হাসান বখস, কাতার প্রতিনিধিঃ
দিনের পর দিন কাজ করে যাচ্ছেন। কিন্তু বেতন পাচ্ছেন না। কেউ আবার টাকার অভাবে দেশেও ফিরতে পারছেন না। ২০২২ সালের কাতার বিশ্বকাপের জন্য যেসব স্টেডিয়াম প্রস্তুত হচ্ছে, সেখানকার নির্মাণ শ্রমিকদের এমন দুর্দশার কথা উঠে এসেছে মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের এক প্রতিবেদনে।
বুধবার প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে। মূলত মারকুরি মিনা নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগটি এনেছে অ্যামনেস্টি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কর্মীরা তাদের কাছে হাজার হাজার ডলার পাবেন। এই প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা কাতারের লুসাইল স্টেডিয়াম তৈরি করছেন। যে মাঠে টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী এবং সমাপনী ম্যাচ হবে।
মারকুরি মিনার ওয়েবসাইটে ঢোকা যাচ্ছে না। দোহায় তাদের অফিসও বন্ধ। সংবাদ সংস্থা এপির সঙ্গে কথা বলতেও রাজি হয়নি তারা।
কাতার সরকার বলছে, অভিযোগের বিরুদ্ধে আগে থেকেই তদন্ত চলছে।
স্টেডিয়ামের একজন কর্মী বলেন, ‘মানুষ সুন্দর-সুন্দর স্টেডিয়াম দেখে হাসছে, প্রশংসা করছে। কিন্তু তারা কি এর পেছনের গল্পগুলো জানে? আমার মনে হয় জানে না। এখনকার দিনে মানুষ অন্ধ।’
অ্যামনেস্টি বলছে, তারা মারকুরি মিনার ৭৮ জন সাবেক কর্মীর মধ্যে ৪৪ জনের সাক্ষাতকার নিয়েছে। ৩৪ জনের বিভিন্ন তথ্য পর্যালোচনা করেছে। যাদের মধ্যে ৫৪ জন নেপালি, ১৫ জন ভারতীয় এবং ৫ জন ফিলিপিন্সের।
মারকুরি মিনা কাতারে বিভিন্ন প্রজেক্টে কাজ করে থাকে। স্টেডিয়াম ছাড়াও জাতীয় লাইব্রেরি, কর্মী হাসপাতালে তাদের কাজ রয়েছে। কর্মীরা জানিয়েছেন, ওই প্রতিষ্ঠানের কাছে তারা ১৩৭০ ডলার থেকে ২৪৭০ ডলার পর্যন্ত পাবেন। তাদের মধ্যে একজন কর্মী প্রায় এক দশক ধরে কাজ করছেন। যার পাওনা রয়েছে ২৫ হাজার ডলার!
কাতারের শ্রম মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, শ্রমিকদের সঙ্গে এ ধরণের নির্যাতন মেনে নেয়া হবে না। মারকুরি মিনার বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অত্যধিক গরমের ভেতর বিশ্বকাপ আয়োজন করে কাতার শুরু থেকে সমালোচনায় পড়েছে। ২০১৭ সালে এক ব্রিটিশকর্মী ৪০ মিটার উপর থেকে পড়ে মারা যান। ২৩ বছর বয়সী একজন নেপালিও স্টেডিয়ামে কাজ করার সময় মারা গেছেন।