Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৯ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৫ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মফস্বল সাংবাদিকতা নিয়ে একবার ভাবুন!

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৮:০০ AM
আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৮:০৮ AM

bdmorning Image Preview


এম আরমান খান জয়-

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, বড় কষ্ট ও বেদনা নিয়ে আপনার উদ্দেশে এই নিরুপায় কলম তুলে নিয়েছি। শুরুতেই না বললে নয় বাংলাদেশ এখন বিশ্বের বিস্ময়। আর এই বিস্ময় বাংলাদেশের ম্যাজিকের রূপকার আপনি। আপনি সাংবাদিকদের জন্য সরকার কর্তৃক  নানা বিধি সুযোগ-সুবিধা প্রদান করছেন, কিন্তু তা থেকে প্রতিনিয়ত বঞ্চিত মফস্বল সংবাদকর্মীরা। রাজধানীর সাংবাদিকদের মতো করে মফস্বল সংবাদকর্মীদেরও সুযোগ-সুবিধা প্রদান এবং প্রকৃত সাংবাদিকদের তালিকা প্রণয়ন করে আরেকটি অনন্য উদাহরণ সৃষ্টি করবেন আশা রাখি।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, দেশের প্রধানমন্ত্রীর কাছে তৃতীয় বিশ্বের একজন অসহায় মফস্বল সাংবাদিকের ফরিয়াদ পৌঁছানোর উপায় হয়তো একমাত্র গণমাধ্যমই। আমার এই ফরিয়াদ আপনার কাছে আদৌ পৌঁছাবে কিনা, এই লেখাটি আপনি পড়বেন কিনা, আপনাকে কেউ বলবে কিনা, আপনার টেবিলের দৈনন্দিন পেপার ক্লিপিংয়ে এর স্থান হবে কিনা আমি জানি না। তবু কবি কামাল চৌধুরীর ‘রক্তাক্ত পক্তিমালা’ কবিতা ‘তুমি পড়বে না জানি তবু এই চিঠি পাঠিয়ে দিলাম’ স্মরণ করে এই লেখাটি লিখছি।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি বর্তমান বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কাণ্ডারি। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের অসম সাহসী নেত্রী। আপনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু কন্যা। পৃথিবীর সর্বহারা দুঃখী মানুষের একজন। সীমাহীন কষ্টের বিশাল পাহাড় বুকে নিয়ে কী ভীষণ প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত আপনার পথচলা...লড়াই আর সংগ্রাম। পিতা, মাতা, ভাই, ভ্রাতৃবধূ আর স্বজন হারানো এই বধ্যভূমির বেদনাশ্রু মোছাতে, সত্যিকার গণতন্ত্রের ফুল ফোটাতে, তৃণমূলই মুক্তিযুদ্ধের আঁতুড়ঘর। গণতন্ত্রচর্চার উর্বর জমিন। সেখানে এসিড ঢেলে নয়, খাঁটি জল ছড়িয়েই গণতন্ত্রের সবুজ গোলাপ ফোঁটাতে হবে।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি জানেন, বর্তমানে অনিরাপদ ঝুঁকিপূর্ণ পেশা সাংবাদিকতা। সংবাদপত্রের দায়িত্ব এবং গুরুত্ব অপরিসীম। বর্তমান সভ্যতার অন্যতম খুঁটি সংবাদপত্রের অভাবে সভ্যতার রথচক্র থেমে যেতে পারে। রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব সংঘাত, সংঘর্ষ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, খরা, বন্যা, ঝড়, ভূমিকম্পসহ নানা খবর মানুষের দরবারে পৌঁছে দেয় সংবাদপত্র। যার চলার পথে কোন বিরাম নেই, অহোরাত্র জাগ্রত থেকে সুখ-দুঃখের পাঁচালির খোঁজে ছুটে অবিরত। আদর্শিক মতভেদ, দুর্ভিক্ষ, মহামারী, প্রেম-বিরহ, বিবেক কার্যকলাপে সংবাদপত্রই আমাদের শুভ বুদ্ধি জাগরণের মহৎ প্রেরণা। সমাজের উপর যখন অশুভ শক্তির সছায়া পড়ে, অত্যাচারীর খড়গ-কৃপাণ যখন ভীম রণভূমে রণিত, যখন দিকে দিকে প্রতিক্রিয়াশীল শক্তির বিজয় দম্ভ, রণ হুংকার, রক্তোম্মাদনা, যুদ্ধের করাল বিভীষিকা সভ্যতাকে গ্রাস করে তখন সংবাদপত্রই মানবতা বিরোধী হিংস্র ক্রিয়াকলাপের বিরুদ্ধে গর্জে ওঠে। দেশ-বিদেশের আনাচে-কানাচে গড়ে তোলা প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর। ধিক্কার ধ্বনিতে সোচ্চার হয় বিশ্ববাসী, গণবিক্ষোভের পটভূমি হয় জোরালো ।

