Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৮ বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৫ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

বিদেশিদের জন্য ঢাকা বসবাসের উপযোগী নয়

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২১ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ০৯:২২ PM
আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ০৯:২৫ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত


আমার, আপনার, আমাদের সকলের প্রতিনিয়ত যে সমস্যাটির সম্মুখীন হতে হয় সেটি হচ্ছে যানজট। বিদেশিরাও আসলে সেই একই সমস্যায় অতিষ্ট। সচেতনতার অভাব, ট্রাফিক নিয়ম না মানার প্রবণতা মূলত এ জন্য দায়ী। এছাড়াও যত্রতত্র হর্ন বাজানো তো আছেই। সমস্যা মূলোৎপাটনে জরুরি ছাত্রদের বিশেষ ভূমিকা। সরকার, প্রশাসনের পাশাপাশি জনসচেতনতা তৈরিতে সংযুক্ত করতে হবে ছাত্রদের।

কিভান নায়ের,পড়াশুনা করছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজে। আর থাকছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার পিজে হার্টস ইন্টারন্যাশনাল আবাসিক হল’এ। ৫ বছর আগে এসেছিলেন সুদূর মালয়েশিয়া থেকে বাংলাদেশে। সাক্ষী হয়েছেন অসংখ্য ভালো-খারাপ সময়ের। ঢাকায় তাঁর যাপিত জীবনের নানান দিক তুলে ধরেছেন আমিনুল ইসলাম নাবিল।

পড়াশুনার চাপে খুব বেশি ঘুরাফেরা হয়ে উঠে না। অবসরে ছুটে যান বসুন্ধরা স্টার সিনেপ্লেক্স কিংবা যমুনা ফিউচার পার্কে একটু বিনোদনের আশায়। ঘুরেছেন পুরান ঢাকার আহসান মঞ্জিল, লালবাগ কেল্লাসহ বেশ কিছু ঐতিহাসিক স্থাপনায়। কিন্তু সেই ভ্রমণগুলো তাঁকে এনে দিতে পারেনি পরিপূর্ণ প্রশান্তি।

কিভানের মতে, ঢাকা বিদেশিদের অবস্থানের উপযোগী নয়। মোটা দাগে বেশ কিছু কারণ ও দেখালেন তিনি। সবকিছু এখানে বাংলায় লেখা ফলে বিদেশিরা সঠিক ভাবে বুঝতে পারে না। এমনকি কাস্টমার কেয়ার সার্ভিস গুলোও কথা বলে বাংলায়। তবে কিভান স্বীকার করেন বাংলা ভাষা বাঙালিদের আবেগের ও গর্বের একটি জায়গা তবুও কিভান চান বিদেশিদের কথা মাথায় রেখে ইংরেজির ব্যবস্থাও যেন থাকে।

বিদেশি পেলেই রিকশা চালকরা আদায় করেন বাড়তি ভাড়া যা খুবই কষ্টের। তবুও তিনি বলতে ভুল করেননি এদেশের অধিকাংশ মানুষই অনেক বেশি পরোপকারী। এটি খুবই ভালো। ঠিক এখন থেকে তিন চার বছর আগের বাংলাদেশ আর বর্তমান বাংলাদেশের অনেক তফাৎ। বিশেষ করে সবকিছুই ধীরে ধীরে ডিজাটাল হচ্ছে যার ভূয়সী প্রশংসা করেন তিনি। তবে এত উন্নতির মাঝেও কিভান স্মরণ করিয়ে দেন দুর্নীতি ও অসমতার কথা। উপর থেকে নীচ পর্যন্ত দুর্নীতি ও অসমতার যে কালো চাদর আছে সেটি সরিয়ে ফেলতে পারলে দেশটি আরও এগিয়ে যাবে।

এছাড়াও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, শব্দদূষণ হতে মুক্তি মিললে ঢাকাও হবে একটি আদর্শ বাসযোগ্য নগরী।

আসলে, একে অন্যকে দোষারোপ করে কিংবা অযথা সময় নষ্ট না করে সকলের উচিত পরিবর্তনের জন্য কাজ করা। এত এত মিছিল, সমাবেশ, হৈ-হুল্লোড়ের মধ্যে কোন সমস্যার পরিবর্তন আসবে না। স্বার্থপরতা ত্যাগ করতে হবে।

এই ধরেন, মধ্যরাতে উচ্চস্বরে শব্দদূষণের আগে ভাবতে হবে এর দ্বারা কেউ ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে কিনা। উৎসব নিয়ে কথা বলেন কিভান। তিনি বলেন, ‘’পহেলা বৈশাখ, বইমেলা, বসন্ত উৎসব, শরৎ উৎসবগুলোতে খুবই এনজয় করি। শহীদ মিনার, স্মৃতিসৌধতে গিয়েছি বহুবার। সত্যিই এগুলো আমাকে অনেক আকৃষ্ট করেছে।‘’ বেশকিছু সেক্টরে ডিজিটালের ছোঁয়া লাগলেও এখনও সব জায়গা পর্যন্ত পৌঁছায়নি। এই যেমন, আমাদের দেশ মালয়েশিয়াতে রাস্তা মেরামতের কাজে মেশিন ব্যবহার করা হয় অথচ এখানে দেখি শ্রমিকরা হাতুড়ি দিয়ে হাতে কাজ করেন। এটা খুবই কষ্টদায়ক। আর তাঁরা যথাযথ মজুরিও পান না।

কিভান মনে করেন, ঢাকার চেয়ে বাংলাদেশের গ্রামগুলো অনেক বেশি সুন্দর। ঢাকায় পর্যাপ্ত গাছ নেই। সবুজের ভীষণ অভাব এখানে। মাত্রাতিরিক্ত গাড়ি, গাড়ির কালো ধোঁয়া। এসব কিছুই পরিবেশের জন্য মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ।

ভবিষ্যত নিয়ে কি পরিকল্পনা জানতে চাইলে তিনি জানান, ‘’ইন্টার্নশিপ শেষ করে ফিরে যাবো নিজ দেশে। সেখানে যেয়ে দেশের মানুষের স্বাস্থ্যসেবা উন্নতিতে কাজ করার পরিকল্পনা আছে।‘’

কখনও কি আবার আসবেন ঢাকায় এমন প্রশ্নের জবাবে সরাসরি কিভানের জবাব ‘নাহ’। তবে কিভান জানান, একটা জায়গায় আসার খুব ইচ্ছা আছে। যদি কখনো বাংলাদেশে আসি তবে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড যাবো অবশ্যই। চন্দ্রনাথ পাহাড়ের উপরে চন্দ্রনাথ মন্দিরটা ঘুরার খুবই শখ। আসলে সবকিছু মিলে বাংলাদেশ খুবই বিউটিফুল একটা কান্ট্রি।

 

সাক্ষাৎকার নিয়েছেনঃ আমিনুল ইসলাম নাবিল 

Bootstrap Image Preview