Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৯ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

বাজেটের পর দাম বাড়তে-কমতে পারে যেসবের

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪ জুন ২০২১, ১২:৫৩ AM
আপডেট: ০৪ জুন ২০২১, ১২:৫৩ AM

bdmorning Image Preview


নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে স্বাস্থ্যখাতসহ কিছু পণ্যের ওপর থেকে যেমন শুল্ক ও করভার কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে, তেমনি ফিচার ফোনসহ বেশকিছু পণ্যে নতুন শুল্ক ও করভার আরোপ বা বাড়ানো হয়েছে।

জাতীয় সংসদে বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের উত্থাপিত নতুন অর্থবছরের বাজেটে এসব প্রস্তাব পাশ হলে কিছু পণ্যের দাম কমবে এবং বাড়বে।

দাম কমতে পারে

>> নারীর স্বাস্থ্য সুরক্ষা পণ্য স্যানিটারি ন্যাপকিনের দাম কমতে পারে। কারণ স্থানীয় উৎপাদন পর্যায়ে এর ভ্যাট অব্যাহতির প্রস্তাব করা হয়েছে।

>> পায়খানার প্যানের দাম কমতে পারে। গ্রামাঞ্চলে মানুষের স্যানিটেশন সুবিধা সুলভ করতে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত ‘লং প্যানে’র উপর থেকে ১০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহার করার প্রস্তাব করা হয়েছে। 

>> হৃদযন্ত্রে ত্রুটিসহ জন্ম নেওয়া শিশুর চিকিৎসায় ব্যবহৃত ইমপ্লান্টেবল অক্লুডারের দাম কমতে পারে। কারণ এর আমদানি শুল্ক প্রত্যাহারের প্রস্তাব করা হয়েছে।

>> ডায়ালাইসিসের দাম কমতে পারে। ডায়ালাইসিস সেবায় ব্যবহার করা ব্লাড টিউবিং সেটের আমদানি শুল্ক কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।

>> কিছু ওষুধের দাম কমতে পারে। কারণ ওষধ শিল্প সুরক্ষায় স্থানীয়ভাবে এপিআই উৎপাদনের কতিপয় কাঁচামাল আমদানিতে রেয়াতি সুবিধা দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।

>> জুতার দাম কমতে পারে। কারণ শিল্পের দুটি কাঁচামাল আমদানিতে রেয়াতি সুবিধা প্রস্তাব করা হয়েছে।

>> টেলিযোগাযোগের তারের দাম কমতে পারে। কেবল ও ইন্টারনেট কেবলের কাঁচামাল প্লাস্টিক ফ্রেমওয়ার্ক ও কোটেড ক্যালসিয়াম কার্বনেট আমদানিতে শুল্ক হ্রাস করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

>> দেশে তৈরি টেলিভিশনের দাম কমতে পারে। কারণ টেলিভিশনের প্রয়োজনীয় কাঁচামাল আমদানিতে রেয়াতি সুবিধা প্রস্তাব করা হয়েছে।

>> দেশে তৈরি কম্পিউটার সামগ্রী ও কিছু আইসিটি পণ্যের দাম কমতে পারে। কারণ এগুলো আনুষঙ্গিক কাঁচামাল আমদানিতে রেয়াতি সুবিধা প্রস্তাব করা হয়েছে।

>> মাইক্রোবাসের দাম কমতে পারে। গণপরিবহন হিসেবে মাইক্রোবাস আমদানিতে শুল্ক হ্রাস করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

১৮০০ সিসি পর্যন্ত মাইক্রোবাসের বিদ্যমান ২০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহারের প্রস্তাব করা হয়েছে। ১৮০১ থেকে ২০০০ সিসি পর্যন্ত মাইক্রোবাসের সম্পূরক শুল্ক ৪৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩০ শতাংশ করার কথা বলা হয়েছে। ২০০১ থেকে বেশি সিসির মাইক্রোবাসের সম্পূরক শুল্ক ৬০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৪৫ শতাংশের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বাজেটে।

>> হাইব্রিড গাড়ির ব্যবহারে উত্সাহিত করতে এগুলো আমদানিতে শুল্ক হার পুনর্বিন্যাস' করার প্রস্তাব করা হয়েছে

>> মোপেড ফোর স্ট্রোক ইঞ্জিন অসংযোজিতভাবে আমদানিতে বিদ্যমান শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশে নামানোর এবং বিদ্যমান ২০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহারের প্রস্তাব রয়েছে। এর ফলে জ্বালানিসাশ্রয়ী মোটরসাইকেল মোপেডের দাম কমতে পারে।