মফস্বল সাংবাদিকদের সমালোচনায় লিপ্ত থাকে মফস্বল সাংবাদিকরাই। এটা এখন আর নতুন কিছু নয়। ইদানিং দেখা যায়, মফস্বল সাংবাদিকদের তুমুল সমালোচনায় লিপ্ত হচ্ছে ঢাকার অভিজাত সাংবাদিকরাও। গেল সপ্তাহে সিনিয়র এক সাংবাদিক তার ফেসবুক পেইজে মফস্বলে অপসাংবাদিকতার দৌড়াত্ম বেড়ে যাওয়া নিয়ে একটি পোস্ট দিয়েছেন। সেখানে তিনি তুলে ধরেছেন, মফস্বল সাংবাদিকের একাধিক সমালোচনা। সেই পোস্টে কমেন্ট করেছেন ভিন্ন ভিন্ন পেশার মানুষ। কমেন্টগুলো পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, সাংবাদিকদের মর্যাদা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। ওই পোস্টটিতে অনেকেই সাংবাদিকদের খাটো করে নানা রকম কমেন্ট করেছেন ।

যা বলছিলাম, ঢাকার একজন সাংবাদিকের ওপর নির্যাতন হলে সারা বাংলার সংবাদকর্মীরা প্রতিবাদে মাঠে নামে আন্দোলন করে অবিরত। এতে গণমাধ্যমকর্মীদের পাশাপাশি সুশিল সমাজও আন্দোলন করেন। কিন্তু তিনি যদি ভাগ্যক্রমে মফস্বল সাংবাদিক হতো তাহলে প্রতিবাদে হয়তো আর কাউকে পেলেও সাংবাদিক পাওয়া যেতো না। শুধু রাজধানীতে নয়, প্রতিদিন মফস্বলে সাংবাদিকরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। তাই একজন মফস্বল সাংবাদিক তার প্রতি অন্যায়ের প্রতিবাদ আর সামান্য সহযোগিতা অন্য পেশার মানুষের কাছ থেকে কি পেতে পারে না?

চোরের দলেরা জনগণের চোখে কালি দিয়ে সরকারের টাকা লুটে নিচ্ছে, আর সেই ছবি তুলতে গিয়ে ন্যাড়ি কুত্তার মতো মার খেয়ে পিঠের ছাল হারাচ্ছে মফস্বল সাংবাদিক। আর তখন সেই জনগণের মুখে শোনা যায় ‘আহ বেচারা চাঁদাবাজি করতে গিয়ে কতই না মার খেলো’। হিসেব করে দেখলাম, সব কিছুর পেছনে এলার্জি শুধু সাংবাদিকরাই।

আজ সাংবাদিকদের অপরাধ দুর্নীতি নিয়ে কোথাও লেখা দেখলে সেখানে অন্য পেশার মানুষরা সক্রিয়ভাবে সাংবাদিকদের মর্যাদা ক্ষুণ্ন করার কামান নিয়ে হাজির হন। একজন মফস্বল সাংবাদিকের লেখার মাধ্যমে একটি এলাকা, গ্রাম, উপজেলা এমনকি একটি জেলার বৃহত্তম উন্নয়ন হয় তারা সেটা মানতে নারাজ। আর সেটা শুধু অন্য পেশার মানুষই নয় এ পেশার বড় বড় কর্তারাও মানতে নারাজ যে, মফস্বল সাংবাদিক একটা মিডিয়ার অংশ। তাদের একটা রিপোর্টে একটি মিডিয়া মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হতে পারে।

