আশ্চর্য হলেও ঘটনাটি সত্য। মাত্র ৬০ দিন শুয়ে থাকলেই পাওয়া যাবে সাড়ে ১৫ লাখ টাকা। এমনই এক লোভনীয় চাকরির অফার দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা ও ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থা।
দুই সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যারা ৬০ দিন একাধারে শুয়ে কাটাতে পারবেন, তাদেরই এই চাকরির জন্য বেছে নিচ্ছেন এ দুই মহাকাশ গবেষণা সংস্থা। শুয়ে থাকার জন্য যে পরিশ্রম হবে, তার জন্য মিলবে অতিরিক্ত পারিশ্রমিক।
এ বিষয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানায়, এই কাজের জন্য স্বেচ্ছাসেবকরা পাবেন ১৪ হাজার ১৭৭ পাউন্ড। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ দাঁড়ায় ১৫ লাখ ৬৯ হাজার ৫০৯ টাকা। প্রাথমিকভাবে ঠিক করা হয়েছে, এই গবেষণার জন্য নেয়া হবে বিভিন্ন বয়সের ১২ জন পুরুষ ও ১২ জন মহিলা।
বাংলাদেশসহ সারা পৃথিবী থেকেই নেয়া হবে স্বেচ্ছাসেবক। পরীক্ষা ৬০ দিন হলেও সব মিলিয়ে থাকতে হবে প্রায় ৮৯ দিন। কারণ প্রথম ৩০ দিন ধরে বিভিন্ন মেডিক্যাল টেস্টের মধ্য দিয়ে যেতে হবে স্বেচ্ছাসেবকদের। যারা স্বেচ্ছাশ্রম দেবেন, তাদের বিশেষভাবে বানানো একটি বিছানায় শুয়ে থাকতে হবে। এই বিছানায় মাধ্যাকর্ষণের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
অর্থাৎ কখনও নিজেকে ভারী আবার কখনও নিজেকে পালকের মতো হালকা মনে হবে। মাধ্যাকর্ষণ না থাকলে শরীরের ওপর কোনো খারাপ প্রভাব পড়লে তা কীভাবে কাটিয়ে ওঠা সম্ভব, সেই পরীক্ষাও করবে নাসা।
জানা যায়, ইউরোপীয়ান স্পেস এজেন্সি- এসা'র সঙ্গে সমন্বিতভাবে এ গবেষণা পরিচালনা করছে নাসা। এজন্য বাছাইকৃত ২৪ জন আগামী সেপ্টেম্বরে জার্মান অ্যারোস্পেস সেন্টারে যাওয়ার সুযোগ পাবেন। সেখানেই বৈজ্ঞানিক গবেষণার জন্য দুই মাস ধরে শুয়ে থাকতে হবে তাদের।
জার্মানিতে তাদের দুইটি দলে ভাগ করে দিয়ে একটি কক্ষে রাখা হবে। এ সময়ের মধ্যে খাওয়া দাওয়া থেকে শুরু করে প্রাকৃতিক কাজ সবকিছুই করতে হবে শুয়ে শুয়ে। তবে যাতে বিরক্তির উদ্রেক না হয় সেজন্য তাদের জন্য থাকছে বিনোদনের ব্যবস্থা। তাদের জন্য একটি টেলিভিশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া বই পড়াসহ শুয়ে শুয়ে অবসর যাপনের যাবতীয় উপাদান থাকছে রুমটিতে। তাদের পুষ্টিকর খাবারের দিকে নজর রাখবে কর্তৃপক্ষ। তবে আয়োজকদের পরামর্শ হচ্ছে, এই অখণ্ড অবসরে বিভিন্ন অনলাইন কোর্স করে নেওয়া যেতে পারে।
নাসার বিজ্ঞানী লেটিসিয়া ভেগা জানান, ‘আগামী দিনে আরও বেশি করে মহাকাশে বিজ্ঞানীদের পাঠানো হবে। তাদের যাত্রা সুরক্ষিত করতে এবং তারা যাতে মহাকাশে গিয়ে নিরাপদে থাকতে পারেন, সেই লক্ষ্যেই এ পরীক্ষা করা হচ্ছে।’