সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে সরকারি বাহিনীর মর্টার শেলের আঘাতে নিজেদের সেনা নিহতের ঘটনায় পাল্টা জবাব দিতে শুরু করেছে তুরস্ক। এতে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত অন্তত ৭৬ সিরীয় সেনার প্রাণহানি ঘটেছে বলে দাবি আঙ্কারার।
প্রেসিডেন্ট রেসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান বলেছেন, সিরিয়ায় আমাদের ৪ সেনা নিহতের প্রতিশোধ নেওয়া হয়েছে। কেননা পাল্টা আক্রমণে তাদের অনেক সেনার প্রাণহানি ঘটেছে।
সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) ইউক্রেন সফরের পূর্বে তিনি সাংবাদিকদের বলেছিলেন, আমাদের সেনারা শহীদ হবে আর আমরা চুপ করে বসে দেখব তা সম্ভব নয়। ফাইটার জেট ও আর্টিলারি ফায়ার দিয়ে আমরা জবাব দিয়েছি।
তুর্কি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, সোমবার সকালে বিদ্রোহী অধ্যুষিত অঞ্চলে তুরস্কের সেনাবাহিনী অবস্থান নেয়। এর পরপরই মর্টার শেল থেকে গোলাবর্ষণ শুরু করে সিরিয়ার সরকারি বাহিনী। এতে চার তুর্কি সেনা নিহতসহ বাহিনীর আরও ৯ সদস্য গুরুতর আহত হন।
হতাহতের বিষয়টি নিশ্চিত করে তুরস্কের একজন সেনা কর্মকর্তা জানান, রাশিয়ার সহায়তায় আসাদ বাহিনী হামলাটি চালিয়েছে। তুরস্কের সামরিক বাহিনীর অবস্থানের ব্যাপারে আগে থেকেই অবগত ছিল সিরিয়া। এর পরও আসাদের অনুগত সেনারা উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে গোলাবর্ষণ করে।
যদিও এর প্রতিশোধ হিসেবে তুর্কি সেনারা এরই মধ্যে ইদলিবের ৫৪টি লক্ষ্যবস্তুতে সফলতার সঙ্গে আঘাত হেনেছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, রুশ সমর্থিত সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের নির্দেশে সম্প্রতি বিদ্রোহীদের সর্বশেষ ঘাঁটি ইদলিবে জোরালো সেনা অভিযান শুরু হয়। আর এতেই নতুন করে শরণার্থীদের ঢল নামার আশঙ্কায় প্রেসিডেন্ট এরদোগান সীমান্তে অতিরিক্ত সেনা ও সাঁজোয়া যান পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন।
গত বুধবার (২৯ জানুয়ারি) জাতিসংঘ জানিয়েছিল, রুশ যুদ্ধবিমানের সহায়তায় সিরিয়ার সেনাবাহিনী ইদলিব অভিমুখে অগ্রসর হওয়ায় হাজার হাজার বাসিন্দা অঞ্চলটি ছেড়ে তুরস্কের দিকে পালাচ্ছে।
বিশ্লেষকদের মতে, গত বছরের ডিসেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় তিন লাখ ৯০ হাজার মানুষ ইদলিব ছেড়ে পালিয়েছে। যার মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু।
বর্তমানে তুরস্কে আশ্রিত অবস্থায় আছে আরও ৩৫ লাখের অধিক সিরিয়ান শরণার্থী। যদিও উত্তেজনার কারণে নতুন করে শরণার্থীদের ঢলের আশঙ্কায় রয়েছে পশ্চিম ইউরোপের এই দেশটি।