মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কথিত ‘ডিল অব দ্য সেঞ্চুরি’ বা শতাব্দীর সেরা চুক্তিকে প্রত্যাখ্যানের মাধ্যমে এরই মধ্যে তীরে আন্দোলন শুরু করেছেন ফিলিস্তিনি জনগণ। এমন প্রেক্ষাপটে চার নির্যাতিতকে হত্যার পর অবরুদ্ধ পশ্চিম তীর ও জেরুজালেম শহরে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করেছে দখলদার রাষ্ট্র ইসরায়েল।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা জানায়, মার্কিন প্রেসিডেন্টের মধ্যপ্রাচ্য শান্তি পরিকল্পনা ঘোষণার পর দেশ দুটির মধ্যে তীব্র উত্তেজনা দেখা দেয়। এরপর গত দুইদিনে (বুধ ও বৃহস্পতিবার) চার ফিলিস্তিনিকে গুলি করে হত্যা করে ইসরায়েল। যার ধারাবাহিকতায় সেখানে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করে তেল আবিব।
প্রতিবেদনে জানানো হয়, বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) উত্তরাঞ্চলীয় জেনিন শহরের একটি বাড়ি ভাঙার জন্য অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি সেনারা। এতে বাধা দিলে দখলদার বাহিনীর সঙ্গে ফিলিস্তিনিদের সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে ইয়াজান আবু তাবিখ নামে এক ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থী ও তারেক বাদওয়ান নামে এক পুলিশ সদস্যের প্রাণহানি ঘটে।
এ দিকে পবিত্র জেরুজালেম শহরের আল-আকসা মসজিদের কাছে পুলিশের ওপর গুলির অভিযোগে এক ফিলিস্তিনি কিশোরকে হত্যা করেছে দখলদার বাহিনী। তাছাড়া বুধবার (৬ ফেব্রুয়ারি) হেবরনে আরেক ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছিল ইহুদি সেনারা।
অপর দিকে বৃহস্পতিবার জেরুজালেম শহরে এক গাড়ি হামলায় অন্তত ১৬ ইসরায়েলি সেনা আহত হয়। সশস্ত্র ফিলিস্তিনিরা গাড়ি দিয়ে হামলাটি চালিয়েছে বলে অভিযোগ তেল আবিবের।
ইসরায়েলি পুলিশের মুখপাত্র মিকি রসেনফেল্ড ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, হামলায় অভিযুক্ত ওই গাড়িচালককে এরই মধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এখন তাকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
বিশ্লেষকদের মতে, ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে চলমান বিক্ষোভে এমন সময় ইসরায়েল এই সেনা মোতায়েন শুরু করল যখন ‘শতাব্দীর সেরা চুক্তি’ নামে মধ্যপ্রাচ্য শান্তি পরিকল্পনাকে অনেকটাই এগিয়ে নিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এর মাধ্যমে ফিলিস্তিনের ভূখণ্ডে অবৈধভাবে ইহুদিবাদী ইসরায়েল নামক একটি কৃত্রিম রাষ্ট্র গঠন করা হয়েছে।
গত ২৮ জানুয়ারি ‘ডিল অব দ্য সেঞ্চুরি’ বা শতাব্দীর সেরা চুক্তি নামে মধ্যপ্রাচ্য শান্তি পরিকল্পনা ঘোষণা করেছিলেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেখানে ফিলিস্তিনের ঐতিহাসিক জেরুজালেম শহরকে ইসরায়েলি ভূখণ্ড হিসেবে উল্লেখ করা হয়। তাছাড়া কেন্দ্রীয় শহর জেরুজালেমের বাইরের আবু দিস নামে ছোট একটি গ্রামকে ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের রাজধানী হিসেবে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল।
উল্লেখ্য, ট্রাম্পের সেই পরিকল্পনায় জর্ডান নদীর পশ্চিম তীরের অংশবিশেষ ও গাজা উপত্যকা নিয়ে নামমাত্র একটি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের কথা বলা হয়েছে। যে রাষ্ট্রের নিজস্ব কোনো সামরিক বাহিনী থাকবে না।