রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে। সোমবার রাতে আবার রক্তক্ষরণের পর তার হিমোগ্লোবিন কমে যায়। এখন স্বাভাবিক হলেও শারীরিকভাবে খুব দুর্বল খালেদা জিয়া।
বুধবার সন্ধ্যায় দেশ রূপান্তরকে এ কথা জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মেডিকেল টিমের এক সদস্য।
তিনি বলেন, ‘এর আগে তিনবার খালেদা জিয়ার রক্তক্ষরণ হয়েছিল। এ কারণে দুর্বল হয়ে পড়েছিলেন তিনি। পরে তাকে রক্ত দেওয়া হলে কিছুটা স্বাভাবিক হন খালেদা জিয়া। চতুর্থ দফা রক্তক্ষরণ হওয়ায় চিকিৎসকরা চিন্তিত হয়ে পড়েছিলেন।’
বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও দলের ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, ‘চেয়ারপারসন ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার মেডিকেল টিমের সদস্যরা ফলোআপ করেছেন। তাকে অক্সিজেন দেওয়া লাগছে না। এমনকি রক্তও দেওয়া লাগেনি। রক্তক্ষরণ হওয়ায় চেয়ারপারসন দুর্বল হয়ে পড়েছেন। শুধু তরল খাবার দেওয়া হচ্ছে।’
খালেদা জিয়ার মেঝো বোন সেলিমা ইসলাম বলেন, ‘খালেদা জিয়া শক্ত খাবার খেতে পারছেন না। তার জন্য প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান সিঁথি গুলশানের বাসভবন ফিরোজা থেকে রান্না করে লিকুইড খাবার নিয়ে যাচ্ছেন। সেটিই খাচ্ছেন খালেদা জিয়া। সিঁথি ছাড়া খালেদা জিয়াকে দেখাশোনা করার জন্য দুজন ব্যক্তিগত সহকারি রয়েছেন হাসপাতালে। সংক্রমণ এড়াতে চিকিৎসকদের পরামর্শে আমরা হাসপাতালে যাচ্ছি না।’
গত ১৩ নভেম্বর রাত সাড়ে আটটায় খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক টিমের সদস্য প্রফেসর ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য চেয়ারপারসনকে হাসপাতালে আনা হয়েছে। তার মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্যরা সবাই বসে সিদ্ধান্ত নেবেন। প্রয়োজন হলে ভর্তি করা হবে। সেদিন রাতেই তাকে ক্রিটিক্যালি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) ভর্তি করা হয়।
এরপর খালেদা জিয়ার লিভার সিরোসিস হয়েছে বলে চিকিৎসকরা জানান। তারা বলেন ইতিমধ্যে তিনবার রক্তক্ষরণ হয়েছে বিএনপি চেয়ারপারসনের। তাকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসা প্রয়োজন বলে পরামর্শ দেন তারা। একই দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছে বিএনপি।
এর আগে গত ১২ অক্টোবর তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। ২৬ দিন পর গত ৭ নভেম্বর গুলশানের বাসায় ফেরেন তিনি।