প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অর্থনৈতিক অঞ্চলে ২৭.০৭ বিলিয়ন ডলার এবং নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে জাপানিজ অর্থনৈতিক অঞ্চলে ১ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছে। বাংলাদেশের প্রতি আস্থা থাকায় ৬০ শতাংশের বেশি প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ আসছে পুনঃবিনিয়োগের মাধ্যমে।
রোববার আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। রাজধানীর হোটেল রেডিসন ব্লুতে অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনে তিনি ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে উদ্বোধন করেন।
সম্মেলনে অংশ নিতে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, জাপান, ভারত, সোদি আরব, তুরস্ক, মালায়েশিয়াসহ ১৫ দেশের ২ হাজার ৩৩২ জন নিবন্ধন করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী জানান, বিনিয়োগের জন্য তার সরকার ১১টি খাতকে চিহ্নিত করেছেন। এগুলো হলো- অবকাঠামো, পুঁজিবাজার ও আর্থিক সেবা, তথ্য ও প্রযুক্তি, ইলেকট্রনিক্স, চামড়া, স্বয়ংক্রিয় ও হালকা প্রকৌশল, কৃষি পণ্য ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, স্বাস্থ্যসেবা ও ওষুধ, পাট ও বস্ত্র এবং সমুদ্র অর্থনীতি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বে এখন উন্নয়নের রোল মডেল। অত্যাধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন দক্ষ জনসম্পদ সৃষ্টির মাধ্যমে চতুর্থ শিল্প-বিপ্লব থেকে সুবিধা আহরণের প্রস্তুতি নিচ্ছি। ২০২৫ সালের মধ্যে ৫ বিলিয়ন ডলারের আইটি পণ্য রপ্তানির লক্ষ্য নিয়েছি।
বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো উন্নয়নে ৭৯টি পিপিপি প্রকল্পে প্রায় ৩০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ প্রস্তাব বাস্তবায়নের অপেক্ষায় আছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক কূটনীতিকে প্রাধান্য দিচ্ছি। দ্বিপাক্ষিক ও আঞ্চলিক অগ্রাধিকার বাণিজ্য চুক্তি, মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি এবং সমন্বিত অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি সম্পাদনের লক্ষ্যে কাজ করছি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেন, পদ্মাসেতু, মেট্রোরেল, বন্দরসহ বহু বড় বড় প্রকল্পের কাজ শেষের পথে। অবকাঠামোগত এসব উন্নয়নের ফলে বাংলাদেশে এখন পুরোপুরি বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ রয়েছে। এখানে ব্যবসা করে বিদেশে মুনাফা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। বিদেশি বিনিয়োগকারীরা এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে এ দেশে বিনিয়োগ করতে পারে।
তৈরি পোশাকসহ, কৃষি প্রক্রিয়াকরণ, আইসিটি, প্লাস্টিক, চামড়াজাতীয় পণ্যসহ বাংলাদেশে কয়েকটি খাতে বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে। এদেশে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন হচ্ছে।
সালমান এফ রহমান আরও বলেন, বাংলাদেশ আগের মতো নেই। এটা সম্পূর্ণ ভিন্ন এক বাংলাদেশ। যেখানে বিনিয়োগে সব ধরনের সুযোগ নিশ্চিত করা হয়েছে।
সম্মেলনে অংশ নিয়ে সৌদি আরবের যোগাযোগ ও লজিস্টিক সার্ভিস মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার আল সালেহ নাসের বলেন, বাংলাদেশে এখন চমৎকার বিনিয়োগ পরিবেশ বিরাজ করছে। সৌদি আরবের বেসরকারি খাতের কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে আরও ব্যবসা ও বিনিয়োগ বাড়াতে আগ্রহী।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. সিরাজুল ইসলাম, ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জেরেমি জার্গেনস, জাপান সরকারের বৈদেশিক সম্পর্ক বিষয়ক সংসদীয় ভাইস মিনিস্টার হোন্ডা তারোর পক্ষে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান জাপান দূতাবাসের কর্মকর্তা ইতো নাওকি, চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ভাইস মিনিস্টার রেন হং বিন, ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প, কনজ্যুমার অ্যাফেয়ার্স, খাদ্য ও পাবলিক ডিস্ট্রিবিউশন এবং টেক্সটাইলের মন্ত্রী শ্রী পীযূষ গোয়েল প্রমুখ।