Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৬ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

যে ১১ দফা দাবি নিয়ে রাস্তায় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১ ডিসেম্বর ২০২১, ০২:০৬ PM
আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০২১, ০২:০৬ PM

bdmorning Image Preview
ছবি সংগৃহীত


সড়ক দুর্ঘটনার বিচার ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে আজও রাস্তায় নেমেছেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। এবার ১১ দফা দাবি উত্থাপন করে রাজধানীর রামপুরা ব্রিজের ওপর অবস্থান নিয়েছেন বিভিন্ন স্কুল-কলেজের কয়েকশ শিক্ষার্থী।

শিক্ষার্থীরা বলেছেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা রাস্তা ছাড়বেন না।

আজ বুধবার সকাল সাড়ে ১১টায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পক্ষে এসব দাবি তুলে ধরেন খিলগাঁও মডেল কলেজের শিক্ষার্থী সোহাগী সামিয়া এবং ঢাকা ইমপেরিয়াল কলেজের শিক্ষার্থী নাদিমুর রহমান জুয়েল।

শিক্ষার্থীদের ১১ দফা দাবিগুলো হলো:

  • সড়কে নির্মম কাঠামোগত হত্যার শিকার নাঈম ও মাইনুদ্দিন হত্যার বিচার করতে হবে। তাদের পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। গুলিস্তান ও রামপুরা ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় পথচারী পারাপারের জন্য ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ করতে হবে।
  • সারাদেশে সব গণপরিবহনে শিক্ষার্থীদের হাফ পাস সরকারি প্রজ্ঞাপন দিয়ে নিশ্চিত করতে হবে। হাফ পাসের জন্য কোনো সময় বা দিন নির্ধারণ করে দেওয়া যাবে না। বর্ধিত বাস ভাড়া প্রত্যাহার করতে হবে। সব রুটে বিআরটিসির বাসের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে।
  • গণপরিবহনে ছাত্র-ছাত্রী এবং নারীদের অবাধ যাত্রা ও সৌজন্যমূলক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
  • ফিটনেস ও লাইসেন্সবিহীন গাড়ি এবং লাইসেন্সবিহীন চালক নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। গাড়ি ও ড্রাইভিং লাইসেন্স নিয়ে বিআরটিএ'র দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।
  • সব রাস্তায় ট্রাফিক লাইট, জেব্রা ক্রসিং নিশ্চিত করাসহ জনবহুল রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশের সংখ্যা বাড়াতে হবে। ট্রাফিক পুলিশের ঘুষ দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।
  • বাসগুলোর মধ্যে বেপরোয়া প্রতিযোগিতা বন্ধে এক রুটে এক বাস এবং দৈনিক আয় সব পরিবহন মালিকের মধ্যে তাদের অংশ অনুযায়ী সমানভাবে বণ্টন করার নিয়ম চালু করতে হবে।
  • শ্রমিকদের নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্র নিশ্চিত করতে হবে। চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করতে হবে। চুক্তির ভিত্তিতে বাস দেওয়ার বদলে টিকিট ও কাউন্টারের ভিত্তিতে গোটা পরিবহন ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে হবে। শ্রমিকদের জন্য বিশ্রামাগার ও টয়লেটের ব্যবস্থা করতে হবে
  • গাড়ি চালকের কর্মঘণ্টা একনাগাড়ে ৬ ঘণ্টার বেশি হওয়া যাবে না। প্রতিটি বাসে ২ জন চালক ও ২ জন সহকারী রাখতে হবে। পর্যাপ্ত বাস টার্মিনাল নির্মাণ করতে হবে। পরিবহন শ্রমিকদের যথাযথ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।
  • যাত্রী-পরিবহন শ্রমিক ও সরকারের প্রতিনিধিদের মতামত নিয়ে সড়ক পরিবহন আইন সংস্কার করতে হবে এবং এর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে।
  • ট্রাক, ময়লার গাড়িসহ অন্যান্য ভারী যানবাহন চলাচলের জন্য রাত ১২টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত সময় নির্ধারণ করে দিতে হবে।
  • মাদকাসক্তি নিরসনে গোটা সমাজ জুড়ে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। চালক-সহকারীদের জন্য নিয়মিত ডোপ টেস্ট ও কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে।
  • এদিকে, রামপুরা ব্রিজের ওপর শিক্ষার্থীদের অবস্থানের কারণে ডিআইটি সড়কে যান চলাচলে বাধা সৃষ্টি হয়েছে। গতকালের মতো আজও তারা যানবাহনের কাগজপত্র চেক করছেন ও ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করছেন। সেখানে পর্যাপ্ত পুলিশও মোতায়েন রয়েছে।

উল্লেখ্য, গত সোমবার রাত ১০টার দিকে জন্মদিনে রামপুরা বাজার এলাকায় অনাবিল বাসের চাপায় প্রাণ হারায় এসএসসি পরীক্ষার্থী মাইনুদ্দিন। সে ২০০২ সালের ২৯ নভেম্বর জন্মগ্রহণ করে। ৩ ভাইবোনের মধ্যে সে ছিল ছোট।

মাইনুদ্দিনের বাবা আবদুর রহমান ভাণ্ডারী পূর্ব রামপুরার মোল্লা বাড়ি এলাকায় একটি চায়ের দোকান চালান। মাইনুদ্দিনের মৃত্যুতে ক্ষুব্ধ জনতা দুর্ঘটনার জন্য দায়ী বাসটিসহ অন্তত ১২টি বাসে আগুন ধরিয়ে দেয়। রাত দেড়টার দিকে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

Bootstrap Image Preview