Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৮ বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৫ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

মানবতাবিরোধী অপরাধে লিয়াকত-রজবের মৃত্যুদণ্ড

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫ নভেম্বর ২০১৮, ০২:১৪ PM
আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০১৮, ০২:১৪ PM

bdmorning Image Preview


একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় হবিগঞ্জের লাখাই থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মো. লিয়াকত আলী এবং কিশোরগঞ্জের আমিনুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ রায় ঘোষণা করেন।

রায়ের সময় আদালতে ছিলেন চিফ প্রসিকিউটর গোলাম আরিফ টিপু, প্রসিকিউটর রানা দাশগুপ্ত, জেয়াদ আল মালুম, সুলতান মাহমুদ সীমন ও মোখলেসুর রহমান বাদল।

পরে রানা দাশগুপ্ত বলেন, প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে প্রতিটি অভিযোগকে সন্দেহতীতভাবে প্রমাণ করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে অভিযোগের যে গুরুত্ব, প্রতিটি অভিযোগে এ দু’জন আসামির প্রত্যেককে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যু না হওয়া পর‌্যন্ত এ দণ্ড অব্যাহত থাকবে।

এর আগে গত ১৬ আগস্ট শুনানি শেষে এ মামলার রায় ঘোষণার জন্য অপেক্ষমান (সিএভি) রেখেছিলেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এরপর রোববার রায়ের জন্য সোমবার দিন ধার‌্য করেন।

২০১৬ সালের ১ নভেম্বর ওই দু’জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ দিয়েছিলেন ট্রাইব্যুনাল।

২০১৫ সালের ২৭ ডিসেম্বর মামলার তদন্ত শেষ করার পর তা চূড়ান্তভাবে প্রকাশ করেন তদন্ত সংস্থা। এরপর ১৮ মে দু’জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন ট্রাইব্যুনাল। কিন্তু তারা এখনো পলাতক।

এই দু’জনের বিরুদ্ধে একাত্তরে হবিগঞ্জের লাখাই থানা, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর থানা ও কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম থানা এলাকায় গণহত্যা, হত্যা, অপহরণ, আটক, নির্যাতন ও লুটপাটের সাতটি অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। এ মামলার তদন্ত করেছেন মো. নূর হোসেন।

দুই রাজাকারের পরিচয়
১৯৭১ সালে লিয়াকত আলী ব্রাহ্মণবাড়িয়া কলেজের ছাত্র ছিলেন। যুদ্ধের সময় তিনি মুসলিম লীগের সদস্য হিসেবে ফান্দাউক ইউনিয়নে রাজাকারের দায়িত্বে ছিলেন। স্বাধীনতার পরে এসে তিনি লাখাই থানা আওয়ামী লীগের সভাপতিও হয়েছিলেন।

অন্যদিকে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম থানার আলীনগরর গ্রামের রজব আলী ভৈরব হাজী হাসতম আলী কলেজে একাদশ শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় ইসলামী ছাত্র সংঘের কলেজ শাখার সভাপতি ছিলেন। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ভৈরবে পাকিস্তানি সেনাক্যাম্পে অস্ত্র প্রশিক্ষণ নিয়ে রজব আলী এলাকায় আল বদর বাহিনী গঠন করেন। স্বাধীনের পর ১৯৭২ সালে তার বিরুদ্ধে দালাল আইনে তিনটি মামলা হয় এবং ওইসব মামলার বিচারে তার যাবজ্জীবন সাজা হয়। 

১৯৮১ সালে রজব ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্ত হন। এরপর তিনি ‘আমি আল বদর বলছি’ নামে একটি বই প্রকাশ করেন।
 
তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ

এক. ১৯৭১ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর লিয়াকত ও রজব রাজাকার এবং পাকিস্তানি সেনাদের নিয়ে লাখাই থানার কৃষ্ণপুর গ্রামে অভিযান চালিয়ে গণহত্যা ও লুটপাট চালিয়ে কৃষ্ণপুর গ্রামে নৃপেন রায়ের বাড়িতে রাধিকা মোহন রায় ও সুনীল শর্মাসহ ১৫ জন জ্ঞাত ও ২৮ জন অজ্ঞাত হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকদের গুলি করে হত্যা করেন।  একই এলাকার চণ্ডিপুর ও গদাইনগর গ্রামে গণহত্যা ও লুটপাট করেছেন তারা।  অষ্টগ্রাম থানার সদানগর গ্রামে শ্মশানঘাটে হত্যাকাণ্ড চালান তারা।  ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর থানার ফান্দাউক গ্রামের বাচ্চু মিয়াকে অপহরণ এবং রঙ্গু মিয়াকে অপহরণ ও হত্যা করেছেন তারা।

Bootstrap Image Preview