Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৯ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

খাশোগিকে হত্যায় তুরস্কে উড়ে এসেছিল ১৫ সদস্যের ‘কিলিং স্কোয়াড’!

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৭ অক্টোবর ২০১৮, ০৫:১৩ PM
আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০১৮, ০৫:১৩ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


সাংবাদিক জামাল খাশোগি নিখোঁজ ও হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক সন্দেহভাজন খুনীর সঙ্গে সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের (এমবিএস) ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে।

মঙ্গলবার মার্কিন প্রভাবশালী দৈনিক নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সৌদির প্রতাপশালী যুবরাজ এমবিএসের ঘনিষ্ঠ এক সহচরকে সাংবাদিক জামাল খাশোগির খুনের সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়েছে বলে দাবি করেছে তুরস্ক।

খাশোগি নিখোঁজ এবং খুনের ঘটনার সঙ্গে ‘দুর্বৃত্ত খুনীরা’ জড়িত থাকতে পারে বলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছিলেন। কিন্তু এখন ট্রাম্পের সেই দাবি নিয়েও সন্দেহ তৈরি হয়েছে।

নিউইয়র্ক টাইমস তুর্কি সূত্রের বরাত দিয়ে বলছে, যুবরাজ সালমানের নিরাপত্তায় নিয়োজিত বিশেষবাহিনীর আরো তিন সদস্য ও সৌদির উচু স্তরের এক ফরেনসিক চিকিৎসকও এই হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয়।

গত ২ অক্টোবর তুরস্কের ইস্তান্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে প্রবেশের পর থেকে নিখোঁজ রয়েছেন সৌদি রাজপরিবারের কট্টর সমালোচক ও সাংবাদিক জামাল খাশোগি। সৌদি আরব ও তুরস্কের তদন্তকারীরা ইতোমধ্যে কনস্যুলেটে তদন্ত চালিয়েছেন।

নিউইয়র্ক টাইমস বলছে, তুর্কি ওই সূত্র নিশ্চিত করে বলেছে, ১৫ জনের কিলিং স্কোয়াডের মধ্যে অন্তত ৯ জন সৌদি নিরাপত্তাবাহিনী, সেনাবাহিনী অথবা দেশটির বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সদস্য।

মার্কিন এই সংবাদমাধ্যম বলছে, ফেস শনাক্তকারী সফটওয়্যার, সৌদি আরবের মোবাইল ফোন নম্বরের তথ্য-উপাত্ত ও ফাঁস হওয়া সৌদি বিভিন্ন নথি-পত্র, প্রত্যক্ষদর্শী ও গণমাধ্যমের সহায়তায় ঘাতকদের ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে তুরস্ক।

তুরস্কের সরকারি সূত্রগুলো বলছে, দেশটির পুলিশের ধারণা সৌদি ওই সাংবাদিককে কনস্যুলেট ভবনেই হত্যা করা হয়েছে। আর এই হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয়ার জন্য সৌদি থেকে তুরস্কে উড়ে এসেছিল ১৫ সদস্যের বিশেষ কিলিং স্কোয়াড। এদিকে, সৌদি আরব বলছে, কনস্যুলেটে কাজ শেষে নিরাপদে বেরিয়ে গেছেন সাংবাদিক জামালা খাশোগি।

সন্দেহভাজন ঘাতকদের একজন মাহের আব্দুল আজিজ মুতরেব। ২০০৭ সালে লন্ডনে নিযুক্ত সৌদি দূতাবাসে কূটনৈতিক হিসেবে কাজ করেছিলেন তিনি। নিউইয়র্ক টাইমস বলছে, সম্প্রতি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের মাদ্রিদ থেকে প্যারিস সফরের সময় তার বডিগার্ড হিসেবে দেখা গেছে মুতরেবকে। যুবরাজের সঙ্গে বিমানে উঠতে এবং নামতে দেখা যায় মুতরেব। এ ঘটনার ছবি আছে তাদের কাছে।

যুক্তরাষ্ট্রের হাস্টন, বোস্টন ও জাতিসংঘের সদর দফতরে সফরের সময়ও যুবরাজের পাশে দাঁড়িয়ে থাকে দেখা যায় মুতরেবকে।

নিউইয়র্ক টাইমস বলছে, অন্য তিনি সন্দেহভাজন হলেন আব্দুল আজিজ মোহাম্মদ আল-হাসায়ি, থার গালিব আল-হার্বি ও মোহাম্মদ সাদ আলজাহরানি। এই তিনজনই সৌদি যুবরাজের নিরাপত্তায় নিয়োজিত বিশেষবাহিনীর সদস্য।

মার্কিন এই দৈনিক বলছে, সৌদি রয়্যাল গার্ডের সদস্য তালিকায় আল-হার্বি ও আলজাহরানির নাম পাওয়া গেছে। পঞ্চম সন্দেহভাজন হলেন, সৌদি আরবের ময়নাতদন্তকারী বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সালাহ আল-তুবাইজি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে তার অ্যাকাউন্টে সৌদি সায়েন্টিফিক কাউন্সিল অব ফরেনসিকের প্রধান হিসেবে পরিচয় দেয়া আছে।

নিউইয়র্ক টাইমস বলছে, সৌদি আরবের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও দেশটির শীর্ষস্থানীয় মেডিক্যাল স্কুলগুলোর শীর্ষ পদেও আছেন এই চিকিৎসক।

মঙ্গলবার পৃথক এক প্রতিবেদনে মার্কিন আরেক প্রভাবশালী দৈনিক ওয়াশিংটন পোস্ট বলছে, তুরস্ক সন্দেহভাজন হিসেবে যে ১৫ সৌদি নাগরিককে খাশোগির হত্যাকারী হিসেবে দাবি করেছে; তাদের মধ্যে অন্তত ১১ জন সৌদি গোয়েন্দা বাহিনীর ও বাকিরা সৌদি রয়্যাল গার্ডের সদস্য। 

এর আগে দুটি সূত্রের বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন এক প্রতিবেদনে জানায়, জিজ্ঞাসাবাদের সময় খাশোগি মারা গেছেন; এমন স্বীকারোক্তি দিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রস্তুত করছে সৌদি আরব।

Bootstrap Image Preview