Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ শুক্রবার, মার্চ ২০২৪ | ১৪ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

৭ লাখ খরচ করে পানি বিক্রি করতে হবে ভাবেননি জলিল!

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ৩১ অক্টোবর ২০১৮, ০৫:৪৬ PM
আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০১৮, ০৫:৪৬ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত


এতো টাকা খরচ করে সৌদি এসে এখন রাস্তায় রাস্তায় হকারি করে পানি বিক্রি করতে হবে তা কখনো ভাবিনি। কাঁদতে কাঁদতে কথাগুলো বলছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আব্দুল জলিল।

জানা যায়, সংসারের সচ্ছলতার জন্য এলাকার পরিচিত একজনের মাধ্যমে ভিসা সংগ্রহ করে চলতি বছর সৌদি আরবে পাড়ি জমান আব্দুল জলিল। সৌদি এসে দেখেন যার মাধ্যমে তিনি এসেছেন তার নিজেরও কাজ নেই।

প্রবাসি এ বাংলাদেশি বলেন, সৌদি আসার আগে ভেবেছিলাম, দুই বছর কষ্ট করে কাজ করলে সব ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু সৌদি এসে হিতে বিপরীত হয়েছে। কোনো কাজ নেই, বাড়িতে টাকা-পয়সা পাঠানো যাচ্ছে না। পরিবার-পরিজন অনাহারে-অর্ধহারে দিন পার করছে। নিজের কষ্টের কথা বাদই দিলাম।

আব্দুল জলিল জানান, নিজের কাছে কখনও এতো টাকা ছিল না। ব্যাংকেও কোনো টাকা জমা ছিল না। চড়া সুদে লোন নিয়ে, জমি বন্ধক রেখে এবং বাড়ির শেষ সম্বল একটি গরু বিক্রি করে বহু কষ্টে সমুদয় অর্থ জোগাড় করেছেন। আর এখানে এসে এখন রোদে পুড়ে পানি বিক্রি করছেন।

আব্দুল জলিলের মতো এমন শত শত প্রবাসী রয়েছেন, যাদের ইকামা নেই। কিন্তু সবাই ছয়-সাত লাখ টাকা খরচ করে নিজের ও পরিবারের সুন্দর জীবনের আশায় সৌদি আরব এসেছেন।

তিনি আরও বলেন, সৌদিতে নতুন যারা আসছেন তারা তো বেকার থাকছেনই, পুরনো অনেকেই বেকার জীবন-যাপন করছেন দেশটির নানা নিয়ম-কানুনে। শেষমেষ কোনো উপায় না পেয়ে অনেকে বাধ্য হয়ে পুলিশের কাছে ধরা দিয়ে দেশে ফিরে আসছেন।

জলিল আরও বলেন, ‘নিজের তো কিছু করতে হবে। কেউ তো বসায় বসায় এখানে খাওয়াবে না। এ কারণে বাধ্য হয়ে রাস্তায় হকারি শুরু করি। প্রচণ্ড রোদের মধ্যে হয় পানির বোতল, না হয় দৈনন্দিন বিভিন্ন উপকরণ বিক্রি করি। যা প্রবাসী বাংলাদেশিরা কিনে নেন।

সৌদি আসার পর ইকামা (ভিসা ঠিক রেখে নিয়োগকর্তা পরিবর্তন) ও কাজ না পেলেও ভিসা প্রদানকারীকে তেমন চাপ দেননি তিনি। শুধু ইকামার জন্য বেশ কয়েকবার তাগাদা দিয়েছেন। কয়েক মাস পর জলিল জানতে পারেন, কোনো কারণে কফিলের কম্পিউটার রেড হয়ে আছে। এ কারণে ইকামাও হবে না।

শুধু জলিল নয়, তার মতো শত শত প্রবাসী বাংলাদেশি না জেনে ও বুঝে সৌদি এসে সবকিছু হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়ছেন। দেশে ফিরে সুদের টাকা পরিশোধ করতে না পেরে অনেকে আত্মহননের পথও বেছে নিচ্ছেন। আর যারা সৌদি আরবে থেকে যাচ্ছেন তারা বাধ্য হয়ে অনেক নিম্নমানের কাজ করছেন, যা তারা দেশে থাকতে কখনও চিন্তা করেননি। আবার দেশটিতে এসব কাজের কোনো অনুমতিও নেই। ধরা পড়লে সোজা জেল।

Bootstrap Image Preview