কেউ কি লক্ষ্য করে দেখেছেন? একটি জাতীয় দৈনিকের ৪০ ভাগ নিউজ থাকে মফস্বল সাংবাদিকের লেখা। আর বেশিরভাগ দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞাপন থাকে ৫০ ভাগেরও বেশি। কিন্তু সেই তুলনায় তাদের কতটা মূল্যায়ন করা হয়? ভালো একটা নিউজ লিখলে ধন্যবাদ পাওয়ার সৌভাগ্যও হয় না। সাংবাদিকদের বেতন ভাতা নিয়ে যে ৭ম ওয়েজ বোর্ড ও ৮ম ওয়েজ বোর্ড দেখা যায়। দুঃখের বিষয় সেখানে কোন জেলা বা উপজেলা প্রতিনিধির মর্যাদা ও গ্রেড বলে কোন শব্দের দেখা পায়নি মফস্বল সাংবাদিকরা।

আমার সাংবাদিকতা পেশায় অর্ধযুগ পেরিয়ে গেছে। তবুও এ পেশায় এখনও শিক্ষানবীশ আছি। আমি দীর্ঘদিন যাবৎ অনেক সহকর্মী বড় ভাইদের দেখে এসেছি সংবাদ সংগ্রহের নেশা। বিশেষ করে আমার সাংবাদিকতার মহাগুরু সাংবাদিক এম শিমুল খান, সকাল হলেই শুরু করেন নানান সংবাদ নিয়ে আলোচনা, শুরু হয় প্রতিদিনের মতোই নেশার উপাদান সংবাদ সংগ্রহ। যেমন একজন মাদকাসক্ত যুবক নেশার পণ্য জোগাড় করতে মরিয়া হয়, তেমনি আমরা মফস্বল সংবাদকর্মীরাও মরিয়া হই গুরুত্বপূর্ণ সংবাদগুলো পাঠকের কাছে তুলে ধরতে।

সংক্ষেপে মফস্বল সাংবাদিকের হাতে উন্নয়নের একটি গল্প বলবো, ২০১৬ সালের কথা। দেশের ভিবিন্ন জেলাসহ গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়াসহ সাতপাড়, জলিলপাড়ে উপর দিয়ে বয়ে যায় ঘূর্ণিঝড় সিডর। এ বিষয়ে কয়েকজন মফস্বল সাংবাদিক লিখেন ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে সচিত্র সংবাদ। আর সেসব লেখার ওপর ভিত্তি করে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও বিদেশি সংস্থা ছুটে আসেন ক্ষতিগ্রস্থ ও স্বজনহারা মানুষের পাশে। অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা, বাসস্থান, চিকিৎসা থেকে শুরু করে নগদ অর্থ দিয়ে তাদের পাশে দাঁড়ান। শুধু ওই সময়ই নয়। বিশেষ করে গোপালগঞ্জের সাংবাদিক এম আরমান খান জয়ের পরিচালনায় জয় অসহায় ফাউন্ডেশন ২০১৬ সাল থেকে আজ পর্যন্ত সেই সব মানুষদের নিয়ে কাজ করছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত কখনও ক্ষতিগ্রস্ত কারো কাছ থেকে শোনা যায়নি, সাংবাদিকদের কারণে তারা আজ উপকৃত। জানি এটা কখনো কেউ বলবে না। কারণ, ভালো কাজে উৎসাহ দেয়ার মতো মানুষের বড় অভাব।

