেয়া রেখা ৯৯ ভোট পেয়ে সারাদেশে আলোচনায় এসেছিলেন। এইবার তাকেও হার মানিয়ে রেকর্ড ৬৭ ভোট পেয়ে গড়েছেন নতুন রেকর্ড!
রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাচন অফিসার স্বাক্ষরিত বেসরকারি ফলাফলে দেখা যায়, চিরিংগা ইউনিয়নে ১০৪৩০ জন ভোটারের মধ্যে ৮৮১৭ জন ভোটার ভোট দিয়েছেন। তন্মধ্যে ৩৬৫৫ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন আনারস প্রতীক নিয়ে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী জামাল হোসেন চৌধুরী।
তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন পেয়েছেন ২৫৬৭ ভোট। ইউনিয়নে মোট ৬ জন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর মধ্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থী নাজের হোসেন ৭১ ভোট পেলেও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শাহনেওয়াজ রুমেল পেয়েছেন ৬৭ ভোট।
উপজেলার ৮জন নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর মধ্যে সবচেয়ে কম সংখ্যক ভোট পাওয়ার বিষয়ে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী শাহনেওয়াজ রুমেল জানান, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতাকর্মী নির্বাচনে নৌকার বিরোধিতা করায় ফলাফল বিপর্যয় হয়েছে।
রিটার্নিং কর্মকর্তা শহিদ ইসলাম জানান, রোববারের অনুষ্ঠিত নির্বাচনে চিরিগার ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী শাহ নেওয়াজ রুমেন পেয়েছেন ৬৭ ভোট। এ ইউনিয়নে বিপুল ভোটে এগিয়ে থেকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন বিদ্রোহী প্রার্থী বদর ইসলাম।
এদিকে দলীয় প্রতীক নৌকা নিয়ে নির্বাচন করে এতো কম ভোট পাওয়ায় নৌকার প্রার্থীকে নিয়ে ট্রল চলছে। নৌকার এমন বিপর্যয় নিয়ে মুখরোচক আলোচনায় মেতে উঠেছে কেউ কেউ। খোদ দলের নেতাকর্মীদেরও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে দেখা গেছে।
কক্সবাজার জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এম এম শাহাদাত হোসেন বলেন, একজন প্রার্থী নির্বাচনে প্রদত্ত ভোটের আট ভাগের এক ভাগের চেয়ে কম ভোট পেলে ওই প্রার্থীর জামানতের টাকা সরকারের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত হয়। সে হিসেবে যারা কাস্টিং ভোটের এক অষ্টমাংশ পাবেন না তাদের জামানত নিয়ম মতো বাজেয়াপ্ত হওয়ার কথা। আমরা খতিয়ে দেখব কে জামানত পাওয়ার যোগ্য, আর কে যোগ্য নয়। যোগ্য হলে জামানত ফেরত পাবেন, আর না হলে জামানতের টাকা সরকারি কোষাগার জমা হবে।