Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৫ বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

সাঘাটায় বিদ্যুৎ অফিসের সিন্ডিকেটের হাতে জিম্মি গ্রাহকরা

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৯:৩৮ AM
আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৯:৩৮ AM

bdmorning Image Preview


নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রত্যন্ত গ্রামগুলোতে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিতে তৎপর সরকার। এরই অংশ হিসাবে গাইবান্ধার সাঘাটায় চলছে বিদ্যুত প্রদানের কাজ। কিন্তু বিদ্যুৎ পেতে জায়গায় জায়গায় হয়রানিসহ সিন্ডিকেটের কাছে বিভিন্ন ভাবে ঠকছে বিদ্যুৎ আগ্রহী গ্রাহকরা।  

গ্রাহক নয়, যেন সিন্ডিকেটই বিদ্যুৎ অফিসের লোকদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। শুধু তাই নয়, বিদ্যুৎ অফিসের শর্ত পূরণ করতে গিয়ে সিন্ডিকেটের হাতে জিম্মি এই গ্রামের হাজারো মানুষের পরিবারের চোখেমুখে এখন হতাশা আর দুচিন্তা।  

হয়রানির শিকার গ্রাহকরা জানিয়েছেন, গাইবান্ধার বিদ্যুৎ অফিসের প্রথম শর্ত হলো সাধারণ মানুষকে বিদ্যুৎ পেতে হলে আগে ঘরের ওয়ারিং এর কাজ সম্পন্ন করতে হবে। কিন্তু এই কাজ করতে বিদ্যুৎ অফিসের সাথে যোগসাজ করছে একটি সিন্ডিকেট। জেলা বিদ্যুৎ অফিসও সিন্ডিকেটকেই সমর্থন করছে। ফলে বাধ্য হয়ে তাদের হাতেই ঘরের ওয়ারিং এর কাজ করাতে হচ্ছে গ্রাহকদের। এই সুযোগে সিন্ডিকেটরা ব্যবসায়ীদের সাথে যোগসাজ করে পল্লী বিদ্যুৎ অনুমোদিত মালামাল ব্যবহার না করে নিম্নমানের বৈদ্যুতিক সামগ্রী বিক্রি করে অতিরিক্ত মুনাফা হাতিয়ে নিচ্ছে। এসব নিম্নমানের বৈদ্যুতিক সামগ্রী ব্যবহারে শুধু ঝুঁকিই থাকছে না বরং যেকোন মুহুর্তে ঘটতে পারে বড় ধরণের দুর্ঘটনা।

সংশ্লিষ্ট এলাকায় কর্মরত একাধিক বিদ্যুৎ ওয়ারিং মিস্ত্রি জানান, সিন্ডিকেটের সদস্যারা যেসব বিদ্যুৎ সামগ্রি দিয়ে গ্রাহকদের ঘর ওয়ারিং করছে তা অত্যন্ত নিম্নমানের বিদ্যুৎ সামগ্রি। তামার পরিবর্তে লোহা মিশ্রিত তার, নিম্নমানের প্লাষ্টিকের বোর্ড এবং মিটার দেওয়া হচ্ছে। চাচের তৈরি মিটার বোর্ড বিক্রি করছে। মিটার বোর্ডগুলো আনুপাতিক হারে স্বাভাবিক মিটার বোর্ডের চেয়েও ছোট। এসব বোর্ড বসানোর সময় পোরেক মারতে গেলেই ফেটে যাচ্ছে। আর্থিং এর জন্য ৪ কেজি ওজনের ৮ ফিট লম্বা ৮০ মিলি গ্যালবানাইজ (লিপন) করা গ্রাউন্ডিং রড দেয়ার কথা থাকলেও অত্যন্ত নিম্নমানের ২ থেকে আড়াই কেজির ওজনের রড দেওয়া হচ্ছে। এই সব সামগ্রী অত্যান্ত নিম্নমানের হলেও গ্রাহকদের কাছ থেকে নেওয়া হচ্ছে উচ্চ মূল্য।

সিন্ডিকেট ও ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, অর্জিনাল মালামালের দাম বেশি তাই গ্রাহকরা এত বেশি দাম দিতে চাইবে না।সেজন্যে একটু কমদামি জিনিস ব্যবহার করা হচ্ছে। ব্যবচসায়ীরাও বলছেন একই কথা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, সাঘাটা উপজেলার সিংহভাগ মিটারেই গ্রাউন্ডিং রড ব্যবহার করা হয়নি। এইসব কারণে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা।

সম্প্রতি সাঘাটা উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের বেড়া গ্রামের ইয়াকুব আলী, ইসমাইল হোসেন, মানিক মিয়া, বোনারপাড়া ইউনিয়নের পশ্চিম শিমুল তাইড় (ফুটানী বাজার) রেলওয়ে কর্মচারী জহুরুল ইসলাম ও পূর্ব শিমুল তাইড় গ্রামের পে-ক্লার্ক মামুনুর রশিদ বাড়ীতে বিদ্যুতের সর্ট সার্কিটের আগুনে পুড়ে প্রায় ১ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। হলদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান ইয়াকুব আলী বলেন, সেই দুর্ঘটনাটিও সর্ট সার্কিটের কারণে হয়েছে।

এলাকায় বিদ্যুতের দুর্ঘটনা এড়াতে ওয়ারিংয়ে ভালো ইলেকট্রিক পণ্য ব্যবহারসহ সংশ্লিষ্ট কাজে জাড়িতদের বিচারের জন্যে উপজেলা ইউএনও এবং ডিসির কাছে এলাকাবাসী আবেদন জানিয়েছেন। 

Bootstrap Image Preview