পশ্চিম জার্মানি ও বেলজিয়ামে বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে কমপক্ষে ১৮৩ জনে । ইউরোপের এই দুই দেশে চলতি সপ্তাহে আকস্মিক বন্যায় ঘর-বাড়ি ও রাস্তা ধসে পড়ে।
আল জাজিরা জানিয়েছে, অর্ধ শতাব্দীরও বেশি সময়ের মধ্যে জার্মানিতে সবচেয়ে ভয়াবহ এ প্রাকৃতিক দুর্যোগে অন্তত ১৫৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে কোলন শহরের দক্ষিণে আভাইলা জেলায় প্রায় ৯০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে নদীর কূল ছাপিয়ে উপচে পড়া পানি ও হড়কা বানে বাড়িঘর ধসে যায়, রাস্তা ভেঙে পড়ে ও বৈদ্যুতিক খুঁটি উপড়ে পড়ে।
বন্যায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া বেশ কয়েকটি এলাকার কয়েকশ লোক এখনও নিখোঁজ রয়েছেন অথবা তাদের কাছে পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না। কিছু এলাকার সঙ্গে টেলিযোগাযোগও বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছে।
জার্মানির প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্ক-ভল্টার স্টাইনমায়ার শনিবার অন্যতম ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্য নথস রিনে-ভেসপালিয়ার এফস্ট্যাড শহর পরিদর্শন করেছেন। এখানে বন্যায় অন্তত ৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
চ্যান্সেরল অ্যাঙ্গেলা মার্কেল রোববার আরেক ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্য রিনেল্যান্ড পালাটিনাট পরিদর্শনে যাবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। হড়কা বানে রাজ্যটির শোয়েজ গ্রাম প্রায় বিধ্বস্ত হয়ে গেছে।
পশ্চিম জার্মানির স্টাইনবাখথাইল বাঁধ ভেঙে পড়ার ঝুঁকিতে থাকায় নিম্নাঞ্চলের বাড়িগুলোতে থেকে প্রায় সাড়ে চার হাজার বাসিন্দাকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
কোলনের নিকটবর্তী বাসেনবার্গ শহরে একটি বাঁধ ভেঙে যাওয়ার পর শুক্রবার রাতে স্থানীয় প্রায় ৭০০ বাসিন্দাকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
ওই রাতের পর থেকে পানির স্তর নামতে শুরু করেছে বলে বাসেনবার্গ শহরের মেয়র জানিয়েছেন।
জার্মানির পশ্চিমাঞ্চলে গত কয়েক দশকে এমন বন্যা দেখা যায়নি। ডয়চে ভেলে জানিয়েছে, বন্যা দুর্গত আরভেইলার অঞ্চলে বহু মানুষ নিখোঁজ রয়েছে। বহু বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হেলিকপ্টার দিয়ে দুর্গত এলাকা থেকে মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
জার্মানির রাইনল্যান্ড-পালাটিনাটে এবং নর্থ রাইন-ভেস্টফালিয়া প্রদেশ বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া, নেদারল্যান্ডসের বন্যা পরিস্থিতিও উদ্বেগজনক।
ইউরোপের ওই অঞ্চলে শুক্রবারও ভারি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনের সময় নর্থ রাইন-ভেস্টফালিয়া প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী আরমিন ল্যাশেট এই চরমভাবাপন্ন আবহাওয়ার জন্য বৈশ্বিক উষ্ণায়নকে দায়ী করেছেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে চরম আবহাওয়া ফিরে ফিরে আসার ঘটনা বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে একটি একক ঘটনাকে বৈশ্বিক উষ্ণায়নের সঙ্গে জড়িয়ে ফেলাটা একটু জটিল।
স্থানীয় প্রশাসনের বরাতে ডয়েচে ভেলের প্রতিবেদনে জানানো হয়, জার্মানির বাড নয়নার-আরভেইলার জেলায় প্রয় ১ হাজার ৩০০ জনের খোঁজ মিলছে না।