Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৫ বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

'১০ বছর পেরিয়ে গেছে আন্দোলন হবে কোন বছর' প্রশ্ন ওবায়দুল কাদেরের

নুর উদ্দিন মুরাদ, কোম্পানীগঞ্জ (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০১:৩৫ PM
আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০১:৩৫ PM

bdmorning Image Preview


আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ১০ বছর পেরিয়ে গেছে, কিন্তু বিএনপির আন্দোলন দেখা যায়নি।

তিনি বলেন, বিএনপি নেতারা জানে না যে বিএনপির আন্দোলন কারাগারে খালেদা জিয়ার ব্যানেটি ব্যাগের মধ্যেই রয়ে গেছে।

ওবায়দুল কাদের ছন্দে ছন্দে বলেন, দেখতে দেখতে ১০ বছর আন্দোলন হবে কোন বছর।

তিনি নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চরকাঁকড়া ইউনিয়নের নতুন বাজারে মধ্য চরকাঁকড়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মঙ্গলবার দুপুরে অনুষ্ঠিত প্রথম নির্বাচনী জনসভায় এসব কথা বলেন।

মওদুদ আহমদের সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, মওদুদ আহমেদ গণতন্ত্রের জন্য কাঁদেন। অথচ তিনি যখন ভোট করেছিলেন, তখন তিনি ডাক বাংলোতে বসে বলেছিলেন, ভাত ছিটালে কাকের অভাব হয় না। এমনকি উনাকে ভোট না দিলে রাস্তার ইট তুলে নিবেন বলেও জনগণকে হুমকী দিয়েছিলেন।

মওদুদ আহমদকে উদ্দেশ্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, মওদুদ সাহেব আপনি ২২ বছর রাজত্ব করেছেন, এখন আর আপনার সেই জৌলুস নেই। আপনার সময় শেষ।

বিএনপির সমালোচনা করতে গিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, কয়েকদিন পরপরই বিএনপি বলে সর্বাত্মক আন্দোলন হবে, আর মওদুদ আহমেদ বলেন, এক মাসের মধ্যে দেশের চেহারা পাল্টে যাবে। মওদুদ সাহেব ২০০১ সাল বাংলাদেশে আর ফিরে আসবে না। এ সময় ওবায়দুল কাদের ২০০১ পরবর্তী বিএনপির অত্যাচার নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরেন।

বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, খালেদা জিয়া এতো মন্ত্রী বানালো, এতো এমপি বানালো কিন্তু তিনি কারাগারে যাওয়ার পরও কেউ আন্দোলনে এগিয়ে আসলো না। তারা এসি রুমের মধ্যে বসে বসে হিন্দি সিরায়াল দেখছে আর কর্মীদেরকে মাঠে নামার জন্য বলছে। তারা কি জানে না যে, নেতারা মাঠে না নামলে কর্মীরাও মাঠে নামবে না।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির আন্দোলন হল মরা গাঙ্গে জোয়ারের মত। কখনো তা আসবে না। এ সময় তিনি তাঁর ক্ষমতার আমলের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, মওদুদ আহমেদ তাঁর ক্ষমতার ২২ বছরে ২২ হাজার মিথ্যা কথা বলেছেন এবং ২২ হাজার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কিন্তু তিনি তাঁর প্রতিশ্রুতির একটিও পূরণ করেননি।

ওবায়দুল কাদের সবাইকে উদ্দেশ্য করে আরও বলেন, মটর সাইকেলে তিন জন উঠা বন্ধ কর, হেলমেট ব্যবহার কর। দেহের কিছু হলে জোড়া দেওয়া যাবে কিন্তু মাথা নষ্ট হলে রিপিয়ারিং করা যাবে না সবাইকে অবশ্যই হেলমেট ব্যবহার করতে হবে।।

ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি হাজ্বি সফি উল্যার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জনসভায় ওবায়দুল কাদের বলেন, আমার এলাকার মহিলারা শেখ হাসিনার সঙ্গে আছে। উন্নয়নের পক্ষে আছে।

