ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে অস্বাভাবিক জোয়ারের পানির চাপে ভাংগা বেরিবাঁধ দিয়ে পানি প্রবেশ করে পটুয়াখালীর কলাপাড়া, মির্জাগঞ্জ ও রাংগাবালী ইউনিয়নের উনিশটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ফলে এসব গ্রামের প্রায় অর্ধ-লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
এসব পানিবন্দি মানুষকে উপজেলা প্রশাসনসহ থানা ও নৌ-পুলিশসহ ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির স্বেচ্ছাসেবকদের সহায়তায় দ্রুত নিকটবর্তী আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। সরিয়ে নেয়া হয়েছে গবাদি পশুসহ আসবাবপত্র। কুয়াকাটা সংলগ্ন খাজুরা পয়েন্টে বেরিবাঁধ ভেঙ্গে যাবার আশংকায় বালুর বস্তা দিয়ে প্রতিরোধের চেষ্টা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার (৩ মে) সকালে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার মেহেন্দিয়াবাদ ও চরখালী গ্রামে বেরিবাঁধ ভেঙ্গে অন্তত চারটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। কলাপাড়ার লালুয়া ইউনিয়নের ভেংগে যাওয়া বেরিবাঁধ দিয়ে পানি প্রবেশ করে চারিপাড়া, মজ্ঞুপাড়া, মুন্সীপাড়া, হাসনাপাড়া, চৌধুরীপাড়া, নয়াকাটা, ধজ্ঞুপাড়া, কলাউপাড়া, পশরবুনিয়া, বানাতীপাড়া, চান্দুপাড়া, নাওয়াপাড়া এবং রাংগাবালী উপজেলার চালিতাবুনিয়ার মধ্য চালিতাবুনিয়া, গরুভাংগা, চিনাবুনিয়া গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
শুক্রবার (৩ মে) বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত এসব এলাকার প্রায় ৩৫ হাজার মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রশাসন। পানিবন্দি এসব এলাকা পরিদর্শন করেছেন সংশ্লিস্ট এলাকার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা।
এদিকে জেলার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রাঙ্গাবালী উপজেলার বেরিবাঁধ বিহীন চর কাসেম, চর নজির ও চর বাংলা থেকে গবাদী পশু ও জনগন সাধারণকে সরিয়ে নিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। তবে চরআন্ডা এলাকায় প্রায় সাড়ে ৩ হাজার মানুষের জন্য একটি মাত্র সাইক্লোন সেল্টার থাকায় সেখানকার মানুষের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
লালুয়া ইউপি চেয়ারম্যান শওকত হোসেন তপন বিশ্বাস জানান, শুক্রবার সকালে জোয়ারের অতিরিক্ত পানি প্রবাহের ফলে ভাংগা বেরিবাধ দিয়ে গ্রাম প্লাবিত হওয়ার খবর শুনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা, উপজেলা ঘূর্নিঝড় প্রস্তুতি কর্মকর্তাসহ এলাকা পরিদর্শন করেছি।
কলাপাড়া উপজেলা ঘূর্নিঝড় প্রস্তুতি কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান খান জানান, পানিবন্দি এলাকার মানুষের জন্য সিপিপি'র স্বেচ্ছাসেবকসহ স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা প্রস্তত রয়েছে। তাদের জন্য শুকনো খাবার, খাবার স্যালাইন ও নিরাপদ পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। সোলার সিস্টেমে রাতের জন্য আলোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। স্বাস্থ্য সেবা প্রদানের জন্য মেডিকেল টিম প্রস্তত রয়েছে।