Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৩ মঙ্গলবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১০ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

ফণীর তাণ্ডবের পর শান্ত এখন পটুয়াখালী 

জাহিদ রিপন, পটুয়াখালী প্রতিনিধিঃ
প্রকাশিত: ০৪ মে ২০১৯, ০৮:৪১ PM
আপডেট: ০৪ মে ২০১৯, ০৮:৪১ PM

bdmorning Image Preview


ঘূর্ণিঝড় ফণীর তাণ্ডব শেষে শান্ত এখন পটুয়াখালীর উপকূলীয় জনপদ। তবে বরাবরের মতই রেখে গেছে কিছু স্মৃতি চিহ্ন। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব কেটে যাওয়ায় পটুয়াখালীর বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়া লোকজন শনিবার (৪ মে) দুপুরেই বাড়ি ফিরেছে। উপকূলীয় এ জেলায় এখন স্বাভাবিক আবহাওয়া বিরাজ করছে।

শনিবার বিকেলে থেকে আকাশ পরিস্কার ছিল। ঝলমলে রোদ রয়েছে। দমকা হাওয়া বইছে থেমে থেমে। ভ্যাপসা গরম পড়ছে। 

এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নিম্ন এলাকায় ক্ষেতের ফসল তলিয়ে গেছে। পুরনো বিধ্বস্ত বেরীবাঁধ দিয়ে অস্বাভাবিক জোয়ারের পানি প্রবেশ করে জেলার কলাপাড়া, মির্জাগঞ্জ ও রাঙ্গাবালীতে ১২টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বিধ্বস্ত বেড়িবাঁধ এলাকায় জলোচ্ছ্বাসের প্লাবণে অন্তত ৩ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে আছে। এসব গ্রামের মানুষ চরম ভোগান্তির কবলে পড়েছে। লালুয়ায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান পিডব্লিউবি’র (জেভি) টিনশেড ঘরের চাল লণ্ডভণ্ড  হয়ে গেছে। তাঁদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। মালামাল ভেসে গেছে জলোচ্ছ্বাসে।

কলাপাড়া  উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সুমন চন্দ্র দেবনাথ জানান, ফণীর তাণ্ডবে কলাপাড়ায় সম্পূর্ণভাবে বিধ্বস্ত হয়েছে ৪৬টি ঘর। এছাড়া আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে ৪৮৭টি ঘর। বিধ্বস্ত বেড়িবাঁধ এলাকায় জলোচ্ছ্বাসের প্লাবণে  অন্তত ৩ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে আছে। চারিপাড়াসহ ৭টি গ্রামের মানুষ চরম ভোগান্তির কবলে পড়েছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে দেড় হাজার পরিবারকে ১৫ কেজি করে চাল বিতরনের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বাকিদেরও চাল বিতরণ করা হবে।

ঝড়ের সময় গাছের ডাল পড়ে গুরুতর জখম হাবিব মুসল্লী (৩৭) বরিশালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।

শুক্রবার (৩ মে) মধ্যরাতে হাবিব মারা গেছেন। তাকে কুয়াকাটা পৌর এলাকায় দাফনের প্রস্তুতি চলছে। সরকারিভাবে কুড়ি হাজার টাকা প্রাথমিকভাবে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে ভাড়াটে মোটরসাইকেল চালক ও যাত্রী জাহাঙ্গীর সিকদার ও সূর্য বেগমকে নিয়ে যাওয়ার সময় মনষাতলী গ্রামে গাছের ডাল ভেঙ্গে তিনজন গুরুতর জখম হয়। সবাইকে বরিশাল শেবাচিমে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়। 

মির্জাগঞ্জে মেন্দিয়াবাদ ও রামপুর গ্রামের পায়রা নদীর বাধঁ ভেঙ্গে ১০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪-৫ ফুট পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ৪১/৭ নং পোল্ডারের মেন্দিয়াবাদ গ্রামের ৫টি গ্রাম ও আয়লা কানকী রামপুর বেড়িঁবাধ ভেঙ্গে এসব গ্রামের রবি ফসলী মাঠ ও বসত বাড়ি প্লাবিত হয়েছে।

এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবদুল্লাহ আল জাকী জানান, ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার গুলোর জন্য খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মির্জাগঞ্জে ৪২টি সাইক্লোন সেল্টারে প্রায় সকল মানুষজন নিরাপদে আশ্রয়ে নিতে পেরেছে। ফণীর কারণে  মির্জাগঞ্জে প্রায় ৪ কিলোমিটার বাধঁ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দ্রুত এসব বাঁধ মেরামত করা হবে। 

জেলা প্রশাসক মতিউল ইসলাম চৌধুরী শনিবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের দরবার হলে ঘূর্ণিঝড় ফনি পরবর্তী ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে জেলার ৮টি উপজেলায় এ পর্যন্ত ১১ জন আহত, ২ হাজার ৯২টি কাঁচা ঘরবাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ, ১৪৫টি গবাদীপশু মারা যাওয়াসহ ১০ কিলোমিটার বেরীবাঁধ ক্ষতিগ্রস্থ এবং ৫০টি মাছের ঘের ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।   
 

Bootstrap Image Preview