Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৯ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও সাবেক ডেপুটি গভর্নর পালাতে পারেন!

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১ এপ্রিল ২০২১, ০৮:০১ PM
আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০২১, ০৮:০১ PM

bdmorning Image Preview


দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) প্রশান্ত কুমার হালদার (পি কে হালদার) ইস্যুতে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক শাহ আলম ও সাবেক ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরীসহ আটজনের দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে চিঠি দিয়েছে। দুদকের পক্ষ থেকে আশঙ্কা করা হচ্ছে যে, তারা দেশ ছেড়ে পালাতে পারেন।

বৃহস্পতিবার (১ এপ্রিল) পুলিশের ইমিগ্রেশন শাখায় দেয়া চিঠিতে তাদের দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হয়।

দুদক উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধানের সই করা চিঠিতে লেখা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেডের ঋণ জালিয়াতির মাধ্যমে ৩ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও মানিলন্ডারিং সংক্রান্ত অপরাধের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত। তারা দেশ ছেড়ে পালাতে পারেন। সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাদের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে।

যাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হয়েছে তারা হলেন- বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক শাহ আলম, তার দুই স্ত্রী শাহীন আক্তার শেলী ও নাসরিন বেগম, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর সীতাংশু কুমার সুর চৌধুরী (এস কে সুর চৌধুরী), তার স্ত্রী সুপর্ণা সুর চৌধুরী, পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেডের (পিএলএফসিএল) এভিপি আল মামুন, পিপলস লিজিংয়ের ম্যানেজার (ট্রেজারি) অভীক সিনহা ও ঢাকার শান্তিনগরের বাসিন্দা অতসী মৃধা। এর মধ্যে এস কে সুর চৌধুরীর বিরুদ্ধে আগেই হাইকোর্টের আদেশে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।

গেলো ৫ জানুয়ারি পি কে হালদারের মা লীলাবতী হালদারসহ ২৫ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন হাইকোর্ট। প্রয়াত সাবেক প্রধান বিচারপতি মোস্তফা কামালের মেয়ে ড. নাশিদ কামালসহ পাঁচজন বিনিয়োগকারীর করা আবেদনে আদালত ওই আদেশ দেন।

গত বছরের ১৯ জানুয়ারি হাইকোর্ট যে ২০ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলেন, তাদের মধ্যে লীলাবতী হালদার, অভিজিৎ চৌধুরী, অমিতাভ অধিকারী, উজ্জ্বল কুমার নন্দী ও ইরফান উদ্দিন আহমেদের নামও ছিল।

এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পি কে হালদারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি নানা কৌশলে নামে-বেনামে অসংখ্য কোম্পানি খুলে শেয়ারবাজার থেকে বিপুল পরিমাণ শেয়ার কেনেন এবং ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে ও পরে নিজের আত্মীয়, বন্ধু ও সাবেক সহকর্মীসহ বিভিন্ন ব্যক্তিকে পর্ষদে বসিয়ে অন্তত চারটি ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ নেন।

আর এ চার কোম্পানির মধ্যে রয়েছে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস (আইএলএফএসএল), পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড এবং বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানি (বিআইএফসি)। এসব কোম্পানি থেকে তিনি ঋণের নামে বিপুল অংকের টাকা সরিয়ে বিদেশে পাচার করেন।

প্রায় ২৭৫ কোটি টাকা অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে পি কে হালদারের বিরুদ্ধে প্রথম মামলা করে দুদক। গেলো ৮ জানুয়ারি দুদকের অনুরোধে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দিয়ে রেড অ্যালার্ট জারি করে ইন্টারপোল। অর্থ পাচারের মামলা মাথায় নিয়ে ২০১৯ সালে বেনাপোল বন্দর দিয়ে দেশ ছাড়েন পি কে হালদার; যদিও পি কে হালদার যাতে দেশত্যাগ করতে না পারেন সে অনুরোধ জানিয়ে পুলিশের বিশেষ শাখাকে চিঠি দেয়া হয়েছিল। তবে চিঠি পৌঁছানোর দুই ঘণ্টা ৯ মিনিট আগেই ২০১৯ সালের ২৩ অক্টোবর বেনাপোল বন্দর দিয়ে দেশ ত্যাগ করেন পি কে হালদার।

তাকে সঙ্গে জড়িত থাকায় এখন পর্যন্ত ১১ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন। তদের মধ্যে উজ্জ্বল কুমার নন্দী ছাড়াও পিকে হালদারের সহযোগী শংখ বেপারী, রাশেদুল হক ও সর্বশেষ অবন্তিকা বড়াল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

Bootstrap Image Preview