>> কাঁচামাল আমদানিতে শুল্ক ছাড়ের প্রস্তাব থাকায় করোনাভাইরাস শনাক্তের আরটি-পিসিআর কিটের দাম কমতে পারে।

>> অটিজম সেবা সেবার দাম কমবে। এর ওপর ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

>> স্ট্রেইনলেস স্টিলের ওপর আরোপিত শুল্ক টনপ্রতি ১ হাজার ৫০০ টাকা থেকে কমিয়ে ৫০০ টাকা করা হয়েছে। ফলে কমতে পারে ইস্পাতের দাম।

>> এলপিজি সিলিন্ডারের দাম কমতে পারে। দেশে এলপিজি সিলিন্ডার উৎপাদনে কাঁচামাল আমদানিতে রেয়াতি সুবিধা প্রস্তাব করা হয়েছে।

>> দেশে খেলনা উৎপাদনে উপকরণ আমদানিতে রেয়াতি সুবিধার প্রস্তাব থাকায় খেলনার দাম কমতে পারে।

>> পেপার কাপের দুটি প্রধান কাঁচামাল আমদানিতে শুল্ক রেয়াত সুবিধা দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে কমতে পারে পেপার কাপের দাম।

>> প্রাচীন শঙ্খ শিল্পের অস্তিত্ব রক্ষায় কিছু কাঁচামাল আমদানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে কমতে পারে শঙ্খ সামগ্রীর দাম।

>> মহামারীর কারণে ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প রক্ষার্থে পোল্ট্রি, ডেইরি ও মৎস্য খাদ্য তৈরির অত্যাবশ্যকীয় কতিপয় উপকরণ/কাঁচামাল এবং ঔষধ বিদ্যমান রেয়াতি সুবিধায় অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব রয়েছে। এতে মুরগি, মাছ ও গবাদিপশুর খাবারের দাম কমানোর সুযোগ তৈরি হবে।

>> ব্লেন্ডার, জুসার, মিক্সার, গ্রাইন্ডার, ইলেকট্রিক কেটলি, রাইস কুকার, মাল্টি কুকার, প্রেসার কুকার, মাইক্রোওয়েভ ওভেন, ইলেকট্রিক ওভেন ও ওয়াশিং মেশিনের স্থানীয় উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাট অব্যাহতি। এসব পণ্যের দাম কমতে পারে।

>> লৌহজাত পণ্য প্রস্তুতে ব্যবহার্য কিছু কাঁচামাল, স্ক্র্যাপ ভেসেল এবং পিভিসি ও পেট রেসিন উৎপাদনে ব্যবহৃত শিল্পের উপকরণের আগাম কর অব্যাহতির প্রস্তাব পাস হলে এসব পণ্যের দাম কমবে।

>> স্থানীয় উৎপাদন পর্যায়ে মুড়ির এবং ব্যবসায়ী পর্যায়ে তাজা ফলের ভ্যাট অব্যাহতির প্রস্তাব থাকায় এই দুই ধরনের খাদ্য পণ্যের দাম কমতে পারে।

>>  প্রিন্টার, টোনার কার্টিজ/ইনকজেট কার্টিজ, কম্পিউটার প্রিন্টারের যন্ত্রাংশ, কম্পিউটার, ল্যাপটপ, এআইও, ডেস্কটপ, নোটবুক, নেটপ্যাড, ট্যাব, সার্ভার, কিবোর্ড, মাউস, বারকোড/কিউআর স্ক্যানার, র‌্যাম, পিসিবিএ/ মাদারবোর্ড, পাওয়ার ব্যাংক, রাউটার, নেটওয়ার্ক সুইচ, মডেম, নেটওয়ার্ক ডিভাইস/হাব, স্পিকার, সাউন্ড সিস্টেম, ইয়ারফোন, হেডফোন, এসএসডি/পোর্টেবল এসএসডি, হার্ড ডিস্ক ড্রাইভ, পেনড্রাইভ, মাইক্রো এসডি কার্ড, ফ্লাশ মেমরি কার্ড, সিসিটিভি, ২২ ইঞ্চি পযন্ত মনিটর, প্রজেক্টর, প্রিন্টেড সার্কিট বোর্ড, ইরাইটিং প্যাড, ইউএসবি ক্যাবল, ডাটা ক্যাবল, ডিজিটাল ওয়াচ, বিভিন্ন ধরণের লোডেড পিসিবির স্থানীয় উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাট অব্যাহতির প্রস্তাব থাকায় এগুলোর দাম কমতে পারে।

>> কৃষি উপকরণের ভ্যাট অব্যাহতির প্রস্তাব করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে উইডার (নিড়ানি) ও উইনোয়ার (ঝাড়াইকল)। এই দুটির সঙ্গে থ্রেসার মেশিন, পাওয়ার রিপার, পাওয়ার টিলার, অপারেটেড সিডার, কম্বাইন্ড হারভেস্টর, রোটারি টিলারের আমদানি পর্যায়ে আগাম কর অব্যাহতিরও প্রস্তাব করা হয়েছে। ফলে এসবের দাম কমতে পারে।

>>  স্পিনিং মিলে ব্যবহৃত পেপার কোনের উপর বিদ্যমান মূল্য সংযোজন ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে পাঁচ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে এবং ফটোসেন্সিটিভ রোটারি স্ক্রিণ, টেম্পারেচার সেন্সর এবং লোডের পিসিবি বোর্ডকে রেয়াতি সুবিধায় অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এর ফলে টেক্সটাইল পণ্যের দাম কমতে পারে।

দাম বাড়তে পারে

>> শিল্প লবণের দাম অনেক বাড়তে পারে। কারণ এর সোডিয়াম সালফেট/ডাইসোডিয়াম সালফেটের বিদ্যমান আমদানি শুল্ক ১৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ করার পাশাপাশি নতুন করে ২০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক ও ৩ শতাংশ রেগুলেটরি ডিউটি আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে।

>> ফিচার ফোন আমদানিতে শুল্কহার ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২০ শতাংশ করার প্রস্তাব করায় এর দাম বাড়তে পারে।

>> পরিবহনে ব্যবহৃত সেইফটি গ্লাস ও ল্যামিনেটেড সেইফটি গ্লাসের দাম বাড়তে পারে। এগুলোর আমদানি শুল্ক ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করা হয়েছে। 

>> খাদ্য, ওষুধ, প্রসাধনী উৎপাদন ও প্রকৌশলকাজসহ বিভিন্ন শিল্পে ব্যবহৃত পেট্রোলিয়াম পণ্য প্যারাফিনের কয়েকটি ধরন এবং খনিজ তেলের উপর বিদ্যমান আমদানি শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ প্রস্তাব করা হয়েছে। ফলে এসব পণ্যের দাম বাড়তে পারে।

>> বিদেশি মাশরুমের দাম বাড়তে পারে। এই মাশরুম আমদানিতে আমদানি শুল্ক ৫ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। পাশাপাশি ন্যূনতম শুল্কায়ন মূল্য আরোপের কথা বলা হয়েছে।

>> বিদেশি মাংসের দাম বাড়তে পারে। দেশীয় খামারিদের সুরক্ষা দিতে প্রক্রিয়াজাত করা মাংস আমদানিতে নতুন করে ২০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক প্রস্তাব করা হয়েছে। পাখির মাংসে বসানো হয়েছে ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট। আবার প্রক্রিয়াজাত করা মাংস আমদানিতে ন্যূনতম শুল্কায়ন মূল্যের প্রস্তাব করা হয়েছে।

>> বিদেশি গাজর ও শালগমের দাম বাড়তে পারে। এদুটিতে নতুন করে ২০ শতাংশ আমদানি শুল্ক ও ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে। 

চাষিদের সুরক্ষা দিতে গাজর, ক্যাপসিকাম, কাঁচামরিচ, টমেটো ও কমলা আমদানিতে ন্যূনতম শুল্কায়ন মূল্য আরোপের কথাও বলা হয়েছে।

>> বিদেশি সব ধরনের সাবান ও সাবানজাতীয় পণ্যের সম্পূরক শুল্ক ২০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৪৫ শতাংশ করা হয়েছে। এতে দাম বাড়তে পারে।

>> চুইং গামের ওপর সম্পূরক শুল্ক ২০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৪৫ শতাংশ করা হয়েছে। ফলে দাম বাড়বে।

>> বিদেশি বিস্কুট ও সমজাতীয় চিনির তৈরি কনফেকশনারি পণ্যের সম্পূরক শুল্ক ২০ বাড়িয়ে ৪৫ শতাংশ করা হয়েছে। এতে দাম বাড়তে পারে।

>> বিদেশি রড ও সমজাতীয় পণ্যের আমদানি শুল্ক ১০ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে এসব পণ্যের বাড়তে পারে।

Bootstrap Image Preview