পিরোজপুরের কাউখালীর মানুষ বর্ষবরণ করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। বৈশাখ বাঙ্গালীর প্রাণের উৎসব তাই বর্ষবরণে চলছে নানা আয়োজন। কাউখালী উপজেলার গ্রাম গঞ্জে বসবে বৈশাখী মেলা। এ বৈশাখী মেলার বাচ্চাদের আকর্ষণ থাকে মাটির তৈরি নানা ধরণের খেলনা ও পুতুল। তাই মেলাকে সামনে রেখে শেষ মূহুর্তে দিনরাত কাজের চাপে ব্যস্ত সময় পার করছে পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলার উত্তর বাজার ও সোনাকুর গ্রামের মৃৎ শিল্পীরা।
কাউখালীতে ১০ থেকে ১২টি মৃৎ শিল্প পরিবারের সদস্যরা অন্যান্য কর্মহীন দিনের তুলনায় এখন নাওয়া-খাওয়া ছেড়ে বেশ ব্যস্ততায় দিন কাটাচ্ছে।
সরেজমিনে কাউখালী উপজেলার উত্তর বাজার মৃৎশিল্প পাড়ায় গিয়ে দেখা গেছে, ১০ বছরের শিশু রিপন পাল থেকে শুরু করে বৃদ্ধ অনির পাল পর্যন্ত সকলেই কাজে মহাব্যস্ত। কথা বলার কোনও সুযোগ নেই। তবুও কাজের ফাঁকে কথা হয় তাদের সাথে।
বানানো শেষ হাতি, ঘোড়া, হরিণ, বাঘ, গরু, লঞ্চ, নৌকা, হাড়ি-পাতিল, বালতি, থালা, কড়াই। বর্ষবরণ উপলক্ষ্যে তাদের দিন-রাত এক হয়ে গেছে। অবসর নেই বাড়ির বউ-ঝি, ছেলে-বুড়ো কারও। সবাই ব্যস্ত মাটির নানা সামগ্রী বানানতে। মৃৎ শিল্পীদের মাটির তৈরি খেলনা সামগ্রী রোদে শুকানো হচ্ছে।
এরপর এগুলোকে পুড়িয়ে রং করে বিভিন্ন এলাকার মেলায় বিক্রির জন্য নিয়ে যাওয়া হবে। পাল পাড়ার প্রতিটি বাড়িই যেন মাটির হাড়-পতিল, হাতি, ঘোড়া, গরু, বাঘ, চিংড়ি মাছ, রুই মাছ, দেব-দেবীর মূর্তি বানানোর কারখানা।
কাউখালীর উত্তর বাজারের মৃৎ শিল্পি রবিন পাল জানান, বিভিন্ন পূজার সময় প্রতিমা তৈরি আর বৈশাখী মেলার সময় মাটির খেলনা বানানোই তাদের এখন প্রধান আয়ের উৎস্য। তাই এ সময় তাদের অনেক ব্যস্ততা থাকে।
মৃৎ শিল্পী রাধা রানী পাল বলেন, তারা ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত হরেক রকম মাটির প্রাণী ও নানা ধরনের খেলনা বানানোর কাজ করেন। মৃৎ শিল্পীরা জানান খেলনা সামগ্রী এক একটি ১০ থেকে ১৫ টাকা দরে বাজারে বিক্রি করা হবে তবে খেলনা বিশেষ বাহারি ও বড় আকৃতির অনেক খেলনা ৮০ থেকে ১'শ টাকায়ও বিক্রি হবে।