ইরাকের দক্ষিণাঞ্চলীয় নাসিরিয়া শহরের একটি হাসপাতালের করোনভাইরাস আইসোলেশন ওয়ার্ডে আগুনে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৯২ জনে পৌঁছেছে। আহত হয়েছেন শতাধিক মানুষ।
সোমবার (১২ জুলাই) গভীর রাতে দক্ষিণ শহর নাসিরিয়ায় আল-হুসেন টিচিং হাসপাতালে আগুনের সূত্রপাত হয়। পরে দেশটির সিভিল ডিফেন্স টিম আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। দেশটিতে তিন মাসের মধ্যে এটি কোভিড-১৯ ইউনিটে এ ধরনের দ্বিতীয় মারাত্মক অগ্নিকাণ্ড।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একটি মেডিকেল সূত্র বার্তাসংস্থা এএফপিকে জানিয়েছে, 'অক্সিজেন ট্যাঙ্কের বিস্ফোরণ থেকেই আগুনের সুত্রপাত।'
পুলিশ এবং সিভিল ডিফেন্স কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তদন্তে দেখা গেছে যে ত্রুটিযুক্ত তারের থেকে স্পার্কস যখন অক্সিজেন ট্যাঙ্কে ছড়িয়ে পড়ে তখন বিস্ফোরণ ঘটে।
এই ঘটনায় দেশটির প্রধানমন্ত্রী মুস্তফা আল-কাদিমী জরুরি সভা আহ্বান করেছেন এবং ধী ক্বার প্রদেশের স্বাস্থ্য পরিচালক, হাসপাতালের পরিচালক এবং নগরীর নাগরিক প্রতিরক্ষা প্রধানকে সাময়িক বরখাস্ত ও গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছেন। ইতোমধ্যে সরকার তদন্ত শুরু করেছে।
আল-কাদিমি ট্র্যাজেডিকে 'সমস্ত ইরাকি চেতনার গভীর ক্ষত' বলে অভিহিত করে এক বিবৃতিতে জাতীয় শোকের আহ্বান জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার (১৩ জুলাই) এক ট্যুইট বার্তায় রাষ্ট্রপতি বারহাম সালিহ হাসপাতালে বিপর্যয়কে ক্রমাগত দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনাকে দায়ী করেছেন, যা ইরাকিদের জীবনকে অবমূল্যায়ন করে।
নাসিরিয়া আদালত বলেছে যে আগুনের ঘটনায় ১৩ জন স্থানীয় কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছে তারা।
এর আগে গত ২৫ এপ্রিল ইরাকে একটি হাসপাতালে আগুন লেগে ৮২ জন প্রাণ হারায়।
হাসপাতালের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মচারি বলেন, “হাসপাতালটিতে নূন্যতম সুরক্ষা ব্যবস্থাও নেই। তাই যা হওয়ার তাই হয়েছে। সামান্য অগ্নি নির্বাপক পানি ছিটানোর ব্যবস্থা, এমনকী অগ্নিসংকেত যন্ত্রও ছিল না হাসপাতালে।”
“সামান্য সিগারেট থেকেও আগুন ধরে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এর আগে আমরা অনেকবার অভিযোগ করেছি। প্রতিবারই কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে শুনেছি তাদের যথেষ্ট টাকা নেই।”
স্থানীয় নাগরিক সুরক্ষা কর্তৃপক্ষের প্রধান সালাহ যাবার বলেন, হাল্কা ওজনের ‘স্যান্ডউইচ প্যানেল’ ব্যবহার করে ওয়ার্ড আলাদা করা হয়েছিল হাসপাতালটিতে, যার কারণে দ্রুত আগুন ছড়িয়ে গেছে।
ইরাকের পার্লামেন্টের স্পিকার মোহাম্মদ আল-হালবুসি এক টুইটে বলেছেন, হাসপাতালের এই অগ্নিকাণ্ড ইরাকিদের জীবন বাঁচাতে ‘ব্যর্থতারই স্পষ্ট প্রমাণ’।