বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন বলেছেন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সকল আসামিকে সুপ্রিম কোর্টে আপিলের মাধ্যমে খালাস করানো হবে।
বুধবার দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে এক বিক্ষোভ মিছিল শেষে এসব কথা বলেন জয়নুল আবেদীন।
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ের পর তিনি বলেন, আশা করি তারেক রহমান এবং যাদেরকে এ মামলায় মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে সকল আসামিকে আমরা খালাস করাতে সক্ষম হব।
তিনি বলেন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার সাক্ষী ছিলেন আজকের প্রধানমন্ত্রী (শেখ হাসিনা)। প্রাথমিকভাবে (সাক্ষ্যে) বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মুফতি হান্নান ও তারেক রহমানের নাম বলেননি। মুফতি হান্নান ও প্রধানমন্ত্রী সাক্ষীতে তারেকের নাম বললে বুঝতাম তার সম্পৃক্ততা রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ৪১০ দিন মুফতি হান্নানকে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। অথচ আমাদের আইনে আছে একটি মামলায় ১৫ দিনের বেশি কাউকে রিমান্ডে নেওয়া যাবে না। কিন্তু মুফতি হান্নানকে ৪১০ দিন রিমান্ডে রেখে অমানুষিক নির্যাতন করে তারেক রহমানের নাম বলানো হয়েছে। যদিও তারেক রহমানের কোনো সম্পৃক্ততা এখানে ছিল না।
জয়নুল আবেদীন আরও বলেন, একদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তারেক রহমানের নাম বলেননি (সাক্ষ্যে) অন্যদিকে তিনি সাক্ষ্য দিতে আদালতেও যাননি। তাই এই মামলায় তারেক রহমানকে যাবজ্জীবন সাজা দেওয়ার কিছু নেই। আরেকটি বিষয় হচ্ছে, মুফতি হান্নানের ১৬৪ ধারায় যে জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে তার উপর ভিত্তি করে বিএনপির অনেককে সাজা দেওয়া হয়েছে। লুৎফুজ্জামান বাবর, পিন্টুকে সম্পৃক্ত করা হয়েছে। সেই ১৬৪ ধারার জবানবন্দি আদালতে না দেওয়া পর্যন্ত তাদের সাজা হতে পারে না। তাই এই সাজা হয়েছে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে।
জয়নুল বলেন, এই মামলায় তারেক রহমানসহ যাদেরকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে আমরা আশা করি আপিল করে তাদের সবাইকে খালাস করাতে সক্ষম হব।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, এই সরকার আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে তাদেরকে সাজা দিয়েছে, অথচ মামলায় সাজা দেওয়ার মতো কোনো কিছুই ছিল না। একদিকে তারা আদালতকে ব্যবহার করেছে, অন্যদিকে নির্বাচনকে প্রভাবিত করার জন্য সারা বাংলাদেশে একটি নৈরাজ্যকর অবস্থা সৃষ্টির চেষ্টা করেছে।
উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগের সমাবেশে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন বিশেষ ট্রাইব্যুনাল। এ ছাড়া বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন। ৪৯ আসামির মধ্যে বাকি ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়েছে।
আজ বুধবার রাজধানীর নাজিমুদ্দিন রোডে পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারের পাশে স্থাপিত ঢাকার ১ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিনের আদালত এ রায় দেন। আসামিদের সাজা কারাবাসকালীন সময় থেকে বাদ যাবে। এবং যেসব আসামি দুই মামলায় সাজা পেয়েছেন তাদের একযোগে দণ্ড কার্যকর হবে।