প্রথম দফা প্রত্যাবাসনের জন্য তালিকাভুক্ত রোহিঙ্গাদের কেউ যদি স্বেচ্ছায় নিজ দেশ মিয়ানমারে ফিরতে চান, তবেই তাদের পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ আবুল কালাম।
তবে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর সরকারকে জানিয়েছে, তালিকাভুক্ত ওই রোহিঙ্গাদের কেউ বর্তমান পরিস্থিতিতে রাখাইনে ফিরে যেতে রাজি নয়। ফলে সব প্রস্তুতি নেওয়ার পরও বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রত্যাবাসন শুরুর বিষয়টি অনেকটাই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে চুক্তি অনুযায়ী, রোহিঙ্গাদের দেড়শ জনের প্রথম দলটিকে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম পয়েন্ট দিয়ে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তরের পরিকল্পনা ছিল।
কিন্তু প্রত্যাবাসন কমিশনার আবুল কালাম সকালে কক্সবাজারে নিজ কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে বলেন, 'যদি কেউ স্বেচ্ছায় যেতে চায় তাদের পাঠানো হবে। আমাদের সব প্রস্তুতি নেওয়া আছে। কেউ রাজি হলে আমরা দুপুর ১টার পর ঘুমধুমে ট্রানজিট ক্যাম্পে নিয়ে যাব।'
রোহিঙ্গাদের ফেরার বিষয়টি যে স্বেচ্ছায় হচ্ছে, তা নিশ্চিত করতে গত মঙ্গল ও বুধবার প্রত্যাবাসনের তালিকায় থাকা প্রথম ৫০টি পরিবারের সাক্ষাৎকার নেয় ইউএনএইচসিআর। তাদের প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশন বুধবার রাতে তা ঢাকায় পাঠায় সিদ্ধান্তের জন্য।
ওই প্রতিবেদনে ইউএনএইচসিআরের মতামত সম্পর্কে প্রত্যাবাসন কমিশনার আবুল কালাম বলেন, 'তারা বলেছে, ওই তালিকায় থাকা একজনও বর্তমান পরিস্থিতিতে মিয়ানমারে ফিরে যেতে রাজি নয়। জোর করে কাউকে ফেরত পাঠানো ঠিক হবে না।'
এই অবস্থায় সরকার কী পদক্ষেপ নিচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “যদি কেউ স্বেচ্ছায় যেতে চায় তাকেই আমরা পাঠাব। আমরা ইতোমধ্যে ক্যাম্পে আমাদের মেসেজ পৌঁছে দিয়েছি। সব প্রস্তুতির কথা তাদের জানিয়েছি। এখন দেখি তাদের কেউ রাজি হয় কি না। আমরা আশা ছাড়তে চাই না।'
প্রত্যাবাসন কমিশনার আবুল কালাম জানান, মিয়ানমারও তাদের অংশে প্রত্যাবাসনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে বলে জানিয়েছে। তাদের একজনন মন্ত্রীও রোহিঙ্গাদের প্রথম দলটিকে ফিরিয়ে নিতে সীমান্তে আসবেন বলে জানানো হয়েছে।