বুলগেরিয়ায় একটি টেলিভিশন চ্যানেলের এক অনুসন্ধানী নারী সাংবাদিককে ধর্ষণের পর নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। রোববার দেশটির কর্মকর্তারা জানান, ৩০ বছর বয়সি ভিক্টোরিয়া ম্যারিনোভা নামের ওই সাংবাদিকের লাশ শনিবার দেশের উত্তরের রিউজ শহরের একটি পার্ক থেকে উদ্ধার করা হয়।
রুসের আঞ্চলিক কৌঁসুলি জর্জি জর্জিয়েভ রোববার বলেন, মারিনোভার মোবাইল ফোন, গাড়ির চাবি, চশমা এবং তার শরীরের কিছু অংশে কাপড় ছিল না। তিনি বলেন, মারিনোভাকে মাথায় আঘাত ও দমবন্ধ করে হত্যা করা হয়েছে।
বুলগেরিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ম্লাদেন মারিনভ জানান, এই নারী সাংবাদিক ধর্ষণেরও শিকার হয়েছেন।
এদিকে এই ধর্ষণ-হত্যার তদন্ত সফল হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী বয়কো বরিসভ। তিনি বলেন, প্রচুর ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করার কারণে অপরাধীদের খুঁজে বের করা সময়ের ব্যাপার মাত্র।
পুলিশ বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছে, এই ধর্ষণ-হত্যাকাণ্ডের পেছনে তার কাজের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই।
অর্গানাইজেশন ফর সিকিউরিটি অ্যান্ড কো-অপারেশন ইন ইউরোপ (ওএসসিই)-র গণমাধ্যম স্বাধীনতা প্রতিনিধি হারলেম দেসির মারিনোভার হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানিয়েছেন।
এক টুইট বার্তায় তিনি লিখেন, বুলগেরিয়ায় অনুসন্ধানী সাংবাদিক ভিক্টোরিয়া মারিনোভার ভয়াবহ হত্যাকাণ্ডে হতবুদ্ধ হয়ে গেছি। জরুরিভিত্তিতে পুরো ও পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তের আহ্বান জানাচ্ছি। অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।
রুসের একটি ছোট ব্যক্তিগত টেলিভিশন চ্যানেল টিভিএন-র একজন প্রশাসনিক পরিচালক ছিলেন মারিনোভা। সম্প্রতি তিনি ‘ডিটেক্টর’ নামে সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর টকশো চালু করেন।
গেল ৩০ সেপ্টেম্বর ওই টকশোর সবশেষ পর্বে অনুসন্ধানী সাংবাদিক দিমিতিার স্তোইয়ানভকে হাজির করেছিলেন মারিনোভা। স্তোইয়ানভ ইউরোপীয় ইউনিয়নের তহবিল দুর্নীতির সঙ্গে বড় বড় ব্যবসায়ী ও রাজনীতিকদের বিষয়ে তদন্ত করছিলেন।
প্রসিকিউটররা ঘটনাটি তদন্ত চালাচ্ছেন। নিহত সাংবাদিকের ব্যক্তিগত ও কর্মক্ষেত্রের সঙ্গে জড়িত সকল সম্ভাব্য সন্দেহভাজন ব্যক্তি ও বিষয় খতিয়ে দেখছে তারা।
প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হয়েছিল তাকে কেবল হত্যাই করা হয়েছে। পরবর্তীতে বুলগেরিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ম্লাদেন মারিনভ জানান, হত্যার আগে মারিনোভাকে ধর্ষণও করা হয়েছিল।