এবার বলবো টেলিভিশনে মফস্বল সাংবাদিকতা। প্রায়ই টেলিভিশনের স্ক্রলে দেখা যায় দেশের এ প্রান্তে সড়ক দুর্ঘটনায় অনেক মানুষের প্রাণহানি। আবার দেখা যায়, লঞ্চডুবিতে অনেক মানুষ নিখোঁজ হয়েছে। যে কোনো নির্বাচন চলাকালে সবশেষ খবরের শিরোনামও দেখা যায় সবার আগে টেলিভিশনে। এছাড়াও দেশের যে কোন প্রান্তের খবর তাৎক্ষণিক স্থান পায় টেলিভিশনে। আর সেই সংবাদ দেখে বেশিরভাগ দর্শকই মূল্যায়ন করে ওইসব টেলিভিশন কতটা স্ট্যান্ডার্ড এবং দ্রুতগতির এবং কতটা বস্তুনিষ্ঠ। কিন্তু কেউ কি ভেবেছে, ওই সংবাদগুলো মফস্বল সাংবাদিকের পাঠানো? হয়তো দর্শকের এই বিষয়টি ভাবার সময় থাকে না। তাই বলে কি ওই টেলিভিশনের কর্তারাও ভাববে না? দুঃখের বিষয়, ওই সময় তাদেরকে ফোন করে একটা ধন্যবাদ দেয়ারও প্রয়োজনবোধ মনে করে না বেশিরভাগ টেলিভিশনের কর্তাব্যক্তিরা। যার একটি সংবাদে টেলিভিশন দর্শকদের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে, যার পাঠানো একটি শিরোনামে দর্শকদের বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পাওয়ার মাধ্যম হিসেবে একটি টেলিভিশন গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করে। কিন্তু সেই তুলনায় তাদেরকে কতটা মূল্যায়ন করা হয়?

বড় কষ্টে বলতে হয়, মোবাইলে কথা বলতে গিয়ে প্রতি মিনিটে আমরা ভ্যাট দেই, এমনকি একজন মাদকাসক্ত মানুষ প্রতিটা সিগারেটে সরকারকে ভ্যাট দিয়ে থাকে। কিন্তু দেখা যায় যাদের দেয়া ভ্যাট দিয়ে মাস গেলে যে সব কর্তাদের বেতন হয় সেই কর্তাদের কাছে সেবা নিতে গিয়ে হতে হয় হয়রানির শিকার। এক কথায় বলা যায় ‘আমার বিলাই আমারে কয় মেও’।

একটি কথা বলতে খুব খারাপ লাগছে। যারা মফস্বল সাংবাদিকদের নিয়ে বিভিন্ন সময় খারাপ মন্তব্য করেন তারা জেনে রাখবেন, কোন সাংবাদিক ভালো মানুষের কাছ থেকে টাকা নিতে পারে না। যাদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে থাকে তারা নিশ্চয়ই দুর্নীতিগ্রস্থ। আর সে কাজটা শুধু সাংবাদিকরাই না অন্য পেশার মানুষেরাও করে। পুলিশ, এমপি, মন্ত্রী, রাজনৈতিক নেতাকর্মী থেকে শুরু করে আরো অনেকে। শুধু তফাৎ তারা সরকারি সব সুবিধা পায়, আর সাংবাদিকরা পায় বঞ্চনা।

তবে হ্যাঁ, সাংবাদিকরা যে খারাপ কাজ করে না তা বলছি না। তারাও খারাপ কাজ করে। তবে সেটা সবার বেলায় বালা উচিত। কেননা প্রতিবাদ না থাকলে সমাজ থেকে ‘খারাপ’ শেষ করা যাবে না। মফস্বলে কিছু হলুদ সাংবাদিকের কারণে সকল সাংবাদিকরা আজ প্রশ্নবিদ্ধ। অনেকেই আজ সাংবাদিকতার নাম ব্যবহার করে ছড়িয়ে পরছে নানা অপকর্মে। তাই খারাপকে খারাপ বলা আর ভালোকে ভালো বলার অধিকার প্রতিটা মানুষের আছে। তাই সংবাদকর্মী হিসেবে অন্য সব পেশার মানুষদের বলছি, যখন কোন সমস্যা নিয়ে মানববন্ধন মিছিল মিটিং করেন, তখন কিন্তু ওই মফস্বল সাংবাদিকরাই আপনাদের সংবাদটি দেশের উচ্চ পর্যায়ের মানুষের কানে পৌঁছে দেয়। অতএব প্রতিবাদের সময় পেশা ভুলে সকলে মিলে খারাপকে খারাপ আর ভালোকে ভালো বলার সৎ সাহসটুকু তৈরি করাও সকল মানুষের দায়িত্ব। আর মফস্বল সাংবাদিকের নির্যাতনের প্রতিবাদ ও সহযোগিতায় পাশে দাঁড়াবে সকল পেশার মানুষ এমনটাই প্রত্যাশা মফস্বলের সকল সাংবাদিকের।

