Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২০ শনিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

আটটি শর্তে রেমিট্যান্স প্রণোদনার হাজার কোটি টাকা ছাড়

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২১, ১১:০৯ AM
আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২১, ১১:০৯ AM

bdmorning Image Preview
প্রতীকী ছবি


রেমিট্যান্সের বিপরীতে প্রবাসীদের নগদ প্রণোদনা দিতে আরো এক হাজার কোটি টাকা ছাড় দিয়েছে সরকার। চলতি অর্থবছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ, এই তিন মাসের রেমিট্যান্স প্রণোদনা বাবদ এই অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুকূলে সম্প্রতি ছাড় দেয়া হয়েছে। আটটি শর্তে এই অর্থ ছাড় দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।

বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠানো উৎসাহিত করতে ২০১৯-২০ অর্থবছর থেকে ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা দিচ্ছে সরকার। অর্থাৎ ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠালে প্রতি ১০০ টাকায় দুই টাকা করে নগদ প্রণোদনা পাচ্ছেন প্রবাসীরা। এই প্রণোদনা দিতে চলতি অর্থবছরে বাজেটে তিন হাজার ৬০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। গত অর্থবছরেও একই পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ রাখা হয়েছিল।

অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, সরকারের রেমিট্যান্স প্রণোদনা খাত থেকে চলতি অর্থবছরের তৃতীয় কিস্তি বাবদ এই এক হাজার কোটি টাকা ছাড় করা হয়েছে। এর আগে গত নভেম্বরে অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর—এই তিন মাসের জন্য দ্বিতীয় কিস্তি বাবদ এক হাজার ৩২০ কোটি টাকা ছাড় করেছিল অর্থ মন্ত্রণালয়। তার আগে আগস্টের শেষের দিকে প্রথম কিস্তির অর্থ ছাড় করা হয়। নিয়মানুযায়ী চার কিস্তিতে রেমিট্যান্স প্রণোদনার অর্থ ছাড় করে আসছে সরকার। তবে রেমিট্যান্সের ঝোড়ো গতির কারণে চলতি অর্থবছরে তিন কিস্তিতে বাজেটে বরাদ্দ অর্থের পুরোটাই শেষ হয়ে গেছে বলে জানা গেছে। তাই চতুর্থ কিস্তির অর্থ অন্য খাত থেকে এনে দেওয়া লাগতে পারে।

রেমিট্যান্স প্রণোদনার তৃতীয় কিস্তির অর্থ ছাড় নিয়ে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি একটি চিঠি বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠানো হয়। এতে বলা হয়, বৈধ পথে রেমিট্যান্স প্রেরণের বিপরীতে প্রণোদনা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে চলতি অর্থবছরে রেমিট্যান্স প্রণোদনা খাতে বরাদ্দকৃত অর্থ থেকে এক হাজার কোটি টাকা বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুকূলে ছাড় করা হলো। তফসিলি ব্যাংকগুলো থেকে প্রাপ্ত প্রণোদনা দাবির বিপরীতে সময়ে সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংক মতিঝিল অফিসে রক্ষিত সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের হিসাবে ক্রেডিট করার মাধ্যমে রেমিট্যান্স প্রণোদনার অর্থ পরিশোধ করবে। তবে এ ক্ষেত্রে আটটি শর্ত পরিপালন করতে হবে।

এগুলো হলো এই ছাড়কৃত অর্থ দিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের অনুকূলে খাতভিত্তিক রেমিট্যান্স প্রণোদনার অর্থ পরিশোধ করতে হবে। দাবি পরিশোধের পর নিরীক্ষায় প্রাপ্য অর্থের চেয়ে বেশি পরিশোধিত হয়েছে মর্মে প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট অর্থ আদায়পূর্বক গ্রহীতার বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে অর্থ বিভাগকে অবহিত করতে হবে। এই অর্থ ব্যয়ে প্রচলিত সব আর্থিক বিধিবিধান ও অনুশাসনাবলি যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে। চলতি অর্থবছর শেষে রেমিট্যান্স প্রণোদনা পরিশোধে বিদ্যমান পদ্ধতি এবং এর প্রভাব সম্পর্কে একটি মূল্যায়ন প্রতিবেদন অর্থ বিভাগে প্রেরণ করতে হবে। কেবল প্রয়োজন অনুযায়ী অর্থ সংযুক্ত তহবিল থেকে উত্তোলন করা যাবে। রেমিট্যান্স প্রণোদনা পরিশোধে ছাড়কৃত অর্থের স্বচ্ছতা বজায় রাখতে এবং এই অর্থের যাতে কোনো ব্যত্যয় না ঘটে সেদিকে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। অর্থ পরিশোধের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক জারিকৃত বৈধ উপায়ে রেমিট্যান্স প্রদানের বিপরীতে প্রণোদনা প্রদানের নীতিমালা যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে।

এদিকে প্রণোদনা দেওয়ার পর থেকে একের পর এক রেকর্ড হচ্ছে রেমিট্যান্সে। এমনকি মহামারি করোনার মধ্যেও তাতে কোনো ছেদ পড়েনি। উল্টো স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে করোনার সময়ে বেশি রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন প্রবাসীরা। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য বলছে, চলতি মাসের প্রথম ১১ দিনেই ৮২ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে। আগের মাস জানুয়ারির পুরো সময়ে আসে ১৯৬ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স। সব মিলে চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসের হিসাবে (জুলাই-জানুয়ারি) রেমিট্যান্সে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩৪.৯৫ শতাংশ। এ সময়ে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে এক হাজার ৪৯০ কোটি ৭৩ লাখ ডলার। সেখানে গত অর্থবছরের একই সময়ে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল এক হাজার ১০৪ কোটি ৬৩ লাখ ডলার।

এদিকে সদ্যোবিদায়ি ২০২০ সালে রেমিট্যান্স আহরণে অনন্য রেকর্ড গড়ে বাংলাদেশ। গত বছরে দেশে দুই হাজার ১৭৪ কোটি ১৮ লাখ (২১.৭৪ বিলিয়ন) ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। এর আগে এক বছরে বাংলাদেশে এত রেমিট্যান্স আর কখনো আসেনি। এটি তার আগের বছরের চেয়ে প্রায় ৩৪০ কোটি ৯৬ লাখ ডলার বা ১৮.৬০ শতাংশ বেশি।

Bootstrap Image Preview