মাছে ভাতে বাঙালি এবং ইলিশ আমাদের সবচেয়ে প্রিয়। তারই স্বীকৃতিতে ইলিশকে বাংলাদেশের জাতীয় মাছ হিসেবে ঘোষণা করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান উল্লেখ করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ বলেন, ‘বাংলাদেশে পৃথিবীর প্রায় ৬৭ ভাগ ইলিশ উৎপাদিত হয়। আজ আমরা ইলিশ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ’।
পদক্ষেপ বাংলাদেশের আয়োজনে আন্তর্জাতিক ইলিশ, পর্যটন ও উন্নয়ন উৎসব ২০১৮ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর পূর্বাণী ইন্টারন্যাশনাল হোটেলে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আন্তর্জাতিক ইলিশ, পর্যটন ও উন্নয়ন উৎসবের আহ্বায়ক কবি আসাদ চৌধুরী। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন পদক্ষেপ বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক জান্নাতুন নিসা।
মন্ত্রী বলেন, ইলিশ হৃদরোগ ও হার্টের রোগের উপশম হিসেবে কাজ করে। এটি মেধা বিকাশে কাজ করে। তাই ইউরোপ আমেরিকায় মাংসের চেয়ে ইলিশ মাছের দিকে মানুষ বেশি ঝুঁকছেন। আজ থেকে দশ বছর আগে ইলিশের উৎপাদনের বেহাল দশা ছিল। আমাদের এ প্রিয় মাছ হারিয়ে যাওয়ার শঙ্কা ছিল। আজ সেই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আমরা ইলিশ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ।
তিনি আরও বলেন, এক সময় পদ্মায় ২ থেকে আড়াই কেজি ইলিশ পাওয়া যেতো। তা হারিয়ে যাওয়া বিস্ময়ের বিষয় ছিল। আগামী পহেলা অক্টোবরের ১ থেকে ২২ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন ইলিশ ধরা বন্ধ। গবেষণার উপর ভিত্তি করে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কেননা এই সময়টা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এ সময় জেলেদের ভর্তুকি হিসেবে ২২ দিন ২০ কেজি চাল দেওয়া হবে। যাতে এই সময়ে জেলেদের কষ্ট না হয়। গত ৯ বছরে ইলিশের উৎপাদন ৬৬ ভাগ বেড়েছে। বাজারে ওই সময় ইলিশ বিক্রি করা হবে না।
পদক্ষেপ বাংলাদেশের সভাপতি বাদল চৌধুরীর সূচনা বক্তব্যের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ডাক, তার ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সচিব শ্যামসুন্দর সিকদার বলেন, বাঙালি সংস্কৃতির একটি যোগসূত্র আছে। ইলিশ আমাদের দেশের পদ্মায়, মেঘনায় হয় কিন্তু বড় বড় ইলিশ আমরা খেতে পারি না। কারণ এটি একটি অর্থকরী সম্পদ। যার ফলে এর বিরাট অংশই চলে যায় দেশের বাইরে। ইলিশকে সংস্কৃতিতে নিয়ে আসা এটা অবশ্যই এটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ। এরকম আয়োজনের মাধ্যমে ইলিশের ব্যাপ্তি আরো বৃদ্ধি পাবে।
মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয়ের পরিচালক বলেন, ইলিশ আমাদের অহংকার। আমাদের ঐতিহ্য। আজ থেকে দশ বছর আগেও ইলিশের এত ভালো অবস্থা ছিল না। আমাদের জাতীয় মাছ হারিয়ে যেতে বসেছিল। আজকে শুধু ইলিশ না সব রকম ইলিশে স্বয়ংসম্পূর্ণ।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, সাংস্কৃতিক জোটের সভাপিতি গোলাম কুদ্দুছ, ফারুক হোসেন, শিশু সাহিত্যিক কাইজার হোসেন প্রমুখ। অনুষ্ঠানে বিদেশি অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অমৃত মাইতি, কাজল চক্রবতী, নীপা চক্রবতী প্রমুখ।