যাত্রাবাড়ির লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের শিক্ষার্থী অদিতা। হেলে দুলে হেঁটে চলেছে একটা বই বগল দাবা করে৷ বাবা সিফাত মোল্লা বারবার চেষ্টা করছেন বইটি নেয়ার জন্য কিন্তু সে তার সমস্ত জোর দিয়ে টেনে ধরে রেখেছে। কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করতেই বাজা বাজা স্বরে বললো, 'মতস কুমারী' কিনেছি৷ তোমাকে দিবোনা। কাউকে দিবোনা।'
চলছে অমর একুশে বইমেলা। ইতিমধ্যে পার হয়ে গেছে অর্ধেক সময়। বড়দের সাথে সাথে শিশুদের পদচারণায় ভরপুর প্রাণের মেলা৷ অদিতার মতো নানান বয়সের শিশুরা বাবা কিংবা মায়ের হাত ধরে গুটি গুটি পায়ে মেলায় ঘুরছেন।
শিশুদের অন্যতম আকর্ষণ শিশুচত্বর। শিশু চত্বরজুড়েই রয়েছে গল্পের বই, ছড়ার বই, কার্টুন বই, কমিকস, হরর, রূপকথা, বর্ণমালা কি নেই সেখানে!
চত্বরে ঢুকলেই আরো চোখে পড়ে সুন্দর করে সাজানো একটি মঞ্চ। সেখানে রয়েছে নানা রকমের আয়োজন। আর সাথে পাওয়া যাবে সিসিমপুরের ইকরি, মিকরি, হালুম সবাইকে।
তারপর আরেকটু সামনে এলে দেখা যায়, খেলনার কত কিছু! ইচ্ছে হলে উঠে যেত পারে হাঁসের পিঠে, ঘোড়ার পিঠে। আরও রয়েছে নানা রকমের বাংলা বর্ণমালা, প্রজাপতি, বাঘমামা, সিংহমামা, ইংরেজি বই আরও কত কি!
সিসিমপুরে’র সুর কানে আসতেই হাত ছেড়ে দিয়ে দৌঁড়ে যায় সিয়াম। বায়না ধরলো সিসিমপুরের মঞ্চে যাওয়ার। শিশুদের জনপ্রিয় কার্টুন চরিত্র ইকরি, হালুম, টুকটুকি, শিকোর উপস্থিতিতে মেলায় শুরু হয় তার দুরন্তপনা।
সিসিমপুরের নির্বাহী পরিচালক শাহ আলম বলেন, গত ১৫ বছর ধরে আমরা বাচ্চাদের নিয়ে নানা মজার প্রোগ্রাম করে আসতেছি৷ বইয়ের মধ্যেও রয়েছে নানান বৈচিত্র্য৷
শিশুদের জন্য বইমেলায় প্রতি বছর আলাদা কিছু দেখা যায়। তার পাশাপাশি এবার বেশ কিছু প্রকাশনা নিজেরাই কিছু ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছেন। শিশুকিশোরদের কথা মাথায় রেখে বেশ কিছু বইয়ের পাশাপাশি বিজ্ঞান চর্চাতেও মনোযোগ দিয়েছেন। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির দিকে শিশুদের আকৃষ্ট করতে কেউ কেউ এনেছে অন্যরকম বিজ্ঞানবাক্স৷