Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৯ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

ওরাল সেক্স নারীর যোনিতে রোগ ছড়ায়‍

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৮:৩৭ PM
আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৮:৩৯ PM

bdmorning Image Preview
ছবি সংগৃহীত


ওরাল সেক্সের মাধ্যমে নারী যৌনাঙ্গে সংক্রমণ ঘটে 'ব্যাকটেরিয়াল ভ্যাজিনোসিস' বা 'বিভি' নামে রোগ হতে পারে বলে এক গবেষণায় জানা যাচ্ছে।

প্লস বায়োলজি নামে এক জার্নালে এই গবেষণার বিস্তারিত প্রকাশিত হয়েছে এবং এতে বলা হচ্ছে যে ওরাল সেক্সের মাধ্যমে নারী দেহে এই রোগ বাসা বাঁধে।

তবে বিভি কোন সেক্সুয়ালি ট্রান্সমিটেড ডিজিজ বা যৌনরোগ নয়।

নারীর ভ্যাজাইনা বা যোনিতে সাধারণ যেসব ব্যাকটেরিয়া থাকে, সেখানে কোন ভারসাম্যের অভাব দেখা গেলে বিভি হতে পারে।

যারা এই রোগের শিকার হন, তাদের দেহে বিভি'র কোন উপসর্গ নাও দেখা যেতে পারে। তবে তাদের যোনি থেকে দুর্গন্ধযুক্ত রস নিঃসৃত হয়।

মানুষের মুখে যেসব ব্যাকটেরিয়া থাকে তা নারীর যৌনাঙ্গে ছড়িয়ে পড়লে কী প্রভাব পড়ে, এই গবেষণায় বিজ্ঞানীরা সেটাই দেখার চেষ্টা করেছেন।

ব্যাকটেরিয়াল ভ্যাজিনোসিস কী?

বিভি এমনিতে কোন সিরিয়াস অসুখ না। তবে যেসব নারী বিভি-তে আক্রান্ত হন, তারা অন্যান্য যৌনরোগের শিকার হতে পারেন এবং তাদের মূত্রনালিতে সংক্রমণ দেখা দিতে পারে।

সন্তানসম্ভবা নারীর ক্ষেত্রে বিভি-তে আক্রান্ত নারীর সন্তান স্বাভাবিক সময়ের আগেই জন্ম নেয়ার ঝুঁকি রয়েছে।

কীভাবে জানবেন আপনার বিভি হয়েছে?

বিভি নারী স্বাস্থ্যের একটা সাধারণ সমস্যা। যাদের ব্যাকটেরিয়াল ভ্যাজিনোসিস হয়, তাদের যোনি থেকে এক ধরনের রস নিঃসৃত হয় এবং তাতে উৎকট আঁশটে গন্ধ থাকে।

যোনি থেকে যে স্বাভাবিক রস বের হয়, বিভি হলে তার রঙ এবং ঘনত্বে পরিবর্তন দেখা যায়। সেই যোনি রস পাতলা পানির মত হয় এবং দেখতে অনেকটা ঘোলাটে সাদা হয়।

আপনার বিভি হয়েছে কিনা, তা আপনার ডাক্তার বলে দিতে পারবেন। যোনি রসের নমুনা পরীক্ষা করে বিভি-র উপস্থিতি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়।

পরীক্ষায় সংক্রমণের উপস্থিতি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেলে অ্যান্টিবায়োটিক ট্যাবলেট, জেল কিংবা ক্রিম ব্যবহার করে সংক্রমণ দূর করা হয়।

নতুন গবেষণায় কী জানা যাচ্ছে?

বিভি নেই যেসব নারীর, তাদের যোনিতেও বহু 'ভাল' ব্যাকটেরিয়া থাকে।

এদের বলা হয় ল্যাকটোব্যাসিলাই। এরা পিএইচ লেভেল কমিয়ে যোনিপথের অ্যাসিডিক বা অম্ল ভাব ধরে রাখে।

কিন্তু কখনও কখনও এই স্বাস্থ্যকর ভারসাম্যটি বিনষ্ট হলে যোনিতে অন্যান্য জীবাণুর বংশবৃদ্ধি বেড়ে যায়।

এ রকমটা কেন ঘটে, তা পুরোপুরিভাবে স্পষ্ট না। তবে নীচের কারণগুলোর জন্য বিভি হতে পারে:

  • আপনার যৌন জীবন খুবই ব্যস্ত (যেসব নারী সেক্স করেন না তাদেরও বিভি হতে পারে।)
  • আপনার যৌন সঙ্গীর বদল ঘটেছে
  • আপনি আই-ইউ-ডি জন্মরোধ ব্যবস্থা ব্যবহার করেন
  • আপনি আপনার যোনির আশেপাশে সুগন্ধি ব্যবহার করেন

প্লস বায়োলজি সাময়িকীতে প্রকাশিত গবেষণা থেকে জানা যাচ্ছে, মানুষের মুখ গহ্বরে মাড়ির রোগ কিংবা ডেন্টাল প্লেক থাকলে তাতে যে ব্যাকটেরিয়া দেখা যায়, তার কারণে ব্যাকটেরিয়াল ভ্যাজিনোসিস হতে পারে।

এই ব্যাকটেরিয়ার ক্ষতিকর আচরণ সম্পর্কে জানার জন্য বিজ্ঞানীরা মানুষের যোনি এবং ইঁদুরের ওপর এই গবেষণা চালিয়েছেন।

তারা দেখেছেন, বিশেষ একটি ব্যাকটেরিয়া - ফুসোব্যাকটেরিয়াম নিউক্লিয়েটাম - বিভি'র সাথে সম্পর্কিত ব্যাকটেরিয়াগুলোর বংশবৃদ্ধিতে সহায়তা করে।

এই গবেষণার সাথে জড়িত ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. অ্যামান্ডা লুইস এবং তার সহকর্মীরা জানাচ্ছেন, ওরাল সেক্স থেকে কোন কোন সময় নারীর যোনিতে ব্যাকটেরিয়াল ভ্যাজিনোসিস হতে পারে, এই গবেষণা থেকে সেই প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে।

দুটি নারীর মধ্যে লেসবিয়ান সম্পর্কসহ বিভিন্ন ধরনের যৌন সঙ্গমের ফলে বিভি হতে পারে - একথা বিশেষজ্ঞদের অজানা নয়।

ব্রিটিশ অ্যাসোসিয়েশন অফ সেক্সসুয়াল হেলথ-এর মুখপাত্র অধ্যাপক ক্লডিয়া এস্টকোর্ট বলছেন, এই গবেষণার মধ্য দিয়ে ব্যাকটেরিয়াল ভ্যাজিনোসিস সম্পর্কে বিজ্ঞানীদের ধারণা আরও পরিষ্কার হবে।

অন্য কোন সমস্যা থাকুক বা না থাকুক, ওরাল সেক্সের মাধ্যমে যৌনরোগের জীবাণু এবং নানা ধরনের ব্যাকটেরিয়া স্ত্রী অঙ্গে প্রবেশ করতে পারে।

সূত্রঃ বিবিসি বাংলা 

Bootstrap Image Preview