Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৯ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

আজারবাইজানে আর্মেনিয়ার আগ্রাসনের নিন্দায় ওআইসি, নিহত বেড়ে ৯৫

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৩:৫৭ PM
আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৩:৫৭ PM

bdmorning Image Preview


টানা তৃতীয় দিনের মতো নাগোরনা-কারাবাখ অঞ্চলে আজারবাইজান ও আর্মেনিয়ার সামরিক বাহিনীর মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা চলছে। রোববার অঞ্চলটিতে দুই দেশের সামরিক বাহিনী ভারী গোলাবর্ষণের মাধ্যমে সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে; বিশ্বের বিভিন্ন দেশ দ্রুত এই সংঘাত অবসানের আহ্বান জানালেও কোনও পক্ষই সংযম দেখাচ্ছে না।

এই সংঘাতে এখন পর্যন্ত সামরিক ও বেসামরিক নাগরিক মিলে মোট ৯৫ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এদিকে, মুসলিম দেশগুলোর সবচেয়ে বড় জোট অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন (ওআইসি) আজারবাইজানে আর্মেনিয়ার আগ্রাসনের কড়া নিন্দা জানিয়েছে। দুই দেশের সংঘাতের রাজনৈতিক সমাধানের আহ্বান জানিয়েছে ওআইসি।

আজারবাইজানের প্রতি সংহতি পুনর্ব্যক্ত করে ওআইসি বলছে, এটা গভীর উদ্বেগের এবং পূর্বাঞ্চলীয় প্রতিবেশি আজারবাইজানের ওপর আর্মেনিয়ার দফায় দফায় হামলা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। এই সংঘাতে আর্মেনিয়ার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন এবং বেসামরিক হতাহতের ঘটনা ঘটছে।

এক বিবৃতিতে মুসলিম বিশ্বের এই জোট বলছে, দখলকৃত আজারি ভূখণ্ড থেকে আর্মেনীয় সৈন্যদের পুরোপুরি এবং শর্তহীন প্রত্যাহারের আহ্বান জানায় ওআইসি। একই সঙ্গে আজারবাইজানের সার্বভৌমত্বের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে দুই দেশের সামরিক সংঘাতের রাজনৈতিক সমাধানে পৌঁছাতে আলোচনায় বসার আহ্বান জানানো হয়েছে।

সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নভূক্ত দেশ দুটির মাঝে নাগোরনো-কারাবাখ ঘিরে কয়েক দশকের পুরনো সংঘাত রয়েছে। আজারবাইজানের ভেতরে অবস্থিত জাতিগত আর্মেনীয়দের শাসনাধীন নাগোরনা-কারাবাখকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া অঞ্চল হিসেবে মনে করে আজারবাইজান।

অঞ্চলটির দখল ফিরে পেতে প্রয়োজনে সব ধরনের সামরিক উপায় অবলম্বনের হুমকি দীর্ঘদিন ধরে দিয়ে আসছিল দেশটি। আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট আংশিক মার্শাল ল জারি করে সীমান্তে সৈন্য সমাবেশ ঘটানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে উভয় পক্ষকে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে চীন, রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি ও ফ্রান্স। সংর্ঘষের ফলে খ্রিষ্টান অধ্যুষিত আর্মেনিয়া এবং মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ আজারবাইজানের সঙ্গে বিশ্ব মোড়লদের কূটনীতিতে নতুন উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। রাশিয়া তাৎক্ষণিকভাবে অস্ত্রবিরতির আহ্বান জানিয়েছে। আঞ্চলিক অপর পরাশক্তি তুরস্ক বলেছে, ঐতিহ্যবাহী মিত্র আজারবাইজানের প্রতি তাদের সমর্থন রয়েছে।

সোমবার রাশিয়ায় নিযুক্ত আর্মেনিয়ার রাষ্ট্রদূত বলেছেন, উত্তর সিরিয়া থেকে প্রায় চার হাজার সৈন্য আজারবাইনে মোতায়েন করেছে তুরস্ক। যদিও বাকু এই অভিযোগ পুরোপুরি প্রত্যাখ্যান করেছে বলে খবর দিয়েছে ইন্টারফ্যাক্স।

আন্তর্জাতিক আইনে নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চল আজারবাইনের ভূখণ্ড হিসেবে স্বীকৃত। কিন্তু সেখানকার সংখ্যাগরিষ্ঠ জাতিগত আর্মেনীয়রা আজারি শাসন প্রত্যাখ্যান করে। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর আর্মেনিয়ার সমর্থনে নিজস্ব শাসনব্যবস্থা গড়ে তুলেছে নাগোরনো-কারাবাখ।

এই অঞ্চলে দুই পক্ষের সংঘাতে হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু এবং লাখো মানুষ বাস্ত্যুচুত হওয়ার পর ১৯৯৪ সালে দ্বিপাক্ষিক অস্ত্রবিরতিতে রাজি হয় আর্মেনিয়া-আজারবাইজান।

২০১৬ সালের এপ্রিলে দুই দেশের মাঝে ভয়াবহ রক্তক্ষয়ী সংঘাত হয়। এতে উভয় পক্ষে ২ শতাধিক মানুষের প্রাণহানি ঘটে। চলতি বছরের জুলাইয়ে উভয় দেশের সংঘাতে ১৬ জন নিহত হন।

Bootstrap Image Preview