Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৬ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

বাস ভাড়া ৪০ শতাংশের বেশি বাড়ানোর প্রস্তাব

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৭ নভেম্বর ২০২১, ০৩:০৬ PM
আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০২১, ০৩:০৬ PM

bdmorning Image Preview


জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার প্রেক্ষিতে পরিবহন মালিকদের দাবির মুখে গণপরিবহনে নতুন করে ভাড়া সমন্বয়ের প্রস্তাব করা হয়েছে। যেখানে বাসভাড়া গড়ে ৪০ শতাংশের বেশি বাড়ানোর প্রস্তাব এসেছে।

বাংলাদেশ পরিবহন মালিক সমিতির নতুন প্রস্তাবে বলা হয়েছে, দূরপাল্লার বর্তমান বাসভাড়া প্রতি কিলোমিটারে ১ টাকা ৪২ পয়সা, তা বাড়িয়ে ২ টাকা করার প্রস্তাব হয়েছে। অর্থাৎ এতে কিলোমিটারপ্রতি যাত্রীকে বাড়তি ৫৮ পয়সা গুনতে হবে। ভাড়া বৃদ্ধির এ হার ৪০.৮৫ শতাংশ।

এছাড়া মহানগরে বাসের বর্তমান ভাড়া কিলোমিটারে ১.৭০ পয়সা, প্রস্তাব হয়েছে ২.৪০ পয়সা করার। এতে ৭০ পয়সা ভাড়া বাড়বে। বাড়তি ভাড়ার এ শতকরা হার ৪১.১৮ শতাংশ। মহানগরে মিনিবাসের বর্তমান ভাড়া প্রতি কিলোমিটারে ১.৬০ পয়সা। এটি বাড়িয়ে ২.৪০ পয়সা করার প্রস্তাব হয়েছে। এতে ভাড়া বাড়ে কিলোমিটারপ্রতি ৮০ পয়সা। ভাড়া বৃদ্ধির এ হার ৫০ শতাংশ।

রোববার (৭ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর বনানীতে বিআরটিএ কার্যালয়ে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর প্রেক্ষাপটে গণপরিবহনে ভাড়া পুনর্নির্ধারণে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) সঙ্গে পরিবহন মালিক সমিতির নেতাদের বৈঠক থেকে এ প্রস্তাব দেওয়া হয়।

জ্বালানি তেলের দাম লিটারে ১৫ টাকা করে বাড়ানোর প্রতিবাদে সারা দেশে গত তিন দিন ধরে পরিবহন ধর্মঘট চলছে। পরিবহন মালিকরা শুরু থেকেই হয় ভাড়া সমন্বয়, অথবা ডিজেলের দাম কমানোর দাবি জানাচ্ছিলেন।

এরইমধ্যে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম বাড়ানোর কারণে গণপরিবহনের ভাড়া পুনর্নির্ধারণের বিষয়ে গত বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) বিআরটিএকে চিঠি দেয় বাংলদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি।

আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম ঊর্ধ্বগতির কারণে ভারতসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ডিজেল-কেরোসিনের দাম পুনর্নির্ধারণ করে সরকার। গত বুধবার (৩ নভেম্বর) রাতে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে ১৫ টাকা বাড়ানোর ঘোষণা দেওয়া হয়। নতুন দাম ভোক্তা পর্যায়ে ৬৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮০ টাকা করা হয়েছে। যা বৃহস্পতিবার থেকে কার্যকর হয়।

ডিজেল-কেরোসিনের দাম বাড়ানোর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরদিনই পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা এ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। এরপর শুক্রবার (৫ নভেম্বর) সকাল ছয়টা থেকে রাজধানীসহ সারাদেশে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট শুরু করে বাস, ট্রাকসহ পণ্যবাহী যানবাহনের মালিকেরা। এতে সারাদেশে মানুষকে ব্যাপক দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। ধর্মঘট অনির্দিষ্টকালের হওয়ায় দুর্ভোগ কবে শেষ হবে, এ নিয়েও অনিশ্চয়তায় পড়ে মানুষ।

তবে তেলের দাম বাড়ানোর পর শুরু থেকেই পরিবহন মালিক ও সংশ্লিষ্টরা বলছিলেন, ডিজেলের দাম না কমানো হলে গণপরিবহনসহ অন্যান্য পরিবহনে ভাড়া সমন্বয় করতে হবে।

পরিবহন ধর্মঘটে ভোগান্তিতে শিকার সাধারণ মানুষেরা বলছেন, বাসের ভাড়া নির্ধারণের দায়িত্ব সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীন সংস্থা বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ)। পরিবহন মালিকেরা ভাড়া বাড়াতে ধর্মঘট দিয়ে সাধারণ জনগণকে জিম্মি করলেও সরকার তাৎক্ষণিকভাবে কোনো ব্যবস্থাই নেয়নি। ভাড়া বাড়াতে চাপ তৈরির কৌশল হিসেবেই পরিবহন সিন্ডিকেট ধর্মঘটে দিয়েছে।

এরইমধ্যে ধর্মঘটের প্রথম দিন গত শুক্রবার দুপুরে নিজ বাসভবনে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সড়কমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জনগণের দুর্ভোগের কথা বিবেচনায় নিয়ে ধর্মঘট প্রত্যাহারের জন্য পরিবহন মালিকদের প্রতি আহ্বান জানান। কিন্তু সে আহ্বানে গত দুদিনেও সাড়া মেলেনি। ওইদিন ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, রোববার ভাড়া পুনর্নির্ধারণ কমিটির সঙ্গে বৈঠক হবে। ওই বৈঠকে ভাড়া সমন্বয় করে সাধারণ মানুষের ওপর চাপ যতটা সম্ভব সহনীয় রাখার চেষ্টা থাকবে।

Bootstrap Image Preview