Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২০ শনিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

মৃত্যুর পরও মিলছে না হরিজনদের শেষ ঠিকানা

লালমনিরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৫ জুলাই ২০১৯, ১০:১০ PM
আপডেট: ০৫ জুলাই ২০১৯, ১০:১০ PM

bdmorning Image Preview


বাংলাদেশের দলিত ও বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর মধ্যে সমাজে পিছিয়ে পড়া অবহেলিত একটি জনগোষ্ঠী যারা সুইপার বা হরিজন নামে পরিচিত। 

মহাত্মা গান্ধী দলিতদের মেথর বা সুইপার না বলে ‘হরিজন’ বলার আগাম বাণী দিয়ে গেছেন। কিন্তু আজো তাদের সমাজ ও সামাজিকতার মূল সমাজের সঙ্গে যুক্ত করেননি। তারপর বিভিন্ন শাসকগোষ্ঠী জাত-পাতের বিভাজন করেই গেছেন।

জাত যায় তাদের হাতের জল খেলে। বাংলাদেশের দলিত হরিজনরা এখনো মূল রাতের সঙ্গে মিশতে পারেনি। ফলে তারা কলোনিভিত্তিক জীবনযাপন করে যাচ্ছে ব্যাপক অভাব-অনটনের মধ্য দিয়ে। সেই হরিজন সম্প্রদায়ের মানুষদের মৃত্যুর পরেও মিলছেনা তাদের সমাধীর স্থানটুকু।

লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলায় হরিজন জনগোষ্ঠী বংশ পরম্পরায় দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে যাচ্ছেন। বর্তমানে ১৮টি পরিবারের মোট ৮৭জন মানুষ এ উপজেলায় বসবাস করছে।

এ সম্প্রদায়ের মানুষরা মারা গেলে নির্দ্দিষ্ট স্থানে সমাহিত করার জন্য নেই কোন জায়গা। তাই হরিজন সম্প্রদায়ের মৃতদেহ নিয়ে করুণ দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তাদের।সমাধীর স্থান না থাকার কারণে বিভিন্ন জায়গায় বা নদীর পাশে অনেক সমস্যার মধ্য দিয়ে লাশ সমাহিত করতে হচ্ছে হরিজন সম্প্রদায়ের লোকজনদের।

হাতীবান্ধার হরিজন সম্প্রদায়ের উজ্জল বাসঁফোর জানান, আমার পিতা শ্রী মদন লাল বাসঁফর ১৯৯৯ সালে মারা যায়। সমাধির স্থান না থাকার কারণে মুসলমানদের কেন্দ্রীয় কবর স্থানে তাকে সমাহিত করা হয়েছিল। ওই সময় এ সমাহিত করার বিষয় নিয়ে আমরা সমস্যায় পড়ি। সমাহিতের ৩দিন পর সেই মৃতদেহ আবার কবর থেকে তুলে রেল-লাইনের ধারে পুনঃরায় সমাহিত করতে হয়েছিল।

এছাড়াও, পরবর্তীতে আমাদের সম্প্রদায়ের শংকর বাসঁফোরকে নদীর বালুচরে এবং শান্তি রাণী বাসঁফোরকে পুকুরের পাশে সমাহিত করা হয়েছিল। সমাজে পিছিয়ে পড়া হরিজনদের দীর্ঘদিনের এ সমস্যা দূর করতে, হরিজন গোষ্ঠীর সকল সদস্যদের পক্ষে তাদের প্রতিনিধি হিসেবে জুয়েল কুমার বাসঁফোর হাতীবান্ধা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর সরকারি খাস জমিতে সমাধির স্থান বরাদ্দের আবেদন করা হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত এ সমস্যার সমাধান হয়নি।

হাতীবান্ধা হরিজন গোষ্ঠীর প্রতিনিধি হিসেবে জুয়েল কুমার বাসঁফোর বলেন, সরকার সমাজে পিছিয়ে পড়া অবহেলিত জনগোষ্ঠীর জন্য অনেক উন্নয়ন মুলক কাজ করে যাচ্ছে। আমরা আমাদের সমাধির স্থান নিয়ে সমস্যায় আছি।

এ সমস্যা সমাধানের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট আবেদনও করা হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি তিনি একটু আন্তরিক হলে আমাদের সমাধির স্থানের সমস্যার সমাধান সহজে হয়ে যাবে।

হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সামিউল আমিন বলেন, আমাকে লিখিত ও মৌখিকভাবে বিষয়টি জানিয়েছেন। কোন প্রকার সরকারি বরাদ্দ আসলে হরিজনদের দীর্ঘদিনের সমাধির সমস্যাটি আশা করছি সমাধান হবে।

Bootstrap Image Preview