ভেবে দেখেছেন কি?
দেশে একের পর এক ওয়েজ বোর্ড গঠন হলেও এতে মফস্বল সংবাদকর্মীদের কোনো স্থান পায় নাই। ওয়েজ বোর্ডের সব সুযোগ-সুবিধা যেন ভদ্রপল্লীর এসি রুমে বসে কাজ করা সাংবাদিকদের শোভা পায়। মফস্বলকর্মীদের দুঃখের গল্প শোভা আরেক মফস্বল সহকর্মীর কাছে। যদিওবা সংবাদ মাধ্যমগুলোর পাঠক ও দর্শকের প্রত্যাশার মূল কেন্দ্রবিন্দুই মফস্বলকে ঘিরে। কিন্তু সেই মফস্বল থাকা গণমাধ্যম কর্মীরা অবহেলিতই থেকে যাচ্ছে। যখন পাঠক ও দর্শকের আকাঙ্খা ও প্রত্যাশা মাথায় রেখে নিজ কর্তব্যে সক্রিয় মফস্বল সংবাদকর্মীরা, তখনো তাদের প্রতি সামান্যতম কৃতজ্ঞতা জন্ম হয় না নিজ প্রতিষ্ঠানের কর্তাদের। তবুও আমাদের মতো মফস্বল কাজ করা সংবাদকর্মীদের উপর চলে নিপিড়ন। কাজের স্বীকৃতি স্বরুপ একদিকে জোটে দরিদ্রোচিত কষ্ট-বেদনা। আর অন্যদিকে একটু সংবাদ পেতে দেড়ি হলেই অফিসের নানারকম প্রবঞ্চনা। এতে এখন আর আমাদের গায়ে লাগে না। কারন প্রথমে খারাপ লাগলেও এ রকম শুনতে শুনতে আমরা মফস্বলকর্মীরা অভ্যস্ত হয়ে গেছি।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, সমালোচনা যতই থাকুক না কেন সাংবাদিকতাকে বলা হয় মহান পেশা। আর এ ক্ষেত্রে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে মৃত্যু ঝুঁকি পর্যন্ত নিতে হয় সাংবাদিকদের। আর মৃত্যু ঝুঁকির বিষয়টি একেবারে জেনে বুঝেই আসে। যখন কোনো সাংবাদিক সহিংস রাজনৈতিক কর্মসূচি বা যুদ্ধ ক্ষেত্রে যুদ্ধের ঘটনা কভার করেন। যুদ্ধক্ষেত্র থেকে তারা শুধু সর্বশেষ সংবাদই পাঠান না, প্রেরণ করেন যুদ্ধের ছবিও। তাদের সংবাদ আর ছবিগুলো শুধু যুদ্ধচিত্রই নয়, ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ দলিল হিসেবে অসামান্য মর্যাদা লাভ করে।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি আমাদের অভিভাবক, আপনি আমাদের সকলের ভাল চান, দেশের মানুষের ভাল চান তাই বড্ড আশা করি এই বেদনাহত সাংবাদিক এবং ছোট ভাইটির আবেদনে সাড়া দিয়ে আপনি রাজধানীর মত করে মফস্বল সাংবাদিকদের জন্য ও সরকার কর্তৃক সকল সুবিধা প্রদান করে এবং প্রকৃত সাংবাদিকদের তালিকা প্রণয়ন করে আরেকটি অনন্য উদাহরণ সৃষ্টি করবেন। পরিশেষে আপনার সুস্বাস্থ্য এবং দীর্ঘায়ু ও মঙ্গল কামনা করে আপনার সুচিন্তিত উত্তরের অপেক্ষায়।

লেখক: জেলা প্রতিনিধি; বিডিমর্নিং ও উপ-প্রচার সম্পাদক, বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম ।

 

Bootstrap Image Preview