বগুড়ার ধুনট উপজেলায় ভান্ডারবাড়ি ইউনিয়নে যমুনা নদীর চরাঞ্চলে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হওয়ায় পানিবন্দী পরিবারগুলো চরম দুর্ভোগে পড়েছে। বন্যাদুর্গত এলাকায় ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের জন্য সরকারিভাবে ১০ মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুরের দিকে উপজেলা প্রকল্প বাস্তাবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) আব্দুল হালিম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বুধবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুর পর্যন্ত বিপদসীমার ২১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে যমুনার চরাঞ্চলে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে।
গত চারদিন ধরে নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের অভ্যান্তরে বৈশাখী, ভান্ডারবাড়ি, রঘুনাথপুর, ভুতবাড়ি, পুকুরিয়া, আটাচর, রাধারনগর, শিমুলবাড়ি, কৈয়াগাড়ি, শহড়াবাড়ি ও নিউসারিয়াকান্দি গ্রামের প্রায় ৫০০ পরিবারের বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করেছে।
চরাঞ্চলের অধিকাংশই পরিবারের লোকজন হতদিরদ্র। এ ছাড়া এসব গ্রামের প্রায় দেড় হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। যাদের বাড়িঘরে পানি উঠেছে তারা চরম দুর্ভোগে পড়েছে। ঘরে পানি উঠলেও বাড়ি ছাড়ছে না এসব পরিবারের লোকজন। ঘরের ভেতর বাঁশের মাচাং তৈরী করে তার উপর অতিকষ্টে বসবাস করছে।
বন্যা পানিতে বাড়ির চুলা ডুবে যাওয়ায় খাবার রান্না করতে পারছে না। এ অবস্থায় অনেকে উঁচু স্থানে খাবার রান্না করছে। বন্যার পানিতে গবাদিপশুর কষ্ট বেড়ে গেছে। চরাঞ্চলের প্রায় সাড়ে ৫০০ বিঘা জমির ধান, আখ, মরিচ, মাসকলাই ও সবজিসহ বিভিন্ন জাতের ফসলের ক্ষতি হয়েছে।
পানিবন্দী কৈয়াগাড়ি, শিমুলবাড়ি, শহড়াবাড়ি ও বৈশাখী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাঠাদান ব্যহত হচ্ছে। এসব বিদ্যালয়ের পাশে উঁচু স্থানে শিক্ষার্থীদের পাঠদান দেওয়া হচ্ছে। বন্যার কারণে বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমে গেছে।
উপজেলার ভান্ডারবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতিকুল করিম আপেল এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় চরাঞ্চলের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। চরের ১১টি গ্রামের প্রায় ৫০০ পরিবারের বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করেছে। যে সব বাড়িঘরে পানি উঠেছে তাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
এসব পরিবারে শুকনো খাবারের সংকট সৃষ্টি হয়েছে। পানিন্দী পরিবারের তালিকা তৈরী করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট জমা দেওয়া হয়েছে। তবে বানভাসি পরিবারের লোকজনের ভাগ্যে আজো কোন প্রকার ত্রাণ সামগ্রী জোটেনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাজিয়া সুলতানা বলেন, বন্যাদুর্গত এলাকার জন্য বুধবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকালের দিকে সরকারিভাবে ১০ মেট্রিক টন চালের বরাদ্দপত্র পাওয়া গেছে। বানভাসি ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের তালিকা চুড়ান্তর কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। দুই এক দিনের মাঝে বন্যার্তদের মাঝে চাল বিতরণ করা হবে।