Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৬ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

ফিলিস্তিনিদের হাতে কী কী অস্ত্র মজুদ রয়েছে, আর এসব অস্ত্র আসে কোথা থেকে?

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৪ মে ২০২১, ০৪:০১ PM
আপডেট: ১৪ মে ২০২১, ০৪:০১ PM

bdmorning Image Preview


গত কয়েকদিন ধরে ফিলিস্তিনিদের ওপর নির্বিচারে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী। তাদের হামলার পাল্টা জবাব দিচ্ছে ফিলিস্তিনিরাও। গাজার শাসন ক্ষমতায় থাকা হামাস পাল্টা হিসেবে অন্তত ২ হাজার রকেট ইসরায়েলে ছুঁড়েছে। খবর ওয়াশিংটন পোস্টের।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এ কয়দিন গাজা থেকে যেসব রকেট ছোঁড়া হয়েছে, তাতে পরিচিত প্রযুক্তিই ব্যবহার করা হয়েছে। ২০১৪ সালে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে সংঘর্ষের সময়ও একই ধরনের রকেট ছোঁড়া হয়েছিল। তবে এবার রকেট ছোঁড়ার ধরন পাল্টেছে তারা।

উজি রুবিন নামের একজন ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা ইঞ্জিনিয়ার বলেছেন, আমি যতটুকু বুঝতে পেরেছি ফিলিস্তিনি আগের প্রযুক্তিই ব্যবহার করছে। তবে এবারের রকেটগুলোর আকার ২০১৪ সালের চেয়ে ভিন্ন। এসব রকেটে ভারী ওয়ারহেড রয়েছে বলেও জানিয়েছেন ইসরায়েলের মিসাইল ডিফেন্স অর্গানাইজেশনের সাবেক প্রধান।

বৃহস্পতিবার হামাসের সামরিক মুখপাত্র আবু ওবায়দাহ জানান, তারা নতুন আইয়াশ ২৫০ নামে নতুন একটি রকেট ব্যবহার করেছে। এটা তেলআবিবের কাছে আঘাত করেছে। মাঝারি পাল্লার এই রকেটটি ১৫০ মাইল পর্যন্ত যেতে পারে বলে জানিয়েছে হামাস। যদিও এই দাবি স্বাধীনভাবে নিশ্চিত করা যায়নি।

হামাসের কাছে কি পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্র আছে তা সঠিকভাবে জানা যায় না। তবে ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্সের একজন অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাইকেল হারজগ বলেছেন, তাদের কাছে ৮-১০ হাজার রকেট থাকতে পারে। হারজগ এখন ওয়াশিংটন ইন্সটিটিউটে একজন ফেলো।

কিছু বিশ্লেষক বলছেন, হামাস এবং ইসলামি জিহাদ কি পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্র মজুদ করেছে তা সঠিকভাবে জানা কঠিন। তবে তাদের ভান্ডারে অস্ত্র বেড়েছে বলে মনে হচ্ছে। রুবিন বলেন, ২০১৪ সালের চেয়ে মজুদ বাড়িয়েছে হামাস। তখনও তার মজুদ অনেক ছিল বলে মন্তব্য করেন তিনি।

হারজগ বলেন, এই ভান্ডারে বেশিরভাগই সম্ভবত স্বল্প মাত্রার। এগুলো সীমান্ত থেকে মাত্র ৬-১২ মাইল পর্যন্ত যেতে পারে। তবে দূরপাল্লার রকেটের ‘ভালো পরিমাণ’ সংগ্রহে রয়েছে হামাসের। এগুলো ইসরায়েলের জনবহুল এলাকায় আঘাত হানতে সক্ষম।

একজন গোয়েন্দা বিশ্লেষক ফাবিয়ান হিঞ্জ বলেন, হামাস এবং অন্যান্য নিখুঁত রকেট ব্যবস্থা তাদের ভান্ডারে যোগ করতে চাইছে। তবে তারা এটা করতে সক্ষম হয়েছে বলে প্রমাণ পাওয়া যায় না। কিছু কিছু রকেট তাদের টার্গেটে ভালোভাবেই আঘাত করেছে। কিন্তু সেগুলো লাকি শট হতে পারে।

কিন্তু কোথা থেকে আসে হামাসের অস্ত্র? হিঞ্জের মতে, কিছু অস্ত্র বিদেশ থেকে সংগ্রহ করেছে হামাস। এর মধ্যে ফজর-৩ ও ফজর-৫ ইরান থেকে এবং এম৩০২ রকেট সিরিয়া থেকে সংগ্রহ করেছে তারা। তবে তারা নিজেরাই এখন রকেট তৈরির সক্ষমতা অর্জন করেছে। এগুলোর রেঞ্জ প্রায় ১০০ মাইল, সেক্ষেত্রে প্রায় পুরো ইসরায়েলেই আঘাত হানতে সক্ষম হামাস।

হামাস বা অন্যান্য গোষ্ঠী মিশরের সীমান্ত নিয়ে চোরাপথে অস্ত্র নিয়ে আসতো। কিন্তু ২০১৩ সালে ক্ষমতা দখলের পর প্রেসিডেন্ট আব্দেল ফাত্তাহ আল-সিসি সেই পথ বন্ধ করে দেন। তাই বিদেশ থেকে পুরো একটি অস্ত্র আনা খুবই কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে তাদের জন্য।

যদিও সেপ্টেম্বর মাসে আল জাজিরার এক অনুষ্ঠানে হামাসের নেতারা দাবি করেন তারা ফজর মিসাইল এবং রাশিয়ার করনেট অ্যান্টিট্যাংক শেল স্থল ও সমুদ্র পথে গাজায় নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছেন। তবে এখন নিজেরাই অস্ত্রশস্ত্র বানাচ্ছে হামাস।

গাজায় তাদের নিজস্ব কারখানায় এসব অস্ত্র বানায় হামাস। এজন্য দেশীয় এবং বিদেশ থেকে পাচার করে আনা সরঞ্জাম ব্যবহার করে তারা। এজন্য তারা ইরান এবং লেবাননের হিজবুল্লাহ গ্রুপের কাছ থেকে সহায়তা পেয়ে থাকে।

সেন্টার ফর স্ট্রাটিজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের একজন ফেলো এবং মিসাইল ডিফেন্স প্রজেক্টের ডেপুটি ডিরেক্টর ইয়ান উইলিয়ামস বলেছেন, গত কয়েকদিন ধরে গাজা থেকে যে রকেট ছোঁড়া হয়েছে, তাতে হামাসের অস্ত্র ভান্ডারে ইরানের গন্ধ পাওয়া যায়।

তিনি বলেন, আমরা দেখতে পাচ্ছি কি পরিমাণ অস্ত্র জমা করতে সক্ষম হামাস। এগুলোর তীব্রতা, সালভোর আকার এবং সালভোর সমন্বয়, এসব কিছুই আগের চেয়ে অনেক বেশি বলে জানান উইলিয়ামস।

Bootstrap Image Preview