Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৯ মঙ্গলবার, মার্চ ২০২৪ | ৫ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

শেখ হাসিনার চোখ-ধাঁধানো উন্নয়ন দেখে অবাক মানুষ

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১০ জুন ২০২১, ০৪:১২ PM
আপডেট: ১০ জুন ২০২১, ০৪:১২ PM

bdmorning Image Preview


লায়েকুজ্জামান।। চমকে যাওয়ার মতোই। চমকে গিয়েছিলেন ৯ বছর পর দুবাই থেকে দেশে ফেরা সোলায়মান আলীও। নিজের গ্রামটাই চিনতে পারছিলেন না তিনি। বার কয়েক গাড়িতে থাকা নিকটজনদের কাছে জানতে চাচ্ছিলেন, ‘কোথায় যাচ্ছি আমরা?’ বারবার বলছিলেন, ‘এটা কি আমাদের ভাঙ্গা!’

সোলায়মান আলীর বাড়ি ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলা সদর লাগোয়া হাসামদিয়া গ্রামে। ২০১৩ সালে যখন তিনি দুবাই যান সে সময়ে তাঁর চেনা ভাঙ্গা সদর ছিল শুধুই চারটি রাস্তার এক মোড়। আরেকটু পেছনে গেলে ২০০৮ সালে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার আগে ভাঙ্গা ছিল একটি বাস স্টপেজ মাত্র। তখনো ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক হয়নি। ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠনের পর শুরু হয় ওই মহাসড়ক তৈরির কাজ। তখন গুরুত্ব বাড়তে থাকে ভাঙ্গারও।

এখন ভাঙ্গার চার রাস্তার মোড় দেখার জন্য মানুষ আসে দূর-দূরান্ত থেকে। অবাক হয়, বিস্মিত হয় চোখ-ধাঁধানো নান্দনিক দৃশ্যের উড়াল সড়ক দেখে। যানবাহনের অনেক চালকই খেই হারিয়ে ফেলেন, আবার ঘুরে সঠিক পথে আসেন।

ভাঙ্গা রাস্তার মোড় নিয়ে কথা তুলতেই উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান এনামুল হক অপু বলছিলেন, ‘আর ভাই বলবেন না, সে এক মহাযজ্ঞ। বঙ্গবন্ধুকন্যা যা দেখালেন মানুষকে, তা কী দিয়ে বোঝাব। শুধু বলতে পারি, শেখ হাসিনা পারেন, শেখ হাসিনাই পারবেন।’

ভাঙ্গা সদরে এসে কুমার নদ দুটি শাখায় ভাগ হয়েছে। একটি শাখা চলে গেছে দক্ষিণে গোপালগঞ্জের  দিকে, আরেকটি পূর্ব দিকে আড়িয়ালখাঁ নদে পড়েছে। ভাগ হয়ে যাওয়া কুমার নদের তিন পারে গড়ে ওঠা ভাঙ্গা উপজেলা শহর এখন দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার প্রবেশদ্বার। এ প্রবেশদ্বার দিয়ে পশ্চিমে যাওয়া যাবে গোপালগঞ্জ হয়ে খুলনা-বেনাপোল পর্যন্ত। দক্ষিণে মাদারীপুর, বরিশাল হয়ে পটুয়াখালীর সাগরসৈকত কুয়াকাটা, উত্তরে ফরিদপুর শহর হয়ে পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোতে। পূর্বে মাদারীপুর হয়ে পদ্মা সেতু পার হলেই আধাঘণ্টারও কম সময়ে ঢাকা। দেশের প্রথম এক্সপ্রেসওয়ে ঢাকার জুরাইন থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত দূরত্ব ৫৫ কিলোমিটার। এটি এশিয়ান হাইওয়ের করিডর ১-এর অংশ। ঢাকা রেল যোগাযোগ তৈরি হচ্ছে বেনাপোল, মোংলা ও পায়রার সঙ্গে।

সড়ক যোগাযোগের কর্মযজ্ঞের শুরু ২০১৬ সালে। প্রকল্পটির কাজের অর্থ জোগান দিচ্ছে বাংলাদেশ সড়ক বিভাগ। নির্মাণকাজের তদারকি করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড। ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের সঙ্গে ভাঙ্গার মোড়টিও যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয় ২০২০ সালের ৮ এপ্রিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে যান চলাচলের উদ্বোধন করেন।

উত্তর-দক্ষিণ, পূর্ব-পশ্চিম যেদিকেই যাওয়া যাক না কেন, ভাঙ্গায় যানজটে পড়তে হবে না। প্রয়োজন হবে না গাড়ির ব্রেক চাপার। ভাঙ্গার চার রাস্তার মোড়ে নির্মাণ করা হয়েছে চারটি আন্ডারপাস, একটি ফ্লাইওভার এবং চারটি লেন। গাড়ি চলবে প্রতিটি লেন ধরে। কেউ লেন ভুল করলে তাকে ফের ১০ কিলোমিটার ঘুরে আসতে হবে সঠিক লেনে। তবে উপযুক্ত লেন নির্দেশকও রয়েছে। ঢাকার জুরাইন থেকে মাওয়ায় পদ্মা সেতুর উত্তর প্রান্ত পর্যন্ত দূরত্ব ৩৫ কিলোমিটার এবং পদ্মা সেতুর দক্ষিণ প্রান্ত থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত দূরত্ব ২০ কিলোমিটার। পদ্মা সেতু চালু হলে ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত যেতে সময় লাগবে ৪২ মিনিট।

সড়ক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে,  ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণে খরচ হয়েছে ছয় হাজার ৮৯২ কোটি ২৮ লাখ টাকা।

ভাঙ্গার মুক্তিযোদ্ধা আবদুল ওয়াদুদ মিয়া বলেন, ‘অবহেলিত দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের জন্য আল্লাহর দান হচ্ছেন শেখ হাসিনা, তাঁর হাতের ছোঁয়ায় বদলে যাচ্ছে আমাদের জীবন, যোগাযোগ সব কিছু। এখন অবহেলিত ভাঙ্গায় ফ্লাইওভার, আন্ডারপাসসহ দৃষ্টিনন্দন উন্নয়ন দেখতে বিভিন্ন জেলা থেকে মানুষ আসে। আবার পদ্মা সেতু চালু হলে ভাঙ্গা হয়ে রেলযোগাযোগ শুরু হবে। শেখ হাসিনার হাতে যেন উন্নয়নের জাদু রয়েছে।’

ভাঙ্গা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম হাবিবুর রহমান বলেন, ‘প্রথমেই আমি বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি এ অঞ্চলের মানুষের পক্ষ থেকে। তিনি আমাদের একটি পদ্মা সেতু, দেশের প্রথম এক্সপ্রেসওয়ে, ভাঙ্গার নান্দনিক আন্ডারপাস ও ফ্লাইওভার উপহার দিয়েছেন। পদ্মা সেতু চালু হলে দেশের মানুষ দ্রুততম সময়ের মধ্যে মোংলা, পায়রা সমুদ্রবন্দর ও বেনাপোল স্থলবন্দরে পৌঁছে যেতে পারবে। এটা শুধু শেখ হাসিনার পক্ষেই সম্ভব।’

সূত্রঃ  কালের কণ্ঠ

Bootstrap Image Preview