ফ্রান্সে মুসলিমদের প্রতিনিধিত্বকারী প্রধান একটি সংস্থা ফেসবুক, ইউটিউবের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে দুটো মসজিদে হামলার ভিডিও ফুটেজ চলতে দিয়ে সহিংসতা উসকে দেয়ার অভিযোগে এ মামলা করছে দ্য ফ্রেঞ্চ কাউন্সিল অব মুসলিম ফেইথ।
জানা যায়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও টুইটারে নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের দু’টি মসজিদে শুক্রবারের হত্যাকাণ্ডের লাইভ সম্প্রচার হওয়ায় বিশ্বজুড়ে ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে। এ ঘটনায় ৪৯ জন মুসল্লিকে গুলি করে হত্যা করা হয়। হামলাকারীদের একজন তার হেলমেটে থাকা ভিডিওর মাধ্যমে ১৭ মিনিট ধরে ফেসবুকে লাইভ সম্প্রচার করে। অন্য দিকে একটি টুইটার অ্যাকাউন্টে হামলার যৌক্তিকতা প্রচার করা হয়। ফেসবুক,টুইটার ও ইনস্টাগ্রাম থেকে এই ভিডিওগুলো সরিয়ে ফেলার জন্য সোস্যাল মিডিয়ার এই প্লাটফরমগুলো চেষ্টা চালায়। কিন্তু তার পর তা সামাজিক অন্যান্য মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে। নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আরডার্ন এ হামলাকে নজিরবিহীন ও ভয়াবহ সহিংসতার ঘটনা বলে বর্ণনা করেছেন। এ ঘটনাকে প্রধানমন্ত্রী ‘নিউজিল্যান্ডের সবচেয়ে অন্ধকার দিনগুলোর একটি বলে মন্তব্য করেছেন।
মুসলিম সংস্থা সিএফসিএম-এর ইসলামবিদ্বেষ তদারককারী ইউনিটের প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ জাকরি বলেছেন, ফ্রান্সে তাদের সংগঠন এরই মধ্যে ইউটিউব ও ফেসবুকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করতে শুরু করেছে। ফুটেজটি নিয়ে ফেসবুক ও ইউটিউব দুটো কোম্পানিই ব্যাপক সমালোচনার শিকার হয়েছে।
টুইটারের নিউজিল্যান্ডের একজন মুখপাত্র বলেন, যে অ্যাকাউন্ট থেকে গুলির ঘটনা লাইভ হয়েছে সেটি এবং অপর অ্যাকাউন্ট থেকে এ হামলার যৌক্তিকতা প্রচার করা হয়েছে সেগুলো বন্ধ করা হয়েছে। দু’টি অ্যাকাউন্টই কঠোর টুইটার নীতি লঙ্ঘন করেছে।
তিনি আরও বলেন,এ ঘটনায় টুইটারের একটি জরুরি টিম জরুরি পরিস্থিতি পরিচালনার জন্য কঠোর প্রক্রিয়া অবলম্বন করেছে। আমরা তদন্তের সাথে সাথে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করব।
এদিকে, ফেসবুক এক বিবৃতিতে বলেছে, লাইভ ফুটেজ মুছে ফেলা হয়েছে। এ জন্য ব্যাপক ‘প্রশংসা ও সমর্থন’ পাওয়া গেছে। লাইভ ভিডিওটি ছিল একটি হিংস্র হুমকি।
নিউজিল্যান্ডের ফেসবুক প্রতিনিধি মিয়া গার্লিক বলেন, নিউজিল্যান্ড পুলিশ লাইভ স্ট্রিম শুরু হওয়ার পরেই আমাদের সতর্ক করেছিল। আমরা শুটারের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ও ভিডিও উভয়কে অতি দ্রুততার সাথে সরিয়ে দিয়েছি। আমরা এ বিষয়ে নিউজিল্যান্ড পুলিশের সাথে সরাসরি কাজ করছি।
উল্লেখ্য,গত ১৫ মার্চে নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে দুটো মসজিদে এক শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদী অস্ট্রেলীয় তার বন্দুক হামলায় ৫০ জনকে হত্যার দৃশ্যের লাইভ সম্প্রচার করেছিল ফেসবুকে। ১৭ মিনিটের সে ফুটেজ দ্রুতই ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। ফেসবুক বলেছে তারা এ ফুটেজের হাজার হাজার কপি সরানোর আপ্রাণ চেষ্টা করেছে। কিন্তু হামলার কয়েক ঘণ্টা পরও ফুটেজটি ফেসবুক,টুইটার ও ইউটিউবে পাওয়া গেছে।