Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ শুক্রবার, মার্চ ২০২৪ | ১৫ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

৬ শিক্ষার্থীর চুল কেটে দেওয়া সেই মাদরাসাশিক্ষক আটক

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৯ অক্টোবর ২০২১, ১২:০৬ PM
আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০২১, ১২:০৬ PM

bdmorning Image Preview
ছবি সংগৃহীত


সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪ শিক্ষার্থীর মাথার চুল কেটে দেওয়ার ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে ৬ মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর চুল কেটে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাটি উপজেলার হামছাদী কাজির দিঘীর পাড় আলিম মাদ্রাসার। এক ভিডিওতে দেখা যায়, দশম শ্রেণির ৬ জন ছাত্রের চুল কেটে দিচ্ছেন সিনিয়র শিক্ষক মঞ্জুরুল কবির। 

শুক্রবার (৮ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে কাজির দিঘীর পাড় এলাকা থেকে অভিযুক্ত ওই শিক্ষককে আটক করেছে পুলিশ। রায়পুর থানার ওসি আব্দুল জলিল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ৬ মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর চুল কেটে দেওয়ার ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

জেলা প্রশাসক আনোয়ার হোসাইন আকন্দ এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, 'এ ঘটনায় যথাযথ ব্যবস্থা নিতে পুলিশ ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বলা হয়েছে।' 

প্রসঙ্গত, গত বুধবার ক্লাস চলাকালীন ঘটনাটি ঘটে। ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থীরা ক্লাস না করেই মাদ্রাসা থেকে বেরিয়ে যায়। এতে ছাত্র ও অভিভাবকদের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এ ঘটনার একটি ভিডিও আজ শুক্রবার বিকেলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে তোলপাড় শুরু হয়। 

মাদ্রাসার দাখিল শ্রেণির শিক্ষার্থী নাজমুল আলম ও ফজলে রাব্বীসহ কয়েকজন জানায়, গত বুধবার তাঁদের ইংরেজি ক্লাস চলছিল। এ সময় হঠাৎ করে সিনিয়র শিক্ষক মঞ্জুরুল কবির স্যার কাঁচি দিয়ে ৬ শিক্ষার্থীর মাথার চুল কেটে দেয়। এ ঘটনার পর শিক্ষার্থীরা ক্লাস না করে বেরিয়ে যায়। পরবর্তীতে মাদ্রাসাটির অন্যান্য শিক্ষকদের মধ্যস্থতায় শিক্ষার্থীরা তাঁদের ক্লাস শেষ করে।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে এক শিক্ষার্থী জানায়, ইংরেজি ক্লাসের প্রথম ঘণ্টা পড়ার পর হঠাৎ করে মঞ্জুরুল স্যার আমাদের (ক) শাখার ক্লাসে ঢুকে ৬ শিক্ষার্থীর চুল কেটে দেন। কিন্তু (খ) শাখার কোন শিক্ষার্থীর চুল তিনি কাটেননি। আমি চার দিন মাদ্রাসায় যাইনি। পরে স্যার দাখিল পরীক্ষার ফরম পূরণ করতে দেওয়া হবে না বলে আমাকে হুমকি দেয়। এর পরে আমি মাদ্রাসায় যেতে বাধ্য হই। 

অভিযোগ ওঠা ওই মাদ্রাসার শিক্ষক মঞ্জুরুল কবিরের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, 'আমি দাখিল শ্রেণির সকল ছাত্রকে পরীক্ষার আগের দিন চুল কেটে মাদ্রাসায় আসতে বলেছি। ছাত্ররা আমার কথার অবাধ্য হওয়ার কারণে কয়েক ছাত্রের চুল কেটে দিয়েছি। আমি ওদেরকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নভাবে থাকা ও নীতি-নৈতিকতা শিক্ষা দেওয়ার জন্যই চুল কেটে দিয়েছি। তবে আমি কাউকে কোন হুমকির কথা বলিনি।' 

বামনী ইউপি চেয়ারম্যান তাফাজ্জল হোসেন মন্সী বলেন, 'মাদ্রাসার শিক্ষক মঞ্জুরুল কবির ইউনিয়ন জামায়াত ইসলামের আমির হওয়ায় প্রায় সময় ছাত্র-ছাত্রীদের ওপর প্রভাব বিস্তার করত। তাঁর ভয়ে ছাত্রতো দূরের কথা অন্য শিক্ষকরাও নিরুপায় বলে আমি জানি।'

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাবরীন চৌধুরী বলেন, 'বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে। যদি সত্যতা পাওয়া যায় তা হলে বিধিমোতাবেক শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।' 

Bootstrap Image Preview