জনসভায় উপস্থিত মহিলাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, শেখ হাসিনা আপনাদের যে সম্মান দিয়েছেন তার তুলনা হয় না।

ওবায়দুল কাদের বলেন, আগে সন্তানের পরিচয় শুধু বাবার পরিচয়ে ছিল। এখন সন্তানের পরিচয়ে মায়ের নামও থাকতে হবে। মনে রাখবেন টাকা পয়সা আর ক্ষমতা বড় নয়। সম্মানটাই হল বড়।

জনসভায় উপস্থিত নারী পুরুষদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা এখন বিধবা ভাতা পাচ্ছেন, আপনাদের ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার জন্য উপবৃত্তি দেয়া হচ্ছে, মাতৃত্বকালীন ছুটি পাচ্ছেন, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পাচ্ছেন, শতভাগ বিদ্যুৎ পেয়েছেন। যা আগে কখনো চিন্তাও করতে পারেননি।

বিদ্যুতের বিষয়ে বলতে গিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির আমলে নামাজের সময়, ইফতারের সময়, সেহরীর সময় লোডশেডিং হত। এখন আর তা নেই। এ সুবিধা শেখ হাসিনাই দিয়েছেন। অন্য কারো পক্ষে এসব কাজ করা সম্ভব হবে না।

ওবায়দুল কাদের বলেন, আপনারা নৌকায় ভোট দিন, তাহলে আগামীতে ঘরে ঘরে গ্যাস সংযোগ দেয়া হবে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, আমি আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক হয়ে সারাদেশে যে সম্মান পাচ্ছি তা আমার একার নয়। এ সম্মান আপনাদের সকলের। আপনারাই আমাকে নির্বাচিত করে এ সম্মান পাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, আপনারা আমাকে নির্বাচিত করেছিলেন বিধায় আমি এ এলাকায় উন্নয়ন কর্মকাণ্ড করতে পেরেছি। কোম্পানীগঞ্জ-কবিরহাটে এমন কোন স্কুল নেই যেখানে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। সকল রাস্তাঘাট পাকা করেছি। আগামীতে ক্ষমতায় এলে আমার এলাকার মেইন রোডও হবে চার লেনের।

তরুণ প্রজম্মের খেলাধুলার সুবিধার জন্য কোম্পানীগঞ্জে শেখ রাসেল স্টেডিয়ামের কাজও অতিসত্ত্বর শুরু হবে বলে ওবায়দুল কাদের জনসভায় ঘোষণা দেন।

জনসভায় উপস্থিত হাজার হাজার জনতার উদ্দেশ্যে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি আপনাদের কি দিয়েছে? বিএনপির এমন একটা কাজ দেখান, যে কাজের জন্য আপনারা বিএনপির প্রার্থী মওদুদ আহমদকে ভোট দিবেন।

জনসভায় আগত দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, যারা অপকর্ম করবে তাদের সাথে আমি নেই। তিনি বলেন, উন্নয়ন আমি করবো। আপনারা শুধু মানুষের সাথে ভাল ব্যবহার করুন।

এ সময় সভায় উপস্থিত ছিলেন জেলা আ’লীগের সহ-সভাপতি মো: সাহাব উদ্দিন, বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আব্দুল কাদের মির্জা, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদল, জেলা আ’লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক নাজমুল হক নাজিম, উপজেলা আ’লীগের সভাপতি খিজির হায়াত খান, সিনিয়ন সহ-সভাপতি ইস্কান্দার হায়দার চৌধুরী বাবুল, সাধারণ সম্পাদক নূর নবী চৌধুরী, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আজম পাশা চৌধুরী রুমেল,বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি নুরুল করিম জুয়েল, স্বাধীনতা ব্যাংকার্স পরিষদের সদস্য ফখরুল ইসলাম রাহাত ও কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি নূর এ মাওলা রাজু প্রমুখ।

Bootstrap Image Preview