Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৬ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

গণঅনশনে এসে অলিগলিতে খাবার খাওয়ায় মেতেছিল বিএনপির নেতাকর্মীরা

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২১ নভেম্বর ২০২১, ০১:৫৩ PM
আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০২১, ০১:৫৩ PM

bdmorning Image Preview


অসুস্থ  বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেওয়ার দাবিতে গতকাল দলের পূর্বঘোষিত গণঅনশন কর্মসূচিতে দেখা গিয়েছে অন্য চিত্র। অনশন কর্মসূচির শুরুতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, কর্মসূচিস্থলের আশপাশে কেউ কিছু খাবেন না। কিন্তু অনশনে অংশ নেওয়া সিনিয়র নেতারা ছাড়া বিভিন্ন ওয়ার্ড-থানা থেকে আসা নেতাকর্মীরা সকাল থেকেই আশপাশে অবস্থান নেওয়া হকারদের কাছ থেকে শসা, ছোলা-বাদাম ও আনারস খেতে দেখা যায়। অনেককে আবার অলিগলিতে গিয়ে দোকানে বসে চা পান করতেও দেখা যায়। কাউকে কাউকে হোটেলে দুপুরের খাবারও খেতে দেখা গেছে।

শনিবার সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল ৯টায় মির্জা ফখরুল ইসলাম অনশন কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। সেখানে দেওয়া বক্তব্যে উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে অনশন কর্মসূচি পালন করবেন, কেউ দাঁড়িয়ে থাকবেন না, উঠে যাবেন না। বসে থেকে কর্মসূচি পালন করবেন।

নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয়ের পাশের মিডওয়ে হোটেল গলিতে ভ্যান থেকে আনারস কিনে খেতে দেখা যায় বেশ কয়েকজন নেতাকর্মীকে। তাদের একজনের নাম সালাউদ্দিন। অনশন কর্মসূচিতে এসে কেন খাচ্ছেন— জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সকালে কিছু খাইনি। তাই একটু খাচ্ছি আরকি।’ একই গলিতে দুটি চায়ের দোকানে শতাধিক নেতাকর্মী চা-বিস্কুট খেতে ভিড় করেন। আশপাশের অলিগলিতেও সরেজমিনে এমন চিত্র দেখা গেছে।

অনশন কর্মসূচির শেষ পর্যায়ে অনেকটা বিশৃঙ্খল হয়ে পড়েন নেতাকর্মীরা। একদিকে মাইকে কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য দিচ্ছেন, অন্যদিকে নেতাকর্মীরা খোশগল্পে মেতেছেন। কেউ কেউ চলে যাচ্ছেন। এমন পরিস্থিতিতে আবারও মাইকে নেতাকর্মীদের ভাবগাম্ভীর্য বজায় রাখতে অনুরোধ জানান শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী।

অনশন কর্মসূচির শেষ বক্তা হিসেবে যখন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বক্তব্য দিতে ডায়াসে দাঁড়ান, তখন নেতাকর্মীরা আবারও স্লোগান দিতে শুরু করেন। তখন তিনি বলেন, ‘দয়া করে স্লোগান বন্ধ করুন।’ এরপরও নেতাকর্মীরা স্লোগান বন্ধ না করলে তিনি বলেন, ‘তোমরাই কথা বলতে থাক, তোমরাই স্লোগান দিতে থাক। আমি বক্তব্য দেব না। নো, নো।’ এরপর মির্জা ফখরুল রাগ করে বক্তব্য দেওয়া বন্ধ করে দেন। পরে নেতাকর্মীরা স্লোগান দেওয়া বন্ধ করলে পুনরায় বক্তব্য দেওয়া শুরু করেন তিনি।

এমন পরিস্থিতি সম্পর্কে বিএনপির একাধিক নেতারা বলেন, কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে দলের চেইন অব কমান্ড ধরে রাখতে না পারার ঘটনা এটাই প্রথম নয়। এর আগেও একাধিকবার এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। গত ৬ নভেম্বর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের নিচতলার মিলনায়তনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য প্রয়াত নেতা তরিকুল ইসলামের স্মরণসভায়ও বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি দেখা যায়। ওই সময় মঞ্চে উপস্থিত নেতাদের পেছনে কথা বলা এবং দর্শকসারি থেকে স্লোগান দিয়ে বিশৃঙ্খল পরিবেশ তৈরির মতো ঘটনাও ঘটে।

একাধিক নেতা সেসময় তাদের শান্ত থাকতে অনুরোধ করেও ব্যর্থ হন। মির্জা ফখরুল ইসলামও ব্যর্থ হন। তখন মহাসচিব বক্তব্য দেওয়া বন্ধ করে মঞ্চে নিজের আসনে বসে পড়েন।

এর আগেও বিভিন্ন কর্মসূচিতে একই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে— এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, ‘আসলে কোন সভায় কেমন আচরণ করতে হবে— এসব বিষয়ে নেতাকর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া দরকার। সেটা তো এখন সম্ভব হয় না।’

Bootstrap Image Preview