নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো যেনো একেকটি বাংলাদেশ। এখন আর কাউকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় খুঁজতে হবে না। লাল-সবুজ পতাকায় মোড়ানো ভবন মানেই এখন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এমন রূপে সাজানোর ফলে বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণিতে পড়া শিশু সহজে জাতীয় পতাকার রঙ জানতে পারবে। লাল-সবুজ রঙয়ের বিশেষত্ব সম্পর্কে অবগত হয়ে শহীদদের ত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবে শিশুরা।
শিক্ষক ওমর ফারুকের সাথে আলোচনা করে জানা যায়, বিদ্যালয়গুলো লাল-সবুজ রং হওয়ায় তা পরিনত হয়েছে শিক্ষার্থীদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে। লাল সবুজ রংয়ে সজ্জিত করায় বিদ্যালয়ের সৌন্দর্য যেমন বেড়েছে, তেমনি শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিও বেড়েছে।
শিক্ষার্থীরা এখন রীতিমত স্কুলে আসে এবং পাঠদানে সক্রিয় অংশগ্রহন করে। নান্দনিক বিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মনের অবস্থা পরিবর্তন করে দিয়েছে। এছাড়াও প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রয়েছে সততা স্টোর। যেখানে কোনো বিক্রেতা নেই, শিক্ষার্থীরা তাদের প্রয়োজনীয় জিনিস কিনে ক্যাশ বক্সে টাকা রেখে যায়। মানবিকতাবোধ জাগ্রত করার জন্য রয়েছে মহানুভবতার দেয়াল।
মায়েদের সচেতন করার জন্য রয়েছে মাদার্স ক্লাব। যা মায়েদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। শারমিন সুলতানা নামের এক অভিভাবক জানান, এমন সুন্দর বিদ্যালয়গুলো পেয়ে আমরা খুবই খুশি।
জানা যায়,এমন সুন্দর উদ্যোগগুলো নিয়েছেন সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ আবদুল মোতালেব। এ বিষয়ে তার সাথে আলাপ করলে তিনি জানান, শিক্ষার্থীদের দেশের পতাকা চেনানো ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জিবিত জাতি গঠন এবং আমরা যে একটি ঐক্যবদ্ধ জাতি সেটা বুঝানোর জন্য জাতীয় পতাকার রং করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
এ সময় তিনি আরো জানান, ২০১২-১৩ সালে দাগনভুঁইয়া উপজেলায় থাকা অবস্থায় তিনি এমন উদ্যোগ গ্রহন করেন। ২০১৬ সালে তিনি প্রায় শতভাগ স্কুল লাল-সবুজে সাজান। যা এখন সারা দেশে অনুসরন হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের সৎ ও মানবিকগুণ সম্পন্ন মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয়ে বিদ্যালয়গুলোতে সততা স্টোর ও মহানুভবতার দেয়াল স্থাপন করা হয়েছে। মায়েদের সচেতন করার জন্য গঠন করা হয়েছে মাদার্স ক্লাব। কোম্পানীগঞ্জ থেকেই বাংলাদেশ মাদার্স ক্লাবের পদচারনা শুরু। এখন মাদার্স ক্লাবের মায়েদের মাধ্যমে মা সমাবেশ, উঠান বৈঠকসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। এটি মায়েদের মধ্যে নবজাগরন সৃষ্টি করেছে।