Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৬ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন আজ

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৯:১২ AM
আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৯:১২ AM

bdmorning Image Preview


প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিন আজ সোমবার (২৮ সেপ্টেম্বর)। ১৯৪৭ সালের আজকের দিনে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্ম হয় তার। তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বেগম শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের প্রথম সন্তান। রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান হিসেবে ছাত্রজীবন থেকে প্রত্যক্ষ রাজনীতির সঙ্গে জড়িত হন শেখ হাসিনা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্র্যাজুয়েশন ডিগ্রি লাভকারী শেখ হাসিনা তৎকালীন ছাত্রলীগের অন্যতম নেতা ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিন উপলক্ষে প্রকাশিত হয়েছে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেনের নতুন বই ‘শেখ হাসিনা: বিমুগ্ধ বিস্ময়’।

জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগদানের জন্য যুক্তরাষ্ট্র সফররত প্রধানমন্ত্রীর হাতে বইটি তুলে দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

শনিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এ তথ্য জানানো হয়।

নিউইয়র্কের লোটে নিউইয়র্ক প্যালেস হোটেলে বইটি হস্তান্তরের সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।

ড. মোমেন সম্পাদিত এ বইয়ে রাজনীতিবিদ, মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, উচ্চ পদস্থ সরকারি কর্মকর্তা, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, প্রখ্যাত সাংবাদিক ও সাহিত্যিকসহ নানা শ্রেণি-পেশার গুণী ও বিদগ্ধজনের ৭৫টি লেখা স্থান পেয়েছে।

এতে শেখ হাসিনার ব্যক্তিগতজীবন, রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা ও বহুমাতৃক নেতৃত্বের নানা দিক তুলে ধরা হয়েছে। চন্দ্রাবর্তী একাডেমি প্রকাশিত এ বইয়ে প্রধানমন্ত্রী এক উজ্জ্বল, ত্যাগী, দূরদর্শী ও সৃষ্টিশীল নেতৃত্বের প্রতিভূ হিসেবে চিত্রিত হয়েছেন।

ড. মোমেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পূর্বে ছয় বছর জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন। পেশাগত প্রয়োজনে তিনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশ সফর করেছেন এবং বিচিত্র মানুষের সংস্পর্শে আসার সুযোগ পেয়েছেন। এ বইয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার লেখায় ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার আলোকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সাদামাটা জীবনের একটা তুলনামূলক চিত্র অঙ্কন করেছেন।

বইটি সম্পর্কে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনার সংগ্রামী জীবন ও উন্নয়নের দৃষ্টিভঙ্গি দেশবাসীর মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে বইটি প্রকাশিত হয়েছে। শেখ হাসিনা কথা নয়, কাজে বিশ্বাসী। লক্ষ্য অর্জনে কখনও পিছপা হননি তিনি। তার অক্লান্ত প্রয়াসে বাংলাদেশ আজ বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। এ দেশের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি আজ বিশ্ববাসীর কাছে এক বিস্ময়।

ড. মোমেন বলেন, ২০২১ সালে ‘বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী’ ও ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী’ আমরা এক সঙ্গে উদযাপন করছি। একই বছরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিন। তিনটি বিষয়ই বাঙালি ও বাংলাদেশের জন্য গৌরব আর অহংকারের।

১৯৭৫ সালের পটপরিবর্তনের পর ১৯৮১ সালে দেশে ফিরে আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে দলীয় প্রধানের দায়িত্ব নেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। এরপর থেকে ৩৯ বছর ধরে নিজ রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও আপসহীন নেতৃত্বের মাধ্যমে দেশের অসাম্প্রদায়িক-গণতান্ত্রিক রাজনীতির মূল স্রোতধারার প্রধান নেতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন তিনি।


তার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ এবং অন্য রাজনৈতিক জোট ও দলগুলো ১৯৯০ সালে স্বৈরাচারবিরোধী গণআন্দোলনের মাধ্যমে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামে বিজয়ী হয়। ১৯৯৬ সালে তার নেতৃত্বেই তৎকালীন বিএনপি সরকারের পতন ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে বিজয় অর্জন করে আওয়ামী লীগ। গত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় প্রধান বিরোধী দলের নেতা হিসেবে তার নেতৃত্বে অসাম্প্রদায়িক-গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলোর সমন্বয়ে প্রথমে ১৪ দলীয় জোট এবং পরে মহাজোট গড়ে ওঠে। ১৪ দল ও মহাজোটের তীব্র আন্দোলনের মুখে অধ্যাপক ড. ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ২২ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচন করার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়।


২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি জরুরি অবস্থা জারি করে ড. ফখরুদ্দীন আহমদের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় এলে ওই বছরের ১৬ জুলাই চাঁদাবাজিসহ দুর্নীতির মামলায় গ্রেফতার হন শেখ হাসিনা। ওই সময় সংসদ ভবন চত্বরের বিশেষ কারাগারে দীর্ঘ প্রায় ১১ মাস বন্দি ছিলেন তিনি। গণতান্ত্রিক আন্দোলন করতে গিয়ে এর আগেও কয়েক দফা গৃহবন্দি হয়েছেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ এ পর্যন্ত চার মেয়াদে ক্ষমতাসীন হয়েছে। ১৯৯৬ সালে তার নেতৃত্বে দীর্ঘ ২১ বছর পর রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দলটি। ওই বছরের ১২ জুনের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে বিজয়ী হয়ে ২৩ জুন সরকার গঠন করে তারা। এরপর ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের ঐতিহাসিক নির্বাচনে চার-তৃতীয়াংশ আসনে বিশাল বিজয় অর্জনের মাধ্যমে ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার গঠিত হয়। দ্বিতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হন শেখ হাসিনা। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে বিজয়ের পর ১২ জানুয়ারি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে টানা দ্বিতীয় এবং ২০১৮-এর নির্বাচনের পর টানা তৃতীয়বার সরকার গঠিত হয়েছে।

এছাড়া ১৯৮৬ সালের তৃতীয়, ১৯৯১ সালের পঞ্চম এবং ২০০১ সালের অষ্টম সংসদে অর্থাৎ মোট তিন দফা বিরোধী দলের নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

গণতন্ত্র এবং দেশের মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন-সংগ্রামে অসামান্য অবদান রাখার পাশাপাশি রাষ্ট্র পরিচালনায়ও ব্যাপক সাফল্যের পরিচয় দিতে সক্ষম হয়েছেন তিনি। ১৯৯৬-০১ সালে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনকালে পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি ও গঙ্গার পানিবণ্টন চুক্তি তার সরকারের অন্যতম সাফল্য হিসেবে বিবেচিত হয়। বর্তমানে তার নেতৃত্বাধীন সরকার ২০২১ সালের মধ্যে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত ও মধ্যম আয়ের আধুনিক ডিজিটাল বাংলাদেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য পূরণে কাজ করছে।

এই অঞ্চলে গণতন্ত্র, শান্তি ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং নারী শিক্ষার বিস্তার, শিশুমৃত্যুর হার হ্রাস ও দারিদ্র্য বিমোচনের সংগ্রামে অসামান্য ভূমিকা রাখার স্বীকৃতি হিসেবে দেশি-বিদেশি বেশ কিছু পুরস্কার ও সম্মানে ভূষিত হয়েছেন শেখ হাসিনা। এরমধ্যে সাউথ-সাউথ ভিশনারি পুরস্কার-২০১৪, শান্তিবৃক্ষ-২০১৪, জাতিসংঘ পুরস্কার-২০১৩ ও ২০১০, রোটারি শান্তি পুরস্কার-২০১৩, গোভি পুরস্কার-২০১২, সাউথ-সাউথ পুরস্কার-২০১১, ইন্দিরা গান্ধী শান্তি পুরস্কার-২০১০, পার্ল এস. বার্ক পুরস্কার-২০০০, সিইআরইএস মেডাল-১৯৯৯, এম কে গান্ধী পুরস্কার-১৯৯৮, মাদার তেরেসা শান্তি পুরস্কার-১৯৯৮, ইউনেস্কোর ফেলিক্স হোফুয়েট-বোয়েগনি শান্তি পুরস্কার-১৯৯৮ প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। এছাড়া পরিবেশ সংরক্ষণে অসামান্য অবদানের জন্য জাতিসংঘের পরিবেশ বিষয়ক সর্বোচ্চ মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার ‘চ্যাম্পিয়নস অব দ্য আর্থ’ পুরস্কারেও ভূষিত হয়েছেন শেখ হাসিনা।

Bootstrap Image Preview