Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ শুক্রবার, মার্চ ২০২৪ | ১৫ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

আজ শুধু ভালোবাসার দিন

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ০৯:৪৭ AM
আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ০৯:৫৬ AM

bdmorning Image Preview


তোর জন্য আনতে পারি আকাশ থেকে তারা, তুই বললে বাঁচতে পারি অক্সিজেন ছাড়া। পৃথিবী থেকে লুটাতে পারি বন্ধু তোরি পায়, এবার তুই বল, এভাবে আর কত মিথ্যা বলা যায়! এরই নাম ভালোবাসা। বিশ্ব আজ ভালোবাসায় উজ্জীবনে নতুন আবেশ চারিদিকে। ভালোবাসা হচ্ছে জীবনের বন্ধু। ভালোবাসার কোনো অর্থ বা পরিমাণ নেই।’ যা মানুষকে সাহস জোগায় সামনে এগিয়ে যাওয়ার, শক্তি জোগায় শোক, ব্যথা আর হতাশার মধ্যেও বেঁচে থাকার। বসন্তের আবির মেখে আবারও ফিরে এসেছে সেই ভালোবাসার দিন। আজ সেই ভালোবাসা দিবস। 

বর্তমানে সমগ্র বিশ্বে এই দিনটিকে বিশ্ব ভালোবাসা দিবস হিসেবে পালন করা হয়। প্রেমিক-প্রেমিকা, বন্ধু-বান্ধব, স্বামী-স্ত্রী, মা-সন্তান, ছাত্র-শিক্ষক সহ বিভিন্ন বন্ধনে আবদ্ধ মানুষেরা এই দিনে একে অন্যকে তাদের ভালোবাসা জানায়।

এই দিনটি খুবই ঘটা করে আনন্দ উৎসবের মধ্য দিয়ে পালন করা হয়। এই দিনে পার্ক ও বিনোদন কেন্দ্রগুলো ভালোবাসার মানুষদের দ্বারা পরিপূর্ণ থাকে। ভালোবাসা দিবসের এই দিনে প্রিয়জনকে সবাই ফুল ও বিভিন্ন সামগ্রী উপহার দিয়ে থাকে।

তবে বিশ্ব ভালোবাসা দিবসটি কয়েক বছর আগ পর্যন্তও যুক্তরাষ্ট্র বা পাশ্চাত্য সমাজের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। তবে বর্তমানে এই দিবসটি বিশ্ব ব্যাপী দেশে দেশে আনন্দ উন্মাদনার সঙ্গে পালন করা হয়। 

আসলে হাজারো দ্বন্দ্ব সংঘাতের এই পৃথিবী টিকে আছে ভালোবাসার টানে। ফাগুন হাওয়ায় ভেসে যাবে ভালোবাসার নৌকা। প্রেমকাতর হৃদয়ের রক্তরাঙা গোলাপটি তুলে দেবে প্রিয়ার হাতে। হিয়ার মাঝে বেজে উঠবে গান, আমি হৃদয়ের কথা বলিতে ব্যাকুল।
 
আজ প্রেমিক যুগলদের পদচারণায় মুখর হবে পার্ক আর বিনোদন কেন্দ্রগুলো। বই বা কার্ডের ফাঁকে ভালোবাসায় সিক্ত গোলাপকলি গুঁজে দিয়ে তারা একে অপরকে জানাবে ভালোবাসা। ছয় ঋতুর মধ্যে বসন্ত প্রেম ও রোমান্টিকতার প্রতীক হিসেবে পরিগণিত। এ সময় ফুলে ভরা প্রকৃতির প্রভাবে মানুষের মনও হু হু করে ওঠে। 

ভালোবাসা দিবসের সঙ্গে পহেলা ফাল্কগ্দুন তথা বসন্তের কালগত নৈকট্য কাকতাল মাত্র। কারণ কয়েক বছর আগেও এ দেশে এ দিবসটির তেমন তাৎপর্য ছিল না। আশির দশকে এ দিনটি স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস হিসেবেই বাংলাদেশে বেশি পালিত হতো। কিন্তু নব্বইয়ের মাঝামাঝি কাল থেকে বিশ্ব রাজনীতি, অর্থনীতি ও সংস্কৃতির পট পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে এবং আকাশ-সংস্কৃতির প্রভাবে বাংলাদেশেও ১৪ ফেব্রুয়ারি ভালোবাসা দিবস হিসেবে উদযাপিত হতে থাকে। সম্প্রতি তা বিশেষত তরুণ-তরুণীদের কাছে অবশ্য পালনীয় হয়ে উঠেছে।

গত কয়েক দিন ধরে নগরীর বিভিন্ন বিপণিবিতানে ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে তরুণ-তরুণীদের বিভিন্ন কার্ড, শোপিসসহ নানা উপহারসামগ্রী কিনতে দেখা গেছে। জনপ্রিয় কার্ড ও উপহারসামগ্রী বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান আর্চিস গ্যালারি ও হলমার্কের শোরুমে গিয়ে দেখা যায়, এ দিবস উপলক্ষে বিপণনের জন্য বিভিন্ন কার্ডসহ নানা উপহারসামগ্রী সাজিয়ে রাখা হয়েছে। রাজধানীর আরও কয়েকটি বিপণিবিতানেও এ ধরনের কয়েকটি দোকানে তরুণ-তরুণীর ভিড় দেখা গেছে। বিক্রেতারা জানান, দিবসটি ঘিরে প্রচুর কার্ড ও উপহারসামগ্রী বিক্রি হচ্ছে। এসব কার্ড বা উপহারসামগ্রী দূরের প্রিয়জনের কাছে পৌঁছানোর জন্য অনেককে পোস্ট অফিস ও কুরিয়ার সার্ভিস প্রতিষ্ঠানেও ভিড় করতে দেখা গেছে। 

ভালোবাসা দিবসের ইতিহাস খুঁজতে গেলে পাওয়া যায় অনেক কাহিনী। সবচেয়ে প্রচলিত কাহিনী হচ্ছে রোমান একজন ক্রিশ্চিয়ান পাদ্রিকে ঘিরে। তার নাম সেইন্ট ভ্যালেন্টাইন। এই পাদ্রি চিকিৎসকও ছিলেন। খ্রিষ্টধর্ম প্রচারের অভিযোগে ২৭০ খ্রিষ্টাব্দে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেন রোমের দ্বিতীয় ক্লডিয়াস। তিনি যখন কারাগারে বন্দি ছিলেন, তখন ছোট ছেলেমেয়েরা তাকে ভালোবাসার কথা জানিয়ে জানালা দিয়ে চিঠি ছুড়ে দিত। কারাগারে বন্দি অবস্থায় চিকিৎসা করে জেলারের মেয়ের দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দেন এই সেইন্ট ভ্যালেন্টাইন। চিকিৎসার সময় মেয়েটির সঙ্গে নিবিড় সখ্য গড়ে ওঠে তার। মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার আগে মেয়েটিকে তিনি যে চিঠি লেখেন, তার নিচে লেখা ছিল, 'ফ্রম ইওর ভ্যালেন্টাইন'। অনেকে মনে করেন, সেইন্ট ভ্যালেন্টাইনের নামানুসারেই প্রথম জুলিয়াস ৪৯৬ খ্রিষ্টাব্দে ১৪ ফেব্রুয়ারিকে 'সেইন্ট ভ্যালেন্টাইনস ডে' হিসেবে ঘোষণা করেন। ইতিহাসে আরও একজন ভ্যালেন্টাইন রয়েছেন। যুদ্ধের জন্য দক্ষ সৈনিক সংগ্রহের জন্য রোমান সম্রাট ক্লডিয়াস যুবকদের বিয়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। কিন্তু এ ভ্যালেন্টাইন নিয়ম ভঙ্গ করে প্রেম ও বিয়ে করেন। ফলে তার মৃত্যুদণ্ড হয়। 

পুরনো ধারণা মতে, ১৪ ফেব্রুয়ারি পাখিরা সঙ্গী বেছে নেয়। এ দিনটি তাই নিবেদনের সবচেয়ে উপযুক্ত দিবস। এদিন রোমানরা বাক্সের ভেতর নাম রেখে লটারি করে তাদের প্রিয়তম বা প্রিয়তমাকে বেছে নিতো। ১৭০০ সালের দিকে ইংরেজ নারীরা কাগজে তাদের পরিচিত পুরুষদের নাম লিখে কাদামাটি মিশিয়ে পানিতে ছুড়ে মারত। যার নাম সবার আগে ভেসে উঠত, সেই হতো প্রকৃত প্রিয়তম বা প্রিয়তমা।

আজ ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে বর্ণাঢ্য আনুষ্ঠানিকতা-অনানুষ্ঠানিকতায় ভালোবাসার উৎসবে মুখর হবে বাংলাদেশ সহ সারা বিশ্বের জনপদ। হাইটেকের ডিজিটাল সময়ে মুঠোফোনের মেসেজ বার্তা, ই-মেইল অথবা অনলাইনের চ্যাটিংয়ে পুঞ্জ পুঞ্জ পল্লবিত হয়ে উঠবে প্রেমকথার কিশলয়।

আজকের এই দিন সবার মন ভরে উঠুক অকৃতিম ভালোবাসয় এই কামনায় আবারও বলি, ভালোবাসা হল এমন একটি শ্বাস যাতে শুধু খাটে দুজনার বিশ্বাস এটি হল ছোট্ট সুখের বাসা তাইতো এর নাম রাখা হয়েছে ভালোবাসা।

Bootstrap Image Preview