Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ শুক্রবার, মার্চ ২০২৪ | ১৫ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

খাশোগি হত্যা নিয়ে নতুন তথ্য, সৌদি স্বীকারোক্তির প্রস্তুতি

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৬ অক্টোবর ২০১৮, ১০:১৭ AM
আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০১৮, ১০:১৭ AM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


সৌদির খ্যাতনামা সাংবাদিক জামাল খাশোগি নিখোঁজের পর থেকেই নানা গুঞ্জন চলছে। তুরস্কের দাবি, খাশোগিকে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু সৌদি এ ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছিল। কিন্তু এবার স্বীকারোক্তিমূলক প্রতিবেদন তৈরি করছে সৌদি যেখানে বলা হচ্ছে, জিজ্ঞাসাবাদের সময় মৃত্যু হয়েছে খাশোগির। একটি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

দু'টি সূত্র বলছে, খাশোগিকে জিজ্ঞাসাবাদের প্রক্রিয়া খারাপ দিকে গেছে। জিজ্ঞাসাবাদের সময় তার মৃত্যু হয়েছে। তুরস্কের সৌদি কনস্যুলেট থেকে তার নিখোঁজ হওয়ার ঘটনাকে এভাবেই ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছে সৌদি।

সৌদি রাজতন্ত্রের ঘোর বিরোধিতাকারী খাশোগি ২০১৭ সাল থেকে আমেরিকায় স্বেচ্ছা-নির্বাসিত জীবন কাটাচ্ছিলেন। সরকার বিরোধীদের বিরুদ্ধে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মাদ বিন সালমান ব্যাপক ধরপাকড় অভিযান শুরু করার পর তিনি যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান।

এরপর গত ২ অক্টোবর জামাল খাশোগি ইস্তাম্বুলস্থ সৌদি কনস্যুলেটে প্রবেশ করে আর বের হননি। সে সময় তুর্কির নিরাপত্তা সূত্রগুলো দাবি করেছিল যে, খাশোগিকে কনস্যুলেটের মধ্যে হত্যা করে তার লাশ টুকরা টুকরা করে ওই কূটনৈতিক মিশন থেকে সরিয়ে ফেলা হয়েছে।

ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে নিহত সাংবাদিক জামাল খাশোগির অন্তর্ধানের বিষয়ে নতুন তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।

তুরস্কের দায়িত্বরত কর্মকর্তারা বলেন আমাদের হাতে থাকা অডিও বার্তা ইঙ্গিত করে ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটেই খাশোগিকে হত্যা করা হয়েছে। তুরস্ক সরকারি মুখপাত্র উদ্ধৃতি দিয়ে আলজাজিরা এসব তথ্য জানায়।

তুরস্কের সরকারি কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে জানায়, ২ অক্টোবর সাংবাদিক জামাল খাশোগি কনস্যুলেটে ঢোকার আগে রেকর্ড অন করেছিলেন। যা অ্যাপলের হাতঘড়ি থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে।

অপরদিকে সৌদির দাবি ছিল, খাশোগি তার কাজ শেষ করে কনস্যুলেট থেকে বেরিয়ে গেছেন। কিন্তু ওই ভবনের বাইরের সিসিটিভি ফুটেজে খাশোগিকে ভেতরে প্রবেশ করতে দেখা গেলেও তাকে বাইরে বের হতে দেখা যায়নি।

একটি সূত্র বলছে, ওই প্রতিবেদনটি এভাবে শেষ করা হতে পারে যে, তদন্ত প্রক্রিয়া কোন ধরনের সাফাই বা স্বচ্ছতা ছাড়াই সম্পন্ন হয়েছে। যারা এর সঙ্গে জড়িত ছিলেন তাদের ওপর এর দায় আনা হবে।

অন্য একটি সূত্র বলছে, স্বীকারোক্তিমূলক ওই প্রতিবেদনটি এখনও প্রস্তুতাধীন রয়েছে। এক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বণ করা হচ্ছে কারণ অনেক কিছুই পরিবর্তন হতে পারে।

ওয়াশিংটন পোস্টের ওই কলামিস্টকে সর্বশেষ সৌদি কনস্যুলেটে প্রবেশ করতে দেখা গিয়েছিল। গত ২ অক্টোবরের পর তাকে তার জনসম্মুখে দেখা যায়নি। সৌদি কর্তৃপক্ষ প্রথমে বলেছিল যে, খাশোগি ওই কনস্যুলেট থেকে বেরিয়ে গেছেন। কিন্তু এ বিষয়ে তারা কোন প্রমাণ দেখাতে পারেননি।

খাশোগির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল হাতিস চেঙ্গিজ নামে একজন তুর্কী নারীর। তাদের বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। হাতিসকে নিয়েই ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেট ভবনে গিয়েছিলেন খাশোগি। হাতিস বাইরে অপেক্ষা করতে থাকেন এবং খাশোগি কনস্যুলেটের ভেতরে যান। কিন্তু দুই ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে অপেক্ষার পরেও ফিরে আসেননি খাশোগি।

খাশোগির নিখোঁজের ঘটনা সৌদির সঙ্গে পশ্চিমা দেশগুলোর কূটনৈতিক সম্পর্কে চিড় ধরতে শুরু করেছে। এই ঘটনা তুরস্ক এবং সৌদির মধ্যেও বৈরী সম্পর্ক ডেকে এনেছে। তার নিখোঁজের ঘটনা তদন্তের উদ্দেশে ইতোমধ্যেই সৌদির একটি প্রতিনিধি দল তুরস্কে অবস্থান করছে। দু'দেশ মিলে যৌথভাবে এই তদন্ত কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু তুরস্ক বলছে, সৌদির প্রতিনিধিরা সহযোগিতা করতে ব্যর্থ হয়েছে।

তুর্কি কর্তৃপক্ষ এর আগে বলেছিল যে, খাশোগি হত্যায় সৌদির ১৫ জন নাগরিক জড়িত ছিল। তারা অক্টোবরের দুই তারিখেই ইস্তাম্বুলে এসেছিল। তাদের অনেককেই বিভিন্ন সময়ে সৌদি সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের ব্যক্তিদের সঙ্গে দেখা গেছে।

Bootstrap Image Preview