Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ শুক্রবার, মার্চ ২০২৪ | ১৫ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

প্রবাসী তরুণীর ধর্ষণ মামলা নিয়ে দেশে বিদেশে তোলপাড়

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৯:৩৩ AM
আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৯:৩৩ AM

bdmorning Image Preview


 

মরিশাস থেকে বাংলাদেশ। একটি ধর্ষণ মামলা নিয়ে তোলপাড় সর্বত্র। মরিয়ম নামে একজন প্রবাসী তরুণী অভিযোগ করেছেন ধর্ষণের। ঘটনাস্থল আফ্রিকার দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলের সন্নিকটে ভারত মহাসাগরে অবস্থিত ক্ষুদ্র দ্বীপ রাষ্ট্র  মরিশাসে। ঘটনার পর দেশে ফিরেন ওই তরুণী। তারও এক বছর পর মামলা করেন। তদন্তে নামে পুলিশ। শুরুতেই গ্রেপ্তার করা হয়েছিল মামলার এজাহারনামীয় আসামি আক্তার হোসেনকে।

রাজধানীর মালিবাগের একটি ট্র্যাভেলসের মালিক আক্তার হোসেন (৫৯) বর্তমানে জামিনে রয়েছেন। ইতিমধ্যে তদন্তে জানা গেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। পক্ষে-বিপক্ষে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। বিষয়টি নিয়ে সরব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। ইতিমধ্যে মামলার অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে এর সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেছেন মরিশাসের ফায়ার মাউন্ট কোম্পানির সংশ্লিষ্টরা। তারা বাংলাদেশি হাইকমিশনে এ বিষয়ে সুপারিশ জানিয়েছেন।

২০১৮ সালের দিকে গার্মেন্ট ফ্যাক্টরিতে কাজের জন্য মরিশাসে যান নারায়ণগঞ্জের ওই তরুণী। আক্তার হোসেনের ট্র্যাভেলস থেকেই বিদেশে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন তিনি। মরিশাসের ফায়ার মাউন্ট কোম্পানিতে চাকরিও করেন তিনি। গত বছরের ২৮শে ডিসেম্বর দেশে ফিরেন ওই তরুণী। প্রায় সাত মাস পর গত ১০ই জুলাই ওই কোম্পানির কর্তাসহ কয়েক জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও মানব পাচারের অভিযোগে মামলা করেন। এজাহারে অভিযোগ করা হয়েছে, ওই ফ্যাক্টরির মালিক অনিল কোহলি ও তার সহযোগী শাহ আলমের সঙ্গে ইচ্ছার বিরুদ্ধে একাধিকবার, একাধিক তারিখ ও সময়ে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনে বাধ্য করা হয়েছে তাকে। এভাবে ইচ্ছার বিরুদ্ধে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের এক পর্যায়ে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে যান তিনি। এক পর্যায়ে মরিশাসের একটি হাসপাতালে নিয়ে তার গর্ভপাত করান শাহ আলম। ওই তরুণী আরও অভিযোগ করেছেন, এতে তিনি আরও অসুস্থ হয়ে গেলে তার বাবাকে সেখানে চাকরি দেয়ার প্রলোভন দিয়ে তাকে দেশে পাঠানো হয়। হুমকি দেয়া হয় দেশে ফিরেও যেন এসব বিষয়ে কোথাও কোনো অভিযোগ না করেন। দেশে আসার আগে মরিয়মকে মরিশাসে শাহ আলমের বাসায় আটকে রাখা হতো বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। দেশে ফিরে যে ট্র্যাভেল এজেন্সির মাধ্যমে মরিশাসে যান মরিয়ম ওই ট্র্যাভেলসের মালিক আক্তার হোসেনকে বিস্তারিত জানান। তরুণীর অভিযোগ, সব জেনেও কোনো সমাধানের ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি আক্তার হোসেন। এতে তিনি আরও মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। এ বিষয়ে গত ১০ই জুলাই আক্তার হোসেনসহ মরিশাসে থাকা  অনিল কোহলি ও শাহ আলমের বিরুদ্ধে রাজধানীর রামপুরা থানায় মামলা করেন।

বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোলপাড় হচ্ছে। সৃষ্টি হয়েছে আলোচনা-সমালোচনার। তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মরিশাসে শাহ আলমের বাসাতেই ছিলেন ওই তরুণী ও তার বাবা। প্রবাসীদের কাছে স্বামী-স্ত্রী হিসেবেই পরিচিত ছিলেন তারা। একই বাসাতে থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছেন ওই তরুণী। দুই বছর সেখানে কাজ করে দেশে ফিরেন তিনি। একই কোম্পানিতে কাজ করতেন তরুণীর বাবাও। তরুণী দেশে ফেরার বেশ কয়েক মাস পর তার পিতার চাকরি চলে যায়। এ নিয়ে শুরু হয় দ্বন্দ্ব। এদিকে, দেশে ফেরার দীর্ঘ সাত মাস পর কোম্পানির সুনাম নষ্ট করতে মামলা করেছেন বলে দূতাবাসকে লিখিতভাবে জানিয়েছেন ওই কোম্পানির সংশ্লিষ্টরা। কোম্পানির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ওই নারী শ্রমিকের মিথ্যাচারের বলি হতে চলছে মরিশাসে পাড়ি দেয়া বাংলাদেশি হাজার হাজার রেমিট্যান্স যোদ্ধা। স্বার্থ হাসিলে ব্যর্থ হয়ে দেশে ফিরে ধর্ষণের মিথ্যা অভিযোগ করেছেন তিনি। ওই তরুণীকে মরিশাসে পাঠানোর বিষয়ে গোলাম রাব্বানী এন্টারপ্রাইজের মালিক আক্তার হোসেন জানান, স্বার্থ হাসিলে ব্যর্থ হয়ে ওই তরুণী মামলা করেছেন। বিষয়টি তিনি ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন। তবে আলোচিত এই ধর্ষণ মামলার বাদী বলেন, ঘটনা মিথ্যা হলে এত বড় কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা করতে পারতাম না। নানা সমস্যার কারণেই দেশে ফেরার সাত মাস পর মামলা করতে হয়েছে বলে জানান তিনি। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রামপুরা থানার পরিদর্শক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, মামলাটি বেশ আলোচিত। ঘটনাস্থল ঢাকা এবং মরিশাস। সবকিছু মিলিয়ে গুরুত্ব দিয়ে মামলাটি তদন্ত করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে কিছু তথ্য উদ্‌ঘাটন করা সম্ভব হয়েছে বলে জানান তিনি।

Bootstrap Image Preview