Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ শুক্রবার, মার্চ ২০২৪ | ১৫ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

লক্ষ্মীপুরের মেঘনা নদীতে ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে রূপালী ইলিশ

আবীর আকাশ, লক্ষ্মীপুর জেলা প্রতিনিধিঃ
প্রকাশিত: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৬:৫৭ PM
আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৬:৫৭ PM

bdmorning Image Preview


জ্যৈষ্ঠের শেষদিক থেকে আশ্বিন ইলিশের মৌসুম। আষাঢ়ে ভরা মৌসুমেও কাঙিক্ষত ইলিশের দেখা মেলেনি। একটু দেরিতে হলেও এখন দেখা মিলেছে রূপালি ইলিশের। দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর হাসি ফুটেছে মেঘনা পাড়ের জেলেদের মুখে। নদীতে ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে রূপালী ইলিশ। ইলিশ ধরাকে কেন্দ্র করে লক্ষ্মীপুরে মেঘনা নদীর গোটা উপকূলীয় এলাকার হাজার হাজার জেলে পরিবারে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। ব্যস্ত সময় পার করছেন আড়তদারসহ মৎস্য ব্যবসায়ীরা।

মাছ ঘাট গুলোতে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত অসংখ্য নারী পুরুষ দেখে মনে হয়, যেন এক জনস্রোত। যে জনস্রোত মূলত ইলিশ কেনার জন্য। দাম কম হওয়ায় সব সময় ভিড় থাকে ক্রেতাদের, তাই জেলার বৃহত্তম মতিরহাট মাছ ঘাট, আলেকজান্ডার মাছ ঘাট ও মজুচৌধুরীর হাট মাছ ঘাটে জোয়ার-ভাটার তালে তালে ২৪ ঘন্টাই কেনাবেচা চলে ইলিশের।

ঘাটের ব্যবসায়ীরা জানান, কিছুটা দেরিতে হলেও নদীতে এখন প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। এখন ৫'শ গ্রাম সাইজের প্রতি হালি (৪টি) ইলিশের দাম ৭-৮'শ টাকায়, ১কেজি সাইজের প্রতি হালি ২৪-২৫'শ টাকায়, জাটকার কেজি ১৮০-২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ৭ অক্টোবর থেকে ২২ দিনের জন্য ইলিশ ধরা বন্ধ থাকবে। তাই এ সুযোগে যে যা পারছে ইলিশ কিনে মজুদ করছে। দাম নাগালে থাকায় ইলিশ কিনে খুশি সাধারণ মানুষ।

লক্ষ্মীপুর সদর, কমলনগর, রামগতি ও রায়পুর উপজেলার মেঘনাপাড়ের সব কয়টি ঘাটে ইলিশ বেচা- কেনায় ক্রেতা-বিক্রেতার আগমনে মুখরিত থাকে ঘাট। সদর উপজেলার মজুচৌধুরীরহাট, কমলনগর উপজেলার মতিরহাট, বাত্তিরঘাট, কটরিয়া, লুধুয়া-ফলকন, রামগতি উপজেলার রামগতি ঘাট, টাংকীর ঘাট, আলেকজান্ডার সেন্টার খাল, রায়পুরের চরবংশী এবং চর আবাবিলের ঘাটে ইলিশ ক্রয়-বিক্রয় হয়। আবার লক্ষ্মীপুরের রামগতির আলেকজান্ডার থেকে চাঁদপুরের ষাটনল এলাকার ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত ছোট-বড় প্রায় ৩০টি মাছঘাটে জেলেরা মাছ বিক্রি করছেন। মেঘনা নদীর মাছের ওপর নির্ভরশীল জেলের সংখ্যা প্রায় এক লাখ হবে বলে দাবি জেলে সম্প্রদায়ের।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মৌসুমের শুরুতে ইলিশের দেখা না পেলেও এখন কাঙিক্ষত রূপালি ইলিশ ধরা পড়ায় হাসি ফুটে উঠেছে জেলে, আড়তদার ও মৎস্যজীবীদের মাঝে। তাই স্বরূপ ফিরেছে স্থানীয় মাছের ঘাট গুলো। জেলে, আড়তদার ও মাছ ব্যবসায়ীদের এখন দম ফেলার সময় নেই। কেউ ইলিশ মাছের ঝুড়ি টানছেন, কেউ প্যাকেট করছেন। আবার কেউ কেউ সেই প্যাকেট জেলাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠাতে তুলে দিচ্ছেন ট্রাকে। সব মিলিয়ে যেন আনন্দের জোয়ার বইছে।

অন্যদিকে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ায় ব্যস্ত সময় পার করছেন বরফ কলের শ্রমিকরাও। ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়ায় উপকূলীয় জেলে পল্লীগুলোত স্বস্তি ফিরেছে। মাছভর্তি যান্ত্রিক নৌযান কিংবা মাছ ধরার (ফিশিং) ট্রালার নিয়ে জেলেরা নদী থেকে হাসিমুখে ফিরছেন। আবার অনেকে মাছ ধরার জন্য ছুটছেন নদীতে।

মতিরহাট মাছ ঘাট এলাকার ট্রলার শ্রমিক বিল্লাল বলেন, ট্রলার সকালেই ঘাটে নোঙ্গর করেছি। সবসময় এরকম মাছ জালে ধরা পড়ে না। তবে এবারে যে মাছ পেয়েছি, তাতে আমরা খুশি।

আলেকজান্ডার মাছ ঘাটের আড়তদার ইয়াছিন আলি জানান, মেঘনা নদীতে জেলেদের জালে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ায় আনন্দের কমতি নেই। এভাবে চলতে থাকলে সবার ভাগ্য বদলে যাবে। বর্তমানে ইলিশের দাম মধ্যম পর্যায়ে রয়েছে বলে জানান তিনি।

লক্ষ্মীপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জানান, গত দু'মাসের তুলনায় এখন নদীতে অনেক বেশি ইলিশ ধরা পড়ছে। প্রচুর বৃষ্টি হলে আরো বেশি ইলিশ ধরা পড়বে। আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় এতদিন ইলিশ পাওয়া যাচ্ছিল না। আশাকরি সামনের দিনগুলোতে আরো প্রচুর ইলিশ ধরা পড়বে।

Bootstrap Image Preview