Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৪ বুধবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১০ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

চলছে আসন ভাগাভাগির হিসাব-নিকাশ; সর্বোচ্চ ৬০ আসন ছাড়তে পারে বিএনপি

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৫ নভেম্বর ২০১৮, ১০:৪৪ AM
আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০১৮, ১০:৪৪ AM

bdmorning Image Preview


আন্দোলনের অংশ হিসেবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোট। দেশে ‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের’ লক্ষ্যে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টওনির্বাচনে অংশ নিবে। এ দুটি রাজনৈতিক মোর্চার প্রধান শরিক রাজপথের বিরোধী দল বিএনপি।

গত সপ্তাহে নির্বাচনে অংশ নেয়ার ঘোষণা দেয়ার পর জোটের শরিক দলগুলোর মধ্যে আসন ভাগাভাগির হিসাব-নিকাশ পুরোদমে শুরু হয়ে গেছে। ঐক্যফ্রন্ট ও ২০-দলীয় জোটের বেশ কয়েকটি দল প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করে প্রধান শরিক বিএনপির কাছে জমা দিয়েছে।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলের বিভিন্ন নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিএনপির কাছ থেকে তারা শতাধিক আসন দাবি করেছেন।

জোটের শরিক দলগুলো যেসব আসন দাবি করেছে, সেগুলোর কোনো কোনোটিতে বিএনপির হেভিওয়েট প্রার্থীও রয়েছেন। শুধু তাই নয়, জোটের একাধিক দলের হেভিওয়েট প্রার্থীও আছেন একই আসনে।

এসব নিয়ে কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি হওয়া লাগতে পারে এক দশক ধরে নির্বাচনী রাজনীতির বাইরে থাকা বিএনপিকে। আসন ভাগাভাগিতে জোট ও ফ্রন্টের শরিকদের ছাড় দিতে গিয়ে দলের পোড় খাওয়া নেতাদের কিভাবে সামাল দেবেন, এটিই এখন বিএনপির নীতিনির্ধারকদের বড় মাথাব্যথার কারণ।

বিএনপির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক নেতা জানিয়েছেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দল শতাধিক আসন দাবি করলেও তারা সর্বোচ্চ ৫০-৬০ আসন ছাড়তে পারেন।

যেসব আসনে বিএনপির এবং জোটের একাধিক হেভিওয়েট প্রার্থী রয়েছেন, সেখানে অপেক্ষাকৃত গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিকে মনোনয়ন দেয়া হতে পারে। জোটকে ম্যানেজ করা না গেলে ওইসব আসনে বিএনপির প্রার্থীকে বসিয়ে দেয়া হতে পারে।

বিএনপির নীতিনির্ধারকরা দুই জোটের শরিকদের আসন বণ্টন নিয়ে হিসাব-নিকাশ করছেন। তারা ঐক্যফ্রন্ট ও ২০-দলীয় জোটের শরিকদের ৫০-৬০ আসন ছাড়তে চান। এর মধ্যে জামায়াতকে ২০ আসন ছাড়া হতে পারে বলে জানা গেছে।

বিএনপির সূত্র জানায়, ২০ দলের শরিক জামায়াতে ইসলামী একাই ৬০ আসন চায়। এর পরের চাহিদা অলি আহমেদের নেতৃত্বাধীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি)। তারা বিএনপির কাছে ইতিমধ্যে ৩০ আসনের জন্য একটি তালিকা দিয়েছে।

বিএনপি উচ্চপর্যায়ের সূত্রে জানা যায়, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের দলগুলোর মধ্যে গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেনকে ঢাকা-১০, সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টুকে ঢাকা-৭ ও নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরীকে ঢাকা-৬ আসনে প্রার্থী করার চিন্তাভাবনা চলছে।

তবে গণফোরাম সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু চাচ্ছেন ঢাকা জেলার দুটি আসনে নির্বাচন করতে। ওই দুটি আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান।

এদিকে কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগের বঙ্গবীর আবদুল কাদের সিদ্দিকীর চাওয়া অন্তত তিন আসন। এর মধ্যে টাঙ্গাইলে দুটি ও গাজীপুরের একটি আসনে নির্বাচন করতে চাইছে তার দল।

টাঙ্গাইলের (৪ ও ৮) আসনের একটিতে কাদের সিদ্দিকীকে প্রার্থী করা হতে পারে। তার ছোট ভাই মুরাদ সিদ্দিকী চাচ্ছেন গাজীপুর-৩ আসন থেকে নির্বাচন করতে। আর বিশিষ্ট আইনজীবী শাহদীন মালিক জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার ব্যানারে সিলেট-১ আসন থেকে নির্বাচন করতে পারেন বলে জানা গেছে।

জোটসূত্রে জানা গেছে, ২০–দলীয় জোট ও ঐক্যফ্রন্টের শরিক দলগুলো যার যার মতো করে নিজেদের চাহিদার তালিকা তৈরি করছে, যা বিএনপিসংশ্লিষ্ট নেতাদের হাতে দিচ্ছে।

এর মধ্যে শরিক দলগুলোর মধ্যে যোগ্য প্রার্থী কে কোন আসনে আছেন, সে বিষয়ে বিএনপিও খোঁজখবর নিচ্ছেন। দু–এক দিনের মধ্যে এ নিয়ে শরিকদের সঙ্গে বিএনপি আলাদাভাবে বসবে।

২০–দলীয় জোটের আটটি দল নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত। বাকি অনিবন্ধিত দলগুলোর দু–একজন নেতাকে নিয়েও চিন্তাভাবনা আছে বলে জানা গেছে।

গত মঙ্গলবার জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠক হয়। তাতে আসন সমঝোতা নিয়ে আলোচনা হয়েছে কিনা, বৈঠক শেষে এ নিয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন। জবাবে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এ বিষয়ে আরও পরে আলোচনা হবে।

Bootstrap